অ্যান্ডি মারে বনাম জো উইলফ্রেড সঙ্গার সেমিফাইনাল নিয়ে যদি মেতে থাকে ইংল্যান্ড, তা হলে উইম্বলডনের অন্য সেমিফাইনাল নিয়ে মজে রয়েছেন নিখাদ টেনিসপ্রেমীরা। রজার ফেডেরার বনাম নোভাক জকোভিচের ম্যাচ শুধু দুই মেগাস্টারের লড়াই নয়, লড়াই অস্তমিত এক শিল্পীর সঙ্গে দুরন্ত ফর্মে থাকা এক যন্ত্রমানবের। যে যন্ত্রমানবের কাছে শেষ সাতটা ম্যাচের মধ্যে ছ’টাতেই হারতে হয়েছে ফেডেরারকে।
কিন্তু ফেডেরার বনাম জকোভিচের শুক্রবারের সেমিফাইনালে আরও একটা ফ্যাক্টর রয়েছে। ঘাস। এর আগে দু’জনের মধ্যে ২৬টা ম্যাচ হয়ে গেলেও ঘাসে কখনও দু’জনে একে অপরের বিরুদ্ধে নামেননি। “ব্যাপারটা আমার মাথায় আছে,” বলেছেন ফেডেরার, “এই প্রথম আমরা ঘাসে একটা ম্যাচ খেলব। ইন্টারেস্টিং। আমি কালকের সেমিফাইনালের দিকে খুব আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে আছি।” তার মানে কি তা হলে আপনি জেতার ব্যাপারে আশাবাদী? এ বার কিছুটা সতর্ক ফেডেরার, “সত্যি কথা বলতে কী, আমি অত দূর কিছু ভাবিনি। গত দু’বছরের থেকে এ বার যে আমি বেশি সময় উইম্বলডনে টিকে রয়েছি, তাতেই আমি খুশি।” |
গত দু’বার কোয়ার্টার ফাইনালে হেরেই বিদায় নিতে হয়েছিল তাঁকে। এ বার কিন্তু খেতাবের পাশাপাশি আরও একটা রেকর্ডের হাতছানি রয়েছে ফেডেরারের সামনে। এ বার চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে পিট সাম্প্রাসের সাতটা উইম্বলডন জেতার রেকর্ড ছুঁতে পারবেন তিনি। “ব্যাপারটা আমার মাথায় আছে। চ্যাম্পিয়ন হওয়া আমার পক্ষে খুবই সম্ভব। আমি এ বার বেশ ভালই খেলছি। তবে এও জানি, পরের ম্যাচটা থেকেই অঙ্কটা জটিল হতে শুরু করবে। যথেষ্ট কঠিন লড়াই হবে এবং তার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।”
ফেডেরার বনাম জকোভিচ লড়াইটা যে সব সময় কোর্টে হয়ে এসেছে, তা কিন্তু নয়। ফেডেরার গত কাল স্বীকার করেছেন, ২০০৬ সালে একটা ডেভিস কাপ ম্যাচে জকোভিচের আচরণ দেখে তিনি অত্যন্ত চটে গিয়েছিলেন। ডেভিস কাপের ওই ম্যাচে বারবার ট্রেনারকে কোর্টে ডেকে নিচ্ছিলেন জকোভিচ। যা দেখে প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন ফেডেরার। এখানেই শেষ নয়। এর পর গ্যালারিতে খুব বেশি চিৎকার চেচামেচি করছিলেন বলে জকোভিচের বাবা-মাকেও এক হাত নেন ফেডেরার। সেটা মন্টে কার্লোর ঘটনা। তবে সে সব যে এখন অতীত সেটাও বলেছেন ফেডেরার। “আমার সঙ্গে ওর আর কোনও ঝামেলা নেই,” সেমিফাইনালের ২৪ ঘণ্টা আগে বলেছেন ছ’বারের উইম্বলডনজয়ী। জকোভিচের মুখেও শোনা যাচ্ছে ফেডেরারের প্রশংসা। “টেনিস ইতিহাসে ফেডেরারই সম্ভবত সেরা। এক জন টেনিস প্লেয়ারের পক্ষে যা যা জেতা সম্ভব, সবই ও জিতেছে।” এর পরই কিন্তু আবেগ-টাবেগ দূরে সরিয়ে রেখে সামনে চলে আসছে সেই যন্ত্রমানবের চেহারা, “তবে ফেডেরারের ইতিহাস কী, কী করেছে, এ সব কিন্তু কোর্টে নামলে আমি মনে রাখি না,” হুঙ্কার জকোভিচের। |