গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের
নন্দীগ্রামে দলেরই লোকের হাতে ‘প্রহৃত’ তৃণমূলকর্মী
রাজ্যে পরিবর্তনের ‘আঁতুড়ঘর’ নন্দীগ্রামে দলেরই লোক জনের হাতে মার খেলেন চার তৃণমূলকর্মী। তাঁদের মধ্যে আমিরুল খান নামে এক জন জখম হয়ে তমলুক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর অভিযোগ, পঞ্চায়েতের দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় তৃণমূলেরই দুই পঞ্চায়েত সদস্য লোক জড়ো করে তাঁদের মারে। যদিও পঞ্চায়েত প্রধানের বক্তব্য, মদ্যপ অবস্থায় পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে গালি দিয়েছিলেন ওই চার জন। তারই প্রতিবাদ করা হয়েছে। ওই চার জন দলীয় কর্মীর নামে থানায় অভিযোগও করেছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের সামসাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েছিলেন এলাকারই চার তৃণমূলকর্মী আমিরুল খান, শেখ তেজামুল, মির কবীর ও শেখ খোকন। তখনই গোলমাল বাধে। পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের শেখ খুশনবির বক্তব্য, “ওই চার জন পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকে কর্মী ও পঞ্চায়েত সদস্যদের গালিগালাজ করতে থাকে। ভাঙচুরও চালায়। ওরা মদ্যপ অবস্থায় ছিল। পরিস্থিতি দেখে প্রতিবাদ করেন পঞ্চায়েত সদস্য শেখ শাহ আলম ও শেখ কবীর। স্থানীয় কিছু মানুষও ওদের আচরণ দেখে প্রতিবাদ করেন।”
তমলুক হাসপাতালে আমিরুল খান।
আমিরুলের বক্তব্য একেবারেই আলাদা। তমলুক হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে বছর বত্রিশের এই যুবক বলেন, “বিপিএল কার্ডের নম্বর জানতে পঞ্চায়েতে গিয়েছিলাম। আমরা নানা সময় পঞ্চায়েতের দুর্নীতিমূলক কাজকর্মের প্রতিবাদ করেছি। এ দিন সেই রাগ থেকেই প্ররোচনা ছাড়া আমাদের মারধর করেন শেখ শাহ আলম ও শেখ কবীর। চেয়ার ও লোহার রড দিয়ে মারে। আমার কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়।” কাছেই একশো দিনের প্রকল্পে পুকুর খননের কাজ চলছিল। লোকজন জড়ো হতে দেরি হয়নি। অল্প মার খেয়ে বাকি তিন জন পালালেও আমিরুল পারেননি। জখম হয়ে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে পড়েছিলেন তিনি। স্থানীয় মানুষ তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে নন্দীগ্রাম হাসপাতাল ও পরে তমলুক হাসপাতালে ভর্তি করান। তাঁর হাতে, পায়ে চোট লেগেছে। মদ্যপ অবস্থায় ভাঙচুর ও গালিগালাজের অভিযোগ মানেননি আমিরুল।
নন্দীগ্রামে কিছু দিন ধরেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল। দলের জেলা পরিষদ সদস্য শেখ সুফিয়ান ও পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আবু তাহেরের অনুগামীদের মধ্যে গোলমাল লেগেই আছে। ক’দিন আগে নন্দীগ্রাম কলেজে ফর্ম তোলা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধে। তার পর এ দিনের ঘটনা। তৃণমূলের দলীয় সূত্রে খবর, আমিরুল-সহ যে চার জন এ দিন পঞ্চায়েতে গিয়েছিলেন তাঁরা সুফিয়ান অনুগামী। আমিরুল সুফিয়ানের দূর সম্পর্কের আত্মীয়ও। অন্য দিকে, পঞ্চায়েত প্রধান শেখ খুশনবি আগে সুফিয়ান ঘনিষ্ঠ থাকলেও সম্প্রতি শিবির বদলে তাহের গোষ্ঠীতে নাম লিখিয়েছেন। ধান্যখোলার পঞ্চায়েত সদস্য শেখ শাহ আলম ও সামসাবাদের পঞ্চায়েত সদস্য শেখ কবীরও তাহের অনুগামী হিসেবে পরিচিত। ফলে, এ দিনের ঘটনার পিছনেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই কাজ করেছে বলে দল সূত্রে খবর। সুফিয়ান বলেন, “ওরা ৪ জন প্রয়োজনেই পঞ্চায়েত অফিসে গিয়েছিল। কিন্তু যেহেতু ওরা পঞ্চায়েতের কাজকমের্র প্রতিবাদ করে, তাই মারধর করা হয়েছে।” আবু তাহেরের বক্তব্য, “আমি বাইরে আছি। গোলমাল হয়েছে শুনেছি। দলেরই লোকজন তাতে জড়িত। পরে খোঁজ নেব।” তবে ঘটনাটি যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বেরই জের, তা মেনে নিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক মামুদ হোসেন। তিনি বলেন, “দলেরই লোকজনের মধ্যে গোলমাল হয়েছে। অনভিপ্রেত ঘটনা।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.