|
|
|
|
প্রবন্ধ ১... |
ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন, তবু আমরা ‘ইস্যু’ খুঁজছি |
অনেক বিদেশি শব্দ বাংলা ভাষায় এখন কায়েম হয়ে বসেছে, অথচ সামান্য একটু চিন্তা করলেই
তাদের
যথাযথ প্রতিশব্দ আমাদের ভাষার ভাণ্ডারে খুঁজে পাওয়া সম্ভব ছিল,
বিদেশি শব্দাদি
আমদানি সম্পূর্ণ
অপ্রয়োজনীয়। বাংলা ভাষার গতি ও প্রকৃতি নিয়ে গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন অশোক মিত্র |
কবে, কোথায়, সম্ভবত হরপ্রসাদ মিত্রের কোনও কবিতায় এই চকিত পংক্তিটি পেয়েছিলাম, ‘দিন কাটে পুরনো জুতোর মতো আরামে-ব্যারামে...’। তখন খেয়াল করিনি, কখনওই খেয়াল করি না ব্যারাম আসলে বে-আরাম বে-ইজ্জত, বে-শরম, বে-আদব, বে-ওয়ারিশ ইত্যাদির স্বগোত্র, হয়তো চতুর্দশ-পঞ্চদশ শতাব্দীতে, কিংবা তারও কিছু আগে, বাংলা ভাষায় অতিথি হিসেবে প্রবেশ করেছিল, অচিরে ঘরোয়া শব্দ বনে গেল। এ রকম শত শত আরবি-ফারসি শব্দ আমাদের ভাষার শরীরে একাত্ম হয়ে আছে। ইংরেজ আমলে আরও এক কাঁড়ি নতুন শব্দের স্বচ্ছন্দ অনুপ্রবেশ, বিস্কুট, কেক, মামলেট, ক্যানেস্তারা, হ্যারিকেন, ক্যান্টিন, জেল, হাসপাতাল, ডাক্তার, রেল, ইস্টিমার, এঞ্জিন, ইঞ্জিনিয়ার, কলেজ, ইশকুল, ইস্টুপিড, কাউকেই বিদেশি শব্দ বলার সাহস হবে না, পরিচিত অভ্যাসের মতো আমাদের ভাষার শব্দ-সম্ভারের মধ্যে এদের উপস্থিতি। এ ধরনের শব্দাবলির সাতসমুদ্র পাড়ি দেওয়া অবশ্য আদৌ একতরফা হয়নি, ইংরেজি ভাষাতেও আমাদের কিছু কিছু শব্দ নিজেদের নিশ্চিন্ত জায়গা করে নিয়েছে বিচিত্র বানানে, বিচিত্র উচ্চারণে: খিচুড়ি, কোমরবন্ধ, পণ্ডিত, জঙ্গল, জগন্নাথ, ব্রাহ্মণ, এমনকী স্বর্ণদীপ পর্যন্ত!
