রেকর্ড সংখ্যক সাত বার ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন হয়ে রাফায়েল নাদাল এই টুর্নামেন্টকে টেনিসের ইতিহাসে সর্বোত্তম আখ্যা দিয়ে দিলেন। বললেন, “এটাই আমার টেনিসজীবনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্ত। অবিস্মরণীয় মুহূর্ত।” তার সঙ্গে যোগ করলেন, “সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টেনিস টুর্নামেন্টে আজ সপ্তম বার চ্যাম্পিয়ন হতে পারাটা আমার কাছে বিরাট সম্মানের ব্যাপার। বিশাল প্রাপ্তি। আমার চোখে ফরাসি ওপেনই টেনিসের গ্রেটেস্ট টুর্নামেন্ট।”
একই সঙ্গে নাদাল স্বীকার করেছেন, “সোমবার ম্যাচ পুনরাম্ভ হওয়ার তিন মিনিট আগেও আমি মানসিক ভাবে তৈরি হয়ে উঠতে পারিনি। তখনও ভীষণ টেনশন হচ্ছিল এই ভেবে যে, আবার ফাইনালটা খেলতে হবে। তবে গতকাল আমার দিক দিয়ে একেবারে আদর্শ সময় ম্যাচটা স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। কারণ তখন জকোভিচ নিজের সেরা খেলাটা খেলছিল। কোর্টের পরিস্থিতিও ঠিক আমার অনুকূলে ছিল না।” |
সাত বারের মধ্য চার বার ফেডেরারকে ফাইনালে হারিয়ে রোলাঁ গারোয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন নাদাল। সেখানে জকোভিচের এটাই রোলাঁ গারোয় প্রথম বার ফাইনাল। সাতটার মধ্যে কোন ফাইনালটা আপনার সেরা? “অবশ্যই এ বারেরটা,” বলেছেন নাদাল। “ফেডেরার গ্রেট। তবে জকোভিচকে হারিয়েই তো ফরাসি ওপেনে আমার রেকর্ড গড়া। সেই ফাইনালটার আগে আর কোন ম্যাচ থাকতে পারে আমার কাছে? তা ছাড়া জকোভিচ বিশ্বের এক নম্বর প্লেয়ার। শেষ তিনটে গ্র্যান্ড স্লাম ফাইনালেই আমাকে হারিয়েছে। বিশ্বের সেরা প্লেয়ারকে আজ হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা আমার কাছে মোটেই সহজ ব্যাপার ছিল না।”
বিয়র্ন বগের্র রেকর্ড ভাঙলেও নাদালকে ট্রফি দিতে বর্গ আজ ফিলিপ শাঁতিয়ের কোর্টে ছিলেন না। ট্রফি দিলেন ম্যাটস ভিল্যান্ডার। নাদালের আগে যাঁর আবির্ভাবেই ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড ছিল। ফরাসি ওপেনের ঐতিহাসিক চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি মাস্কেটিয়ার্স কাপে চিরাচরিত কামড় বসিয়ে রাফা-স্টাইলে বিজয়োৎসব করার ফাঁকে নাদাল বলেন, “আমার কাছে এই টুর্নামেন্ট সবচেয়ে স্পেশ্যাল। এই ট্রফিটা ধরলে আমি সব সময় ভীষণ আবেগতাড়িত হয়ে পড়ি। আজও সে রকম হচ্ছি। তবে এ বারের আবেগের কাছে আগের ছ’বারের সব আবেগ হেরে গেছে। আমার টেনিসজীবনের সবচেয়ে আবেগের দিন আজই।” এবং আজই ১১টা গ্র্যান্ডস্লাম জিতে বর্গ আর লেভারকে ছুঁলেন নাদাল। |
জকোভিচও প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন তাঁর মহাপ্রতিদ্বন্দ্বীকে। “ক্লে কোর্টে রাফা নিঃসন্দেহে সর্বকালের সেরা। ওর রেকর্ডই সেটা বলছে। টেনিস খেলাটার ইতিহাসেও রাফা সর্বকালের অন্যতম সেরা প্লেয়ার এবং ওর বয়স মাত্র ছাব্বিশ। কোথায় গিয়ে থামবে কে জানে!” বলেছেন তিনি। সঙ্গে জকোভিচ যোগ করেছেন, “রাফা আমার থেকে ভাল প্লেয়ার। এই ম্যাচে ও আমার থেকে ভাল খেলেছে। সে জন্য এই হারে আমার কোনও আক্ষেপ নেই। তবে আমার সামনেও ইতিহাস গড়ার সুযোগ ছিল। সেটা কাজে লাগাতে না পারায় আমি হতাশ। রাফার কাছে হেরে যাওয়ার জন্য হতাশ নই।” |