ছাত্রী-মৃত্যুর জেরে গুয়াহাটির এক স্কুল শিক্ষককে এক বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করল আদালত। কামরূপের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক গৌতম বরুয়া এই রায় দিয়েছেন। ২০০৫ সালে হাতিগাঁও এলাকার লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রী রিস্মিতা বোরার মৃত্যু হয়েছিল। ঘটনায় অঙ্ক শিক্ষক প্রাণজিৎ দাসকে দায়ী করে মামলা করেছিলেন রিস্মিতার বাবা জগৎচন্দ্র বোরা। সাতবছর মামলা চলার পরে ৩০৪ এ ধারায় প্রাণজিৎবাবুকে অপরাধী সাব্যস্ত করল আদালত।
২০০৫ সালের ৩১ মে ষষ্ঠ শ্রেণীর রিস্মিতা ‘হোম ওয়ার্ক’ না করায় প্রাণজিৎবাবু তাঁকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। পরে হাসপাতালে রিস্মিতার মৃত্যু হয়। ২ জুন পরিবারের অভিযোগ নথিভুক্ত করে পুলিশ। প্রাণজিৎবাবু ঘটনার পর থেকে পলাতক ছিলেন। স্কুলও কিছুদিন বন্ধ থাকে। শেষে আদালতের নির্দেশে, কবর থেকে রিস্মিতার দেহ তুলে নতুন করে ময়না তদন্ত, ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়। ময়না তদন্তে জানা যায়, মস্তিষ্কে রক্তপাতে রিস্মিতা মারা গিয়েছে। প্রাণজিৎবাবু আত্মপক্ষ সমর্থন করে জানান, মেয়েটি আগে থেকেই অসুস্থ ছিল। তিনি মাথায় মারেননি, শুধু কান টেনেছিলেন। বিচারপতি ভর্ৎসনা করে তাঁকে বলেন, “ছাত্রী অসুস্থ জেনেও শিক্ষক হয়ে তাঁর গায়ে হাত তোলা উচিত হয়নি।” তাঁর ১ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে কারাবাসের মেয়াদ আরও দু’বছর বাড়বে।
স্কুলে মারধর বা ‘করপোরাল’ শাস্তিতে দেশের মধ্যে অসমের স্থান শীর্ষে। ইউনিসেফ ও শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের সমীক্ষা অনুযায়ী, এই রাজ্যের স্কুলে প্রায় সাড়ে ৯৯% ছাত্রছাত্রীকে শিক্ষকদের হাতে মার খেতে হয়। অভিভাবকদের ২১ শতাংশ মনে করেন, এর ইতিবাচক দিক রয়েছে। এতে উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রছাত্রী শৃঙ্খলা মেনে চলে। |