লস্কর জঙ্গি আবু হামজাকে নিয়ে টানাটানিতে মুম্বই, বেঙ্গালুরুর পুলিশ বা জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)-কে আপাতত টেক্কা দিল দিল্লি পুলিশ। হামজাকে গ্রেফতারের পরেই তাকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। একই ভাবে হামজাকে হেফাজতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল এনআইএ-সহ অন্যরাও। কিন্তু দিল্লি পুলিশ হামজাকে সহজে হাতছাড়া করতে চায়নি। তার হেফাজতের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য তারাও আদালতের দ্বারস্থ হয়। আজ এ নিয়ে শুনানির পরে মুখ্য মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট বিনোদ যাদব বলেন, “সবক’টি সংস্থার মধ্যে দিল্লি পুলিশের মামলাই সব থেকে জোরালো বলে মনে হয়েছে।” সে কারণেই হামজাকে আরও ১৫ দিনের জন্য দিল্লি পুলিশর হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। ফলে অন্যদের হামজার হেফাজতের জন্য আবেদন করতে হলে ২০ জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। |
এর মধ্যেই হামজাকে জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ২৬/১১ হামলার সময় করাচির কন্ট্রোল রুমে এসেছিল পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর মেজর সামির আলি। বিস্ফোরণের ধাক্কায় যখন জেরবার মুম্বই, তখন করাচির কন্ট্রোল রুমে বসে লস্কর ই তইবা-র কম্যান্ডার জাকিউর রহমান লকভিকে প্রয়োজনীয় ‘নির্দেশ’ও দিয়েছিল সামির। এর আগে লস্কর জঙ্গি ডেভিড হেডলি-ও ২৬/১১-র হামলায় সামির আলির যুক্ত থাকার কথা জানিয়েছিল। বস্তুত মুম্বই হামলার পরে তদন্তে নেমে ভারতীয় গোয়েন্দারাও আইএসআই-এর এই মেজরের যুক্ত থাকার কথা জানিয়েছিলেন।
সাজিদ মির নামে আইএসআইয়ের আর এক অফিসারের কথাও জানিয়েছে হামজা। বায়তুল মুজাহিদিন ক্যাম্পে কাসভ-সহ নয় জঙ্গির প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল এই মির। তা ছাড়াও, হামলার ছক তৈরিতেও তার ভূমিকা ছিল বলে জানিয়েছে হামজা। ‘অপারেশন মুম্বই’ মিটে যাওয়ার পর কন্ট্রোল রুমে উপস্থিত সবাইকে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ার নির্দেশ দেয় মেজর সামির। হামজার দাবি, তখন বায়তুল মুজাহিদিন ক্যাম্পে ফিরে যায় সে। লাকভিও সেখানে তার তিন স্ত্রীকে নিয়ে একটি বাড়িতে ওঠে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে কয়েক মাস পরে সেখানে পাকিস্তানের ফেডেরাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি হানা দিয়ে লাকভিকে গ্রেফতার করে। সে সময় আবু কাফা নামে এক জঙ্গির সঙ্গে ক্যাম্প থেকে পালিয়ে ফয়সালাবাদে চলে যায় হামজা। সেখান থেকে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফরাবাদে পৌঁছয় সে। জেরায় হামজা জানিয়েছে, সেখান থেকে রাওয়ালপিন্ডি হয়ে সৌদি আরবে চলে যায় সে। |