|
|
|
|
জুলাইয়েই বহির্বাণিজ্য শুরু বাগডোগরা থেকে |
কৌশিক চৌধুরী • শিলিগুড়ি |
আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নীত হওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগোতে চলেছে বাগডোগরা বিমানবন্দর। চলতি মাস থেকেই বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে রফতানি বাণিজ্য চালু হতে চলেছে। মূলত চা, ফল, ফুল-অর্কিড, ভেষজ সামগ্রী এই বিমানবন্দর থেকে রফতানি করা যাবে। এতদিন কলকাতা, দিল্লি বা গুয়াহাটি বিমানবন্দর হয়েই এই সব পণ্য দেশের অন্য প্রান্তে পৌঁছত। তার পর সেখান থেকে রফতানিকারীরা বিদেশে তা পৌঁছে দিতেন। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার বাগডোগরা বিমানবন্দরে ‘প্ল্যাট কোয়ারেনটাইন স্টেশন’ তৈরির নির্দেশ দেয়। তার পরেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ওই পরিকাঠামো তৈরির কাজ চলছে। বিমান পরিষেবা চালু থাকায় আপাতত ভুটান এবং তাইল্যান্ডে বাগডোগরা থেকে রফতানি করা যাবে। সেই সঙ্গে কিছুদিনের জন্য আমদানি বাণিজ্য চালুর ছাড়পত্রও আসবে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি বিমান সংস্থা বাগডোগরা থেকে আন্তর্জাতিক উড়ান চালানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কলকাতা বিমানবন্দরের কোয়ারেনটাইন স্টেশনের আধিকারিকেরা বাগডোগরায় এসে পরিকাঠামোর দিকটি খতিয়ে দেখে গিয়েছেন। বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কল্যাণকিশোর ভৌমিক বলেন, “বাগডোগরার মুকুটে আর একটি পালক জুড়তে চলেছে। প্ল্যাট কোয়ারেনটাইন স্টেশন তৈরি হলেই রফতানি বাণিজ্য শুরু হয়ে যাবে। ভুটান, তাইল্যান্ডে ভারতের বড় বাজার রয়েছে। সেখানে সহজে কম খরচে রফতানি করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। চলতি মাসেই এই পরিষেবা চালু করে দেওয়া হচ্ছে।” বিমানবন্দরের ঢোকার মুখে ‘এন্ট্রি পয়েন্ট’-এ ওই স্টেশন বা কেন্দ্রটি তৈরি করা হচ্ছে বলে কল্যাণবাবু জানিয়েছেন। কলকাতা বিমানবন্দরের কোয়ারেনটাইন অফিসার অনুপ কুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, “খুবই দ্রুত বাগডোগরা থেকে রফতানি বাণিজ্য চালু হবে। আমাদের স্টেশন-এর পরিকাঠামো তৈরি হচ্ছে। এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া বিষয়টি দেখছে।” উত্তরবঙ্গের চা পাতা, কমলালেবু, আনারস, আম, লিচু, অর্কিড-সহ নানা সব্জি তো বটেই, বিভিন্ন ভেষজ দ্রব্যের বিশ্বব্যাপী চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে দার্জিলিং চা বিশ্ববিখ্যাত। তাইল্যান্ডের ব্যাঙ্কক, ফুকেট বা পাটায়ায় বহু রেস্তোরাঁ, হোটেলে খাবার ছাড়াও ভারত থেকে আমদানি করা ফুল, ফুল, সবজি ইত্যাদি বিক্রি হয়। স্টেশনটি চালুর পরে প্রতিটি পণ্য নির্ধারিত বিধি মেনে পরীক্ষার পর ছাড়পত্র পাবে। সেই সঙ্গে বিমানবন্দরের বাইরে পচনশীল পণ্য বা ‘পেরিশেবল কাগোর্র্র্’ বিভাগটি পুরোপুরি তৈরি হয়ে গেলে তাতেও ব্যবসায়ীরা মালপত্র মজুত করতে পারবেন। পরে তা বিদেশের বাজারে চাহিদা অনুসারে রফতানি করতে পারবেন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, স্থলপথ, রেলপথ, জলপথ এবং বিমানপথে বহির্বাণিজ্য কোয়ারেনটাইন স্টেশনে মাধ্যমে হয়ে থাকে। দার্জিলিং জেলার ভারত-নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কিতে ওই ধরনের একটি স্টেশন রয়েছে। ওই দফতরের আধিকারিকদের সূত্রের খবর, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কিছু নিয়মনীতি রয়েছে। যে দেশে জিনিস পাঠানো হচ্ছে, তা সেখানকার নিময় এবং ভারতের রফতানি সংক্রান্ত মাপকাঠিতে মিলছে কি না, তা প্রথমে পরীক্ষা করে দেখা হয়। তার পরে কোনও রোগ, জীবাণু ওই পণ্যের মাধ্যমে বাহিত হতে পারে কি না, তার চুলচেরা বিশ্লেষণ হয়। তার পরেই রফতানি বা আমদানির ছাড়পত্র মেলে। উল্লেখ্য, একসময় আমদানি বাণিজ্যের মাধ্যমেই নারকেল ও ডাবে কিছু জীবাণুর প্রমাণ মিলেছিল। এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার (এএআই) কিছু আধিকারিক জানান, বাগডোগরা বিমানবন্দরের মান ধীরে ধীরে উন্নত করা হচ্ছে। আগেই বিমানবন্দরটিকে শুল্ক বিমানবন্দর করা হয়েছে। এ বার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য চালু হচ্ছে। রাতের বিমান পরিষেবা পরিকাঠামো তৈরি হলেই বিমাবন্দরটিকে আন্তর্জাতিক তকমা দেওয়া হবে। আপাতত ঠিক হয়েছে পানিট্যাঙ্কি ল্যান্ড কোয়ারেনটাইন স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ভিডি নিগম বাগডোগরার স্টেশনটির দায়িত্বে থাকবেন। নিগম বলেন, “দুই কর্মীকে আপাতত ওই স্টেশনে বদলি করা হচ্ছে। আগামী দিনে চাপ বুঝে কর্মী সংখ্যা বাড়বে।” |
|
|
|
|
|