আগে সাজা ঘোষণা করে এখন সাজাপ্রাপ্তের কাছে ব্যাখ্যা চাইছেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরে অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রকে বহিষ্কার করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত একপ্রকার হয়ে গিয়েছে বলে গত সপ্তাহেই জানিয়েছিলেন উপাচার্য চিণ্ময় গুহ। আর সোমবার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বহিষ্কার করার আগে ছাত্রদের শো-কজ করাই নিয়ম। সেই রীতি মেনে ওই ছাত্রদের এখন শো-কজ হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, বিশ্ববিদ্যালয় এখন ছাত্রদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠছেন কি না, তা নিয়ে। কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, এমন সংশয় অমূলক। গত মঙ্গলবার, ১২ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ঘর ও তার সংলগ্ন ঘরগুলিতে ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে পাঁচ জনের বিরুদ্ধে। এদের মধ্যে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক, সভাপতি-সহ অন্যান্যরা। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। গত শনিবার জামিনে মুক্ত হয় ওই পাঁচ ছাত্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ধৃত ছাত্রদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। গত শনিবার এগজিকিউটিভ কাউন্সিলের (ইসি) বৈঠকে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর মিলেছিল, বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠবেন না কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শনিবার ইসি-র বৈঠকটিই বাতিল হয়। সোমবার কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁরা ওই পাঁচ ছাত্রকে শো-কজ করেছেন। এক কর্তা বলেন, “আইন অনুযায়ী কাউকে বহিষ্কার করার আগে তাকে শো-কজ করা উচিত। সেই কারণে ছাত্রদের শো-কজ করা হয়েছে।” তবে শো-কজ না করে আগেভাগে ছাত্রদের বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করাটা ঠিক হয়নি বলে এখন মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশ। বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত অবশ্য বহাল থাকবে বলেই দাবি কর্তৃপক্ষের। যদিও উপাচার্য এ দিন এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে।”
অভিযুক্ত ছাত্রদের আবার দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে কোনও চিঠিও পায়নি তারা। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিল ওই পাঁচ জন। কিন্তু পড়ুয়াদের বাধার মুখে পড়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই তাদের ক্যাম্পাস ছাড়তে হয়।
এ দিন বেলা পৌনে বারোটা নাগাদ ক্যাম্পাসে ঢোকে জামিনে মুক্ত পাঁচ ছাত্র। ঢোকার পরে একদল পড়ুয়ার বাধার সামনে পড়ে তারা। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, তৃণমূল ছাত্র পরিষদেরই অন্য একটি গোষ্ঠী ওই পাঁচজনকে বাধা দেয়। যদিও দু’পক্ষই এ নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি। |