যা লক্ষণীয়, বিদেশি শব্দ আমাদের ভাষায় ঢুকছে, আমাদের শব্দ বিদেশিরা গ্রহণ করেছেন, এই প্রক্রিয়ায় উপর থেকে চাপানো কোনও ফরমান কাজ করেনি, মানুষজন তাঁদের স্ব-স্ব ক্রিয়া-কর্তব্য সম্পন্ন করবার তাগিদে কিংবা কোনও অভিজ্ঞান বা অনুভব প্রকাশ করতে গিয়ে, মাতৃভাষা হাতড়ে যথাযথ শব্দ খুঁজে না পেয়ে, বিদেশি শব্দের শরণাপন্ন হয়েছেন, সেই শব্দ ক্রমে ক্রমে গার্হস্থ্য সম্পদে রূপান্তরিত হয়েছে। |
|
‘বাংলা ভাষার ভবিষ্যৎ’ নিয়ে আলাপ ও আলোচনা। কলকাতা, ২০০৫। ছবি: দেবীপ্রসাদ সিংহ |
পিছনে ফেলে আসা শতাব্দীগুলিতে সংবাদমাধ্যমের বালাই ছিল না, সংবাদপত্রে একটি বিশেষ বিদেশি শব্দ কোনও কিছু ব্যাখ্যা করার জন্য অহরহ প্রয়োগ করা হচ্ছে, পাঠকরা আস্তে-আস্তে ধাতস্থ হচ্ছেন, এমনটা ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত মশাইদের সমকালে খুব একটা ঘটেনি। ঘটলেও তা অতি সামান্য। সে সময় বাংলা গদ্যকে যাঁরা আদল দিয়েছেন বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র, অক্ষয়কুমার দত্ত, এ হেন মহাজন ভাষার শুদ্ধতা নিয়ে ভারী সচেতন ছিলেন, মাতৃভাষার ভাণ্ডারে প্রয়োজনীয় কোনও শব্দের অভাব বোধ করলে তাঁরা বরং পরিত্রাণের জন্য দেবভাষার দিকে ঝুঁকতেন। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে হঠাৎ মস্ত উথাল-পাথাল। ইয়োরোপ-আমেরিকার মতো, স্বাধীন ভারতবর্ষেও সংবাদমাধ্যমের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ক্রমশ উন্মোচিত হল, সংবাদপত্রের দ্রুত প্রসার, মাতৃভাষায় প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকা একটু একটু করে গহনতম গ্রামাঞ্চলেও পৌঁছল। ঢিমে তালে হলেও সাক্ষরতা, সেই সঙ্গে রাজনৈতিক সচেতনতা, যতই ব্যাপ্ত হল, দৈনিক-সাপ্তাহিক-পাক্ষিক পত্রিকার প্রভাবেরও প্রসার ঘটল। সেই সঙ্গে যা প্রায় অবধারিত, সাধারণ মানুষের মতামত গঠনে সংবাদপত্র, যেন নিয়তিলিখনের মতো, প্রভাব ফেলতে শুরু করল। কখন যেন চায়ের দোকানে তর্ক-আড্ডায় সংবাদপত্রের ভাষা মাখামাখি, মানুষের কথ্য ভাষায় উঠে এল প্রতিদিন খবর-কাগজে পড়া বাক্যগঠন শব্দপ্রয়োগের ধ্বনি-প্রতিচ্ছবি।
সেই সঙ্গে গোটা পৃথিবী জুড়ে রকমারি কাণ্ডকারখানা ঘটছে, বিজ্ঞান ক্ষিপ্রগতিতে অগ্রসরমাণ, নিত্য-নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন, আন্তর্জাতিক আদান-প্রদানের সূত্রে অনেক নতুন নতুন শব্দের ভিড়। স্বাধীন দেশ ভারতবর্ষ, নানা ব্যস্ত আন্তর্জাতিক ভূমিকায় ভারতীয় নাগরিকবৃন্দ অবতীর্ণ, তা ছাড়া দেশের কেষ্ট-বিষ্টুরা নানা ক্ষেত্রে নব-উদ্ভাবিত প্রযুক্তির প্রয়োগে উৎসাহী, পাঁচ মহাদেশে ছড়ানো বিভিন্ন সংস্কৃতির ঝাপটাও এই দেশের পরিবেশকে সর্বক্ষণ বিচলিত করছে। সাংবাদিকরা অনেক নতুন বিদেশি শব্দের মুখোমুখি হচ্ছেন। সে সব শব্দের ভাবার্থের সঙ্গে আঁটোসাঁটো মিলে যায়, মাতৃভাষায় চট করে তেমন প্রতিশব্দ খুঁজে পাচ্ছেন না, অথচ বিষম তাড়া, যা যা ঘটছে, যা যা আলোচিত হচ্ছে, যা নিয়ে পৃথিবী জুড়ে চিন্তা-চর্চা চলছে, তা বিনা বিলম্বে দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া অতিকর্তব্য। সাংবাদিকরা তাই অনেক নতুন বিদেশি শব্দ মাতৃভাষায় প্রকাশিত পত্রিকাদির মধ্যবর্তিতায় ব্যবহার করতে লাগলেন। গত পঞ্চাশ বছর জুড়ে বাংলা ভাষায় এ ভাবে অজস্র শব্দ আত্মপ্রকাশ করেছে: পেