সব্জির দাম নিয়ন্ত্রণে জেলা জুড়ে পরিদর্শন
ব্জির দাম বেঁধে রাখতে পুরোদমে বাজার পরিদর্শন শুরু হল পশ্চিম মেদিনীপুরে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন বাজারে হানা দেয় কৃষি-বিপণন দফতরের পরিদর্শকদল। কোন সব্জির দাম কত, কেউ বাড়তি দাম নিচ্ছেন কি না--এ সব খতিয়ে দেখা হয়। দফতরের দাবি, গত ৩-৪ দিনে সব্জির দাম অনেকটাই কমেছে। এ ভাবে নজরদারি চালানোর ফলে আরও কমবে। এ দিন সাতসকালে মূলত পাইকারি বাজারেই হানা দেয় পরিদর্শকদল। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্র গুপ্ত বলেন, “বাজারে নজরদারির কাজ শুরু হয়েছে। এ কাজ এখন চলবে।” বৃহস্পতিবার মেদিনীপুরের পাইকারি বাজারে কুঁদরি বিক্রি হয়েছে ৫ টাকা কিলো দরে। ঢেঁড়স ৮ থেকে ১২ টাকা। পটল ১২ থেকে ১৪ টাকা। বাঁধাকপি ২২ টাকা। টমেটো ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। বড় বেগুন ২৫ থেকে ৩০ টাকা। জেলা কৃষি-বিপণন দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, “অধিকাংশ সব্জির দামই গত ৩-৪ দিনে অনেকটা কমেছে। লাগাতার নজরদারি চললে তা আরও কমবে।” ইদানীং আবহাওয়া কিছুটা অনকূল হওয়ায় জোগান বেড়েও কিছুটা দাম কমছে বলে মনে করছেন বাজার-বিশেষজ্ঞরা।
খড়্গপুরে বাজার পরিদর্শনে প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। —নিজস্ব চিত্র।
খড়্গপুরের গোলবাজারে শাক-সব্জির পাইকারি ব্যবসা হয়। এ দিন সকালে সেখানে পৌঁছে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন কৃষি-বিপণন দফতরের আধিকারিকেরা। সব্জির দাম এখন কত রয়েছে, আগে কত ছিল, এ সব জেনে নেন। পরিদর্শক-দলে ছিলেন জেলা কৃষি-বিপণন দফতরের আধিকারিক ব্রজেন সরকার। তিনি বলেন, “জেলা জুড়েই নজরদারি চলছে। বিভিন্ন বাজারে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” মেদিনীপুরের গেটবাজারেও পাইকারি ব্যবসা হয়। এ দিন সকালে এখানে গিয়েও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পরিদর্শকদল। নেতৃত্বে ছিলেন দীপেন্দুবিকাশ মহাপাত্র। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে গত মঙ্গলবার মেদিনীপুরে এক বৈঠক হয়। বৈঠক থেকে জেলার জন্য একটি টাস্ক-ফোর্স গঠন করা হয়। সঙ্গে এলাকা ধরে ধরে বাজার-ভিত্তিক পরিদর্শকদলও তৈরি করা হয়। নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, কোন আধিকারিকের নেতৃত্বে কোন এলাকায় পরিদর্শন চলবে। সেই মতোই পরিদর্শন শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে পুলিশ-কর্মীদের সঙ্গে নিয়েই বাজার পরিদর্শনে বেরোতে পারে পরিদর্শক-দল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।
তবে মেদিনীপুর-খড়্গপুরে এক এক বাজারে বিভিন্ন সব্জির এক এক দাম। কেন এই পরিস্থিতি? দফতরের দাবি, পাইকারি ব্যবসায়ীরা কী দামে সব্জি বিক্রি করছেন, তার উপরেই নির্ভর করে সব্জির দাম। বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন এলাকার সব্জি আসে। তাই এ ক্ষেত্রে ৪- ৫ টাকা ফারাক হতে পারে। ফড়েদের দাপটেই খুচরো বাজারে সব্জির দাম একলাফে অনেকটা বেড়েছে বলে অভিযোগ। অনেকে সুযোগ বুঝে মজুতদারিও করছেন। ব্যবসায়ীরা অবশ্য জানিয়েছেন, এ বার ফলন কম হয়েছে। তাই দাম বেড়েছে। একটানা কয়েক সপ্তাহ ধরে জেলায় তীব্র গরম চলেছে। বৃষ্টি হয়নি। ফলে, বিভিন্ন এলাকায় সব্জি-চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কম ফলন হয়েছে। এ জেলার বাজারে যে সব্জি পাওয়া যায়, তার অধিকাংশই স্থানীয় উৎপাদন। গড়বেতা, ঘাটাল, দাসপুর প্রভৃতি এলাকা থেকে মেদিনীপুর-খড়্গপুরের বাজারে সব্জি আসে। ফলন কম হওয়াতেই দাম বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে নেমে রাজ্য সরকার ফড়েদের বিরুদ্ধে ‘কড়া’ পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দেওয়ার পরে অবশ্য নড়েচড়ে বসে বিভিন্ন মহল। এর ফলে অনেক জায়গায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিদের কম দামে সব্জি বিক্রি করতে বাধ্য করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। মেদিনীপুরের এক চাষির কথায়, “সপ্তাহ খানেক আগে পাইকারি বাজারে ১৬ টাকা কেজি দরে কুঁদরি বিক্রি করেছি। এখন সেখানে ৫- ৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। সব্জি তো আর ঘরে মজুত করে রাখা যায় না।” এই অবস্থায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন সিপিএমের কৃষকসভার জেলা সম্পাদক হরেকৃষ্ণ সামন্তও। তিনি বলেন, “বাজার নিয়ন্ত্রণ করে মূলত ফড়েরাই। আগে তাদের সুপার-প্রফিট হয়েছে। এখনও প্রফিট হচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে চাষিদের আরও কম দামে সব্জি বিক্রি করতে বাধ্য করা হচ্ছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.