|
|
|
|
সভাধিপতিকে ফোন করে বিতর্কে টিএমসিপি নেতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
রাজ্যে ‘পরিবর্তনের’ পরে অন্য কলেজে যদি সভাপতি বদল হয়, তা হলে মেদিনীপুর মহিলা কলেজ এবং পিংলা কলেজেই বা হবে না কেন? স্রেফ এই যুক্তিতে ওই দুই কলেজের পরিচালন সমিতির পদ থেকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সিপিএম সভাধিপতি অন্তরা ভট্টাচার্যকে ‘সরানোর’ দাবি তুলে বিতর্কে জড়িয়েছেন টিএমসিপি-র জেলা চেয়ারম্যান রমাপ্রসাদ গিরি।
সোমবার বিকেলে অন্তরাদেবীকে ফোন করে ওই দুই কলেজের সভাপতি পদে ইস্তফা দিতেও বলেন ওই ছাত্রনেতা।
|
টিএমসিপি নেতা
রমাপ্রসাদ গিরি |
|
সিপিএম সভাধিপতি
অন্তরা ভট্টাচার্য |
অন্তরাদেবীর অভিযোগ, তাঁকে ফোনে ‘চাপ’-ও দেওয়া হয়। সভাধিপতির বক্তব্য, “ওই নেতা ইস্তফার জন্য ফোনে জোরাজুরি করতে থাকেন। আমি লিখিত ভাবে তাঁর বক্তব্য জানাতে বলি। ওই ছাত্রনেতা জানান, তা সম্ভব নয়। ইস্তফা না দিলে অনাস্থা এনে আমাকে সরানো হবে বলে উনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।”
‘হুমকি-ফোন’-এর বিষয়ে কোথাও লিখিত অভিযোগ করেননি অন্তরাদেবী। কিন্তু শিক্ষামহল প্রশ্ন তুলেছে, এ ভাবে কোনও ছাত্র সংগঠনের নেতা কি জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে ফোন করে পদত্যাগ করার জন্য ‘চাপ’ দিতে পারেন? তাঁর সরকার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে ‘দলতন্ত্র’ করবে না বলে একাধিক বার ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সভাধিপতিকে ফোন করার কথা কবুল করলেও রমাপ্রসাদের দাবি, “জোরাজুরি করিনি। পদত্যাগের জন্য বলেছি। উনি নিজে না সরলে অনাস্থা আনতেই হবে।” কেন সরতে হবে? ওই টিএমসিপি নেতার বক্তব্য, “এক জন হার্মাদ-নেত্রীকে কলেজের সভাপতি পদে রাখা যাবে না।” দলের ছাত্রনেতার এ হেন ‘ফরমানে’র কথা জানাজানি হওয়ায় জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব বিড়ম্বনায়। দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, “বিস্তারিত জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
আজ, মঙ্গলবারই মেদিনীপুর মহিলা কলেজে পরিচালন সমিতির সভা রয়েছে। সমিতির সদস্য ১৪ জন। তাঁদের মধ্যে ২ জন সরকারি প্রতিনিধি। রাজ্যে পালাবদলের পর এই ২ প্রতিনিধি আগেই বদলেছে। সরকারি প্রতিনিধি হয়েছেন মেদিনীপুর পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর গৌরী ঘোষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলেরই শিক্ষাসেলের নেত্রী
ইন্দ্রাণী দত্তচৌধুরী।
অন্তরাদেবী বলেন, “ওই দুই কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্যরা চেয়েছিলেন বলেই সভাপতি হয়েছিলাম। না চাইলে সভাপতির পদে থাকবও না।”
মেদিনীপুর মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ উদয়চাঁদ পালের বক্তব্য, “মঙ্গলবার মিটিং আছে। তার আগে কী-ই বা বলব!” কলেজ ছাত্র-সংসদের এসএফআই নেত্রী শর্বরী মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “কলেজের কেউ না হয়েও পরিচালন সমিতির সভাপতিকে সরতে বলা অভাবনীয়!”
কয়েক দিন আগেই এই জেলার নাড়াজোল রাজ কলেজের সভাপতি পদে আনা হয়েছে দাসপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনে তৃণমূল-প্রার্থী মমতা ভুঁইয়াকে।
জনপ্রতিনিধি না হয়েই মাধ্যমিক অনুত্তীর্ণ এই বধূর কলেজ-সভাপতি হওয়া নিয়ে বিতর্কের মধ্যেই জেলা সভাধিপতিকে এ ভাবে ফোন করে কলেজ থেকে ইস্তফা দিতে বলায় শিক্ষক-মহলে অসন্তোষ ছড়িয়েছে। |
ফাইল চিত্র |
|
|
|
|
|