অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে
সিপিএম নেতার বাড়িতে হামলা, মারধর-ভাঙচুর
সিপিএমের লোকাল কমিটির এক নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাঁর আত্মীয়দের মারধরের অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে গোঘাটের কোকন্দ গ্রামে। ঘটনার সময়ে বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন ওই সিপিএম নেতা নিতাই চানক। তাঁর ভাইপো বিশ্বজিৎ চানককে মুগুর দিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম অবস্থায় ওই যুবককে ভর্তি করা হয়েছে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। বাড়ির আরও কয়েক জন সদস্যকেও মারধর করা হয়। মহিলাদের শ্লীলতাহানিরও অভিযোগ উঠেছে। তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে চানক-পরিবার। ঘটনাস্থল থেকে বদনগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি মিনিট আটেকের পথ। কিন্তু পুলিশ এসেছে প্রায় আধ ঘণ্টা পরে। তত ক্ষণে তাণ্ডব চালিয়ে পালিয়ে গিয়েছে হামলাকারীরা। নিতাইবাবু ও তাঁর দাদা নিরঞ্জন চানক ‘ভয়ে’ গ্রামছাড়া।
আরামবাগের এসডিপিও শিবপ্রসাদ পাত্র বলেন, “পুলিশের গাফিলতি নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তা লিখিত ভাবে জানাতে বলেছি। গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”
নিতাইবাবু সিপিএমের গোঘাট ৩ লোকাল কমিটির সদস্য। তাঁর বক্তব্য, “বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই মানসিক নির্যাতন শুরু করেছিল তৃণমূলের লোকজন। বাড়িতে ঢিল ছোড়া, কটূক্তি এ সব তো ছিলই, একাধিক বার জরিমানা দাবি করেছে। গত বুধবারও স্থানীয় তৃণমূল নেতা অনুপ ঘোষ ও তাঁর দলবল ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা দাবি করে।” কিসের জরিমানা? নিতাইবাবুর দাবি, “ওরা বলে, আমি নাকি সিপিএমের দুষ্কৃতী। অনেক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। তাই টাকাটা দিয়ে তবেই গ্রামে থাকা যাবে। ওদের বলি, আমার নামে কোনও দুর্নীতির অভিযোগই নেই। তখন আমাকে বলা হয়, সিপিএম করি বলেই টাকাটা দিতে হবে। নগদ টাকা না দিলে কিছুটা জমির মালিকানা লিখে দিতে বলা হয়।”
জখম বিশ্বজিৎ। ছবি: মোহন দাস।
ঘটনাটি পুলিশকে জানিয়েছিলেন নিতাইবাবু। তার দু’দিনের মাথায় হামলা। নিতাইবাবু বলেন, “আমাকে খুন করতেই এসেছিল ওরা।” কী হয়েছিল রবিবার রাতে?
নিতাইবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত তখন প্রায় ৮টা। জনা তিরিশ হামলাকারীরা চড়াও হয় বাড়িতে। দরজা ভেঙে ঢুকে আসে অন্দরমহলে। বিপদ বুঝে মাটির বাড়ির তিনতলায় লুকিয়ে পড়েন নিতাইবাবু। অভিযোগ, তাঁর ভাইয়ের স্ত্রী শিখাদেবীর শ্লীলতাহানি করে হামলাকারীরা। বাধা দিতে গেলে শিখাদেবীর ছেলে নবম শ্রেণির কিশোর সুমনকে মুগুরের বাড়ি মারে। নিতাইবাবুর স্ত্রী অপর্ণাদেবীকেও চড়-থাপ্পর মেরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা চলে বলে অভিযোগ। তাঁর ছেলে অনির্বাণ পড়ে দ্বাদশ শ্রেণিতে। মায়ের অপমানের প্রতিবাদ করায় তাকে মারধর করে মোটর বাইকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। ওই ঘটনায় বাধা দেন নিতাইবাবুর ভাইপো বিশ্বজিৎ। তার মাথায় মুগুরের ঘা বসিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। নিতাইবাবুর দাদা নিরঞ্জনকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ। রাতেই তৃণমূল নেতা অনুপ ঘোষ, গোবিন্দ মণ্ডল, বিকাশ চানক-সহ কয়েক জনের নামে নিতাইবাবুর স্ত্রী অভিযোগ জানান পুলিশের কাছে।
অনুপবাবুর দাবি, ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও যোগ নেই। যদিও গোঘাটের তৃণমূল নেতা মনোরঞ্জন পাল বলেন, “ঘটনার পিছনে যাদেরই হাত থাক, অত্যন্ত নিন্দাজনক কাজ হয়েছে। আমাদের দলের কেউ যুক্ত থাকলে পুলিশ তদন্ত করে কড়া ব্যবস্থা নিক। দলীয় ভাবেও বিষয়টি খতিয়ে দেখছি আমরা।” এ বিষয়ে সিপিএমের গোঘাট জোনাল কমিটির সম্পাদক অরুণ পাত্র বলেন, “মানুষ তৃণমূলের নোংরা রাজনীতি দেখছেন। তাঁরাই বিচার করবেন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.