জাতীয় স্তরের অ্যাথলিট পিঙ্কি প্রামাণিকের উপরে মানসিক অত্যাচার চলছে বলে আগেই রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ করা হয়েছিল। তাঁকে ‘হেনস্থা’ করার অভিযোগ জানিয়ে এ বার জনস্বার্থের মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে। আজ, শুক্রবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিজেই মামলাটি শুনবেন।
প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক ও রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্যা ভারতী মুৎসুদ্দি, রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়-সহ কয়েক জন আইনজীবী বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেলের সঙ্গে দেখা করেন। জেলে পিঙ্কির উপরে নানা ভাবে অত্যাচার চালানো হচ্ছে বলে তাঁরা প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ করেন। আইনের চোখে পিঙ্কি এখনও এক জন মহিলা হওয়া সত্ত্বেও তাঁর মানসম্মান নিয়ে টানাটানি করছে পুলিশ। তাঁকে পুরুষদের সেলে রাখা হচ্ছে। পুরুষ পুলিশকর্মী তাঁর দেহ তল্লাশ করছে। এমনকী তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষার ছবি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিচার্য বিষয়ের তালিকায় না-থাকলেও ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে ওই দিন যাতে এই জনস্বার্থের মামলা শোনা হয়, সেই আবেদন জানান ভারতীদেবী। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে শুক্রবারেই মামলাটি শুনবেন বলে জানিয়ে দেন প্রধান বিচারপতি। মামলার বিষয়টি রাজ্য সরকারের জিপি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দেন তিনি। পরে আবেদনকারীদের পক্ষ থেকে জিপি-কে পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছে।
পিঙ্কিকে পুরুষ বলে অভিহিত করে তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, প্রতারণা-সহ বিভিন্ন অভিযোগ এনেছেন বাগুইআটির এক মহিলা। তার পরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। লিঙ্গ নির্ধারণের নামে পিঙ্কির উপরে দৈহিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন অভিযোগ করেছে।
এ বার একই অভিযোগ করল গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি। ওই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মিনতি ঘোষের বক্তব্য, পিঙ্কির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর আইনগত শাস্তি হবে। এতে কিছু বলার নেই। কিন্তু লিঙ্গ নির্ধারণ না-হওয়া পর্যন্ত সরকারি ভাবে পিঙ্কি এক জন মহিলাই। অথচ পুরুষ পুলিশকর্মীরা তাঁর শরীরে হাত দিয়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে পুরুষ বন্দিদের সঙ্গে রাখা হয়েছে। এটা সভ্যতার লজ্জা। এক জন মহিলা যখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তখন এক জন সোনাজয়ী মহিলা ক্রীড়াবিদের উপরে এই ধরনের আচরণ অত্যন্ত দুঃখের। মিনতিদেবী বলেন, “পিঙ্কির সঙ্গে যা করা হচ্ছে, সেটা মহিলাদের পক্ষে অত্যন্ত অবমাননাকর।” অবিলম্বে পিঙ্কির উপরে ‘অত্যাচার’ বন্ধের দাবি জানান তিনি। তাঁরা জেলে পিঙ্কির সঙ্গে দেখা করতে যাবেন। পথে নেমেও প্রতিবাদ জানাবেন। |