ব্রাত্য বলছেন ’১৫-য়
’১৪ সালেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অভিন্ন
জয়েন্টে রাজি মমতা, দাবি সিব্বলের
রাজ্যে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির অভিন্ন প্রবেশিকা ২০১৪ সালে চালু করার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে বৃহস্পতিবার দাবি করলেন কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী কপিল সিব্বল। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু কিন্তু পরে জানান, অভিন্ন প্রবেশিকা শুরু হবে ২০১৫ থেকে। ২০১৪ পর্যন্ত ওই পদ্ধতি থেকে ছাড় পেয়েছে রাজ্য। সিব্বল নিজেই অবশ্য জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, গুজরাত মাত্র এই তিনটি রাজ্য এ-পর্যন্ত অভিন্ন প্রবেশিকায় রাজি হয়েছে।
ছাত্রছাত্রীদের উপর থেকে পরীক্ষার বোঝা কমানোর জন্য দেশ জুড়ে একটি পরীক্ষার ভিত্তিতে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ছাত্র ভর্তির প্রস্তাব দিয়েছেন সিব্বল। সেই সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পড়াশোনার গুরুত্ব বাড়ানোর উদ্দেশ্যে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার নম্বরকেও গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী তিনি। তাঁর প্রস্তাবিত পদ্ধতির আরও কয়েকটি সুবিধার কথা এ দিন উল্লেখ করেন সিব্বল। বলেন, “এর ফলে কোচিং সেন্টারের রমরমা কমবে। ক্যাপিটেশন ফি নিয়ে ভর্তিও বন্ধ হবে।”
কপিল সিব্বলকে বিদায় জানাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রয়েছেন ব্রাত্য বসুও। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র
যদিও সিব্বলের বক্তব্যের সঙ্গে অভিজ্ঞ শিক্ষকদের অনেকেই একমত নন। তাঁদের মতে, অভিন্ন প্রবেশিকার ব্যবস্থা করলে কেউ আর কোচিং ক্লাসে যাবে না, এমন ভাবার কারণ নেই। কোচিং সেন্টারগুলি তখন নতুন পরীক্ষা পদ্ধতি মেনেই পড়াবে। উল্টে অভিন্ন প্রবেশিকার কথা মাথায় রেখে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পরীক্ষার প্রশ্নও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ধাঁচে তৈরি হতে থাকবে। তাতে পড়ুয়াদের মোটেই উপকার হবে না। তা ছাড়া ওই পরীক্ষার জেরে বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ক্যাপিটেশন ফি নেওয়া বন্ধ হওয়ার কোনও কারণ নেই বলেও মনে করছেন ওই শিক্ষকেরা। এক অভিজ্ঞ শিক্ষক বলেন, “প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে, এত বড় পরীক্ষা হবে কী ভাবে? যদি অনলাইনে পরীক্ষা হয়, তা হলে বিরাট সংখ্যক ছাত্রছাত্রী সমস্যায় পড়বে। বিশেষত গ্রামাঞ্চলের পড়ুয়াদের অনেকেই ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষ নয়। আবার ধরা যাক, প্রত্যন্ত গ্রামের গরিব পরিবারের একটি ছেলে যদি ভিন্ রাজ্যের কোনও প্রতিষ্ঠানে সুযোগ পায়, সে কি আদৌ সেখানে যেতে পারবে? গোটা পরিকল্পনায় বাস্তবজ্ঞানের অভাব প্রকট।” আর এক অভিজ্ঞ শিক্ষকের মতে, অভিন্ন প্রবেশিকা ছাত্রছাত্রীদের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তিরও সুযোগ কমিয়ে দিতে পারে। এখন বিভিন্ন প্রবেশিকার কোনও একটিতে ভাল করলেই পড়ুয়ারা ভর্তির সুযোগ পান। কিন্তু অভিন্ন প্রবেশিকায় খারাপ করলে তাঁরা কোনও প্রতিষ্ঠানেই ভর্তি হতে পারবেন না।
এ দিন মহাকরণে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন সিব্বল। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, “২০১৪ সালে এ রাজ্যে অভিন্ন প্রবেশিকা পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্র ভর্তিতে রাজি হয়েছেন মমতা। মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, গুজরাত এবং এনআইটিগুলি ইতিমধ্যেই রাজি হওয়ায় সেখানে এখনই অভিন্ন প্রবেশিকা চালু হচ্ছে। সেখানে ৪০% গুরুত্ব থাকছে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষার নম্বরের উপরে, ৬০% গুরুত্ব প্রবেশিকায়।” কিন্তু এখনই গোটা দেশের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে লড়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হওয়ার ব্যাপারটা পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে সহজ হবে না বলে মনে করে রাজ্য সরকার। ব্রাত্যবাবু এ দিন বলেন, “অন্যান্য বোর্ডের সঙ্গে এ রাজ্যের বোর্ডের পাঠ্যক্রমে ফারাক ছিল। সেই ফারাক মিটিয়ে নতুন পাঠ্যক্রম তৈরির কাজ চলছে। আগামী বছর নতুন পাঠ্যক্রম চালু হবে।” তাঁর মতে, নতুন পাঠ্যক্রম চালু হওয়ার পরে তার পঠনপাঠনে সড়গড় হতে কিছুটা সময় লাগবে। সেই কারণেই আগামী দু’বছর রাজ্য জয়েন্টের মাধ্যমেই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ছাত্র ভর্তি করা হবে বলে জানান ব্রাত্যবাবু।
সর্বশিক্ষা অভিযানের বরাদ্দের অনেকটাই পশ্চিমবঙ্গ সরকার খরচ করতে পারেনি বলে সাংবাদিক বৈঠকে জানান সিব্বল। তিনি বলেন, “বিগত আর্থিক বছরে এ রাজ্যের জন্য বরাদ্দ ছিল ৪৯৩৫ কোটি টাকা। তার মধ্যে ২২৭৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। যা কিনা মোট বরাদ্দের ৪৬%।” রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর তা মানতে নারাজ। এক কর্তা বলেন, “বাজেট-বরাদ্দের তুলনায় অনেক কম টাকা হাতে মিলেছে। যা পাওয়া গিয়েছিল, তার ৮০ শতাংশেরও বেশি খরচ হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.