প্রচণ্ড জোরে গুলির আওয়াজ। সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় লুটিয়ে পড়লেন এক ব্যক্তি। তাঁর গলার ডান পাশ দিয়ে গলগলিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। ডান হাতে ধরা রয়েছে একটি রিভলভার। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় পূর্ব যাদবপুর থানার সামনে ব্যস্ত মুকুন্দপুর রোডে চোখের সামনে ওই ঘটনা দেখে দিশেহারা হয়ে ছুটোছুটি করতে শুরু করেন সাধারণ মানুষ। থানা থেকে কয়েক জন পুলিশ গিয়ে ওই ব্যক্তিকে গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যান।
পুলিশ জানিয়েছে, জখম ব্যক্তি কলকাতা পুলিশেরই সাব-ইনস্পেক্টর। নাম রবীন্দ্রনাথ সরকার (৫৬)। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সহকর্মীর সার্ভিস রিভলভার কেড়ে নিজের গলায় গুলি চালিয়েছেন তিনি। পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার রাতের ডিউটিতে ছিলেন রবীন্দ্রনাথবাবু। বৃহস্পতিবার থানার ব্যারাকে বিশ্রামও নিয়েছেন।
এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তিনি থানার সামনে দাঁড়িয়ে সহকর্মীদের সঙ্গে গল্প করছিলেন। আচমকা দীপক সরকার নামে এক কনস্টেবলের কাছ থেকে রিভলভার ছিনিয়ে তিনি থানা চত্বরের বাইরে চলে যান। তার পরেই গুলির শব্দ শুনে বাইরে বেরিয়ে পুলিশকর্মীরা দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে রয়েছেন তিনি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, রবীন্দ্রনাথবাবুর গলায় অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, গুলি তাঁর গলা ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে।
রবীন্দ্রনাথবাবুর এক সহকর্মী বলেন, “উনি কিছু দিন ধরেই বলছিলেন, দিন-রাত ডিউটির জন্য অতিরিক্ত পরিশ্রম হচ্ছে। বিশ্রামও করতে পারছিলেন না।” পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি বদলির আবেদনও করেন তিনি। ডিসি (সাউথ সুবার্বান) সুজয় চন্দ বলেন, “রবীন্দ্রনাথবাবুর সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তদন্ত হচ্ছে।”
দুপুরেই হাসপাতালে গিয়েছিলেন কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা। রবীন্দ্রনাথবাবুর স্ত্রী ও ছেলেরাও সেখানে ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন লালবাজারের কর্তারা।
জখম ওই পুলিশকর্মীর স্ত্রী রিনাদেবী জানিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথবাবু বরাহনগর থানার ডানলপ নওদাপাড়ার পুলিশ আবাসনে থাকেন। দিন তিনেক তিনি বাড়ি ফেরেননি। কী কারণে তিনি এই কাজ করলেন, তা বুঝতে পারছেন না তাঁর পরিবারের লোকেরাও। |