আগের চেয়ে একটু ভাল আছে ‘বুধরাম’। সোমবার সকালে সে জঙ্গল থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে এক চাষির জমিতে গিয়ে এক বিঘা জমির ধান খেয়েছে। তাতেই আশার আলো দেখছে জলপাইগুড়ি বন বিভাগ। বুধরাম হল সেই দাঁতাল হাতি, যাকে মার্চ মাসের গোড়ায় খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখেন টহলদারি বনকর্মীরা। প্রায় ১০ ফুট ১০ ইঞ্চি উচ্চতার দাঁতালটি গ্রামের আশেপাশেই রয়েছে। তাকে দেখতে মাঝে মধ্যে গ্রামবাসী বনের ভেতর ঢুকে পড়তেন। আদর করে কয়েকজন গ্রামবাসী তাকে ‘বুধরাম’ বলে ডাকতে শুরু করেন। সেই শুরু। তার পরেই তার চিকিৎসা করানোর কাজে নামে বন দফতর। বনকর্মীরা জানান, দলের একটি হাতি কিছুদিন দাঁতালটির উপরে নজরদারি করে। পরে সে দলের সঙ্গে অন্য জঙ্গলে চলে যায়। বুধরাম নোনাই নদীর জল খেয়ে দিন কাটাচ্ছিল। |
ছবিটি তুলেছেন রাজকুমার মোদক। |
জলপাইগুড়ি বন বিভাগের তৎকালীন ডিএফও কল্যাণ দাসের উদ্যোগে প্রথমে স্থানীয় চিকিৎসকরা চেষ্টা করেন। পরে বনমন্ত্রীর সহযোগিতায় গুয়াহাটি থেকে চিকিৎসক ও হস্তি বিশেষজ্ঞদের এনে চিকিসা শুরু করান কল্যাণবাবু। ধীরে ধীরে তার ফল মিলতে শুরু করেছে। বর্তমানে জলপাইগুড়ি বন বিভাগের দায়িত্বে রয়েছেন বিদ্যুৎ সরকার। বিদ্যুৎবাবু বলেন, “চিকিৎসায় অনেকটাই সেরে উঠছে হাতিটি। আজ তার পায়ের ফোলা কমেছে বলে বোঝা গিয়েছে। শীঘ্রই বুধরাম সুস্থ হয়ে দলের সঙ্গে মিশে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে বলে আশা করছি।” জলপাইগুড়ি থেকে কলকাতায় বদলি হলেও কল্যাণবাবু ভোলেননি বুধরামের কথা। তিনি বলেন, “যা শুনতে পাচ্ছি তাতে তাড়াতাড়ি অন্য হাতিদের সঙ্গে মিশে যাবে বুধরাম।” বন দফতর সূত্রের খবর, প্রায় সাড়ে তিন মাস ধরে এক জায়গায় ঘোরাফেরার জন্য সে বাবে কাবার জোটেনি হাতিটির। শরীর কিছুটা রুগ্ণ হয়ে গিয়েছে। মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বুধরামকে চিকিৎসা করেন গুয়াহাটির পশু চিকিৎসক কুশল শর্মা। এদিন শিলং থেকে বাড়ি ফেরার পথে বুধরামের খবর পেয়ে খুশি তিনি। তাঁর কথায়, “এবার আর হাতিটিকে নিয়ে ততটা দুশ্চিন্তা নেই।” |