ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুর গ্রামে গত সপ্তাহে সিআরপি-র গুলিতে যে ১৭ জন মারা যান, তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই নিরীহ মানুষ। বৃহস্পতিবার কলকাতায় এসে প্রথম বার এ কথা স্বীকার করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদম্বরম। ঘটনার পর থেকেই নিরাপত্তা বাহিনী দাবি করছিল, নিহতেরা সকলেই মাওবাদী। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও প্রাথমিক ভাবে জানান, তাঁর কাছে সিআরপি-র তরফে যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে, তাতে জানানো হয়েছে, এক কিশোর ছাড়া সংঘর্ষে নিহত সবাই মাওবাদী। বুধবার ছত্তীসগঢ় প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়, তাদের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি জেনেছে, সংঘর্ষে অন্তত সাত নিরীহ কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এর পরেই সাধারণ নাগরিকের মৃত্যুর কথা স্বীকার করে বৃহস্পতিবার চিদম্বরম জানান, ওই ঘটনার জন্য তিনি দুঃখিত।
এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার সিআরপিএফ দাবি করে, ছত্তীসগঢ়ের ঘটনায় যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ৭ জন মাওবাদী। এদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হিংসা, পুলিশের উপর হামলা ও একাধিক খুনের অভিযোগ রয়েছে। বাকিরা গণ মিলিশিয়ার কি না, তাও দেখা হচ্ছে। এ দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওই ঘটনাকে ‘ভুয়ো’ সংঘর্ষ বলতে মানতে রাজি হননি। তিনি বলেন, “গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জঙ্গলে হানা দিয়েছিল যৌথ বাহিনী। তখন প্রথম তাঁদের উপরে গুলি ছুটে আসে। সিআরপি-র ৬ জওয়ান মারা যান। তার পরই গুলি চালায় বাহিনী।” তাঁর বক্তব্য, হত ১৭ গ্রামবাসীর সম্পর্কে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে বিশদে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৩-৪ জনের সঙ্গে মাওবাদীদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ ছিল। তবে, বাকিদের মৃত্যু নিয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশও করেছেন। হাইকোর্টের এক বিচারপতিকে গিয়ে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।
পাশাপাশি, ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদী দমন অভিযানে ভুয়ো সংঘর্ষের অভিযোগ ওঠার পর এ বিষয়ে সতর্ক হতে চাইছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। যৌথ বাহিনীর অভিযানের ক্ষেত্রে যাতে সব রকম নিয়ম মানা হয়, তা নিশ্চিত করতে আগামী ১৩ জুলাই মাওবাদী অধ্যুষিত রাজ্যের পুলিশকর্তা ও আধাসেনার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন স্বরাষ্ট্রসচিব রাজকুমার সিংহ। যৌথ বাহিনীর অভিযানে ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ যাতে মেনে চলা হয়, তার জন্য পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রধানদের ফের সতর্ক করা হবে। |