|
|
|
|
জিটিএ নির্বাচনে মোর্চার ৩২ প্রার্থীর নাম ঘোষণা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি |
গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) ভোটে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বৃহস্পতিবার তৃতীয় দফায় তাঁদের ৩২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করল। কিন্তু এই দিন বিকেল পর্যন্ত অন্য কোনও দল প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। অথচ জিটিএ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৯ জুলাই। তাই গত পুরভোটে যে ভাবে পাহাড়ের ৪ পুরসভা কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করেছিল মোর্চা, এ বার জিটিএ নির্বাচনে তারই পুনরাবৃত্তি হতে পারে বলে জল্পনা শুরু হয়েছে।
সিপিএমের তরফে আজ, শুক্রবার দার্জিলিঙে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার কথা। দলীয় সূত্রের খবর, ২০টি মনোনয়ন পত্র তুললেও আপাতত ১৫টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছে সিপিএম। তবে অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগ এই মুহূর্তে ভোটে অংশ নিতে আগ্রহী নয়। দলীয় সূত্রের খবর, কংগ্রেস এবং তৃণমূলও হাতে গোনা কয়েকটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার কথা ভাবছে। জিএনএলএফের বেশিরভাগ নেতাকর্মীও ভোটে অংশ নিতে চান না। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের শীর্ষ নেতা গৌতম দেব বলেছেন, “৯ জুলাইয়ের আগেই প্রার্থী নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সমতলের সভাপতি শঙ্কর মালাকারও জানান, আরও দু’দিন দেখে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেবেন। |
|
প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পর স্ত্রী আশাদেবীর হাতে মনোনয়ন তুলে
দিচ্ছেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। ছবি: রবিন রাই |
এদিন মোর্চার তরফে ৩২ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়েছে। এই নিয়ে তিন দফায় মোর্চা ৪৫ আসন বিশিষ্ট জিটিএ ভোটে ৩৬ জন প্রার্থীর নাম জানাল। তৃতীয় দফার তালিকায় মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা বিনয় তামাং, বিমল গুরুঙ্গের স্ত্রী আশা দেবী, গোর্খাল্যান্ড পার্সোনেলের (জিএলপি) ‘কমান্ডার’ অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার রমেশ আলে ও প্রবীণ আইনজীবী তরঙ্গ পণ্ডিতের নাম রয়েছে। কালিম্পঙের একটি কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন মোর্চা নেতা নিমা তামাং। গোর্খা লিগের সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ খাতির অভিযোগ, পুলিশের উপরে আক্রমণের মামলায় নিমা তামাং ফেরার। মোর্চা অবশ্য অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। দার্জিলিঙের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বিশদে খোঁজ নিয়ে মন্তব্য করবেন বলে জানিয়েছেন।
অবশ্য প্রার্থী তালিকা নিয়ে মোর্চার অন্দরেও নানা প্রশ্ন দানা বাঁধছে। কারণ, মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ ও সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরির নাম কেন এখনও ঘোষণা হয়নি, তা নিয়ে দলের মধ্যেই নানা বিতর্ক দানা বাঁধছে। তবে জিএনএলএফের হয়ে বিমল গুরুঙ্গ যে তাকভর আসনটি থেকে দাঁড়াতেন, সেটি সহ মোট ৯টি আসন ফাঁকা রয়েছে। তার মধ্যেই দু’টি আসনে গুরুঙ্গ ও রোশন দাঁড়াবেন বলে মোর্চার একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে। মোর্চা সভাপতি গুরুঙ্গ বলেন, “এখন ভোটে দাঁড়ানো নিয়ে কিছু বলব না। সময় এলে সব পরিষ্কার করে দেব।” দার্জিলিঙে ‘শান্তি ও উন্নয়ন’-এর স্বার্থে ‘কিছু আসনে’ হলেও অংশ নেবে সিপিএম। সিপিএমের দার্জিলিং জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জীবেশ সরকার ও প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য দু’জনেই বলেন, “আমরা তো বরাবরই পাহাড়ে আরও বেশি স্বশাসনের পক্ষে। সে জন্য নানা ভাবে চেষ্টা করেছি। তখন মোর্চা স্বশাসন নিয়ে ভোটে যেতে রাজি হয়নি। এখন হয়েছে। গোর্খা জাতিসত্ত্বার সার্বিক বিকাশের যে লক্ষ্য আমাদের রয়েছে, তা পূরণের কথা বলতেই ভোটে অংশ নেব।” গোর্খা লিগ তিনটি কারণে ভোট পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রথমত, বর্ষায় ধসে বিধ্বস্ত পাহাড়ে নির্বিঘ্নে ভোট প্রচার সম্ভব নয়। ঘটনাচক্রে এদিনই ধসে বিচ্ছিন্ন হয়েছে কালিম্পং। দ্বিতীয়ত, পাহাড়ে অবাধ ভোট করানোর মতো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নেই বলে তাঁদের অভিযোগ। তৃতীয়ত, যে কোনও ভোটে তফশিলি জাতি, উপজাতিদের জন্য আসন সংরক্ষণ থাকলেও জিটিএ-তে নেই। সাধারণ সম্পাদক প্রতাপবাবু বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে যান। প্রতাপবাবু বলেন, “বিষয়টি নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না। শিলিগুড়িতে ফিরে সব বলব।” সিপিআরএমের একটি অংশ জিটিএ নির্বাচন বয়কটের দাবি তুলেছে। যদিও অন্য একটি অংশ নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করছেন। দলের মুখপাত্র গোবিন্দ ছেত্রী জানান, জিটিএ নির্বাচনে তারা অংশ নেবেন কি না তা নিয়ে কাল, শনিবার সিদ্ধান্ত নেবেন। |
|
|
|
|
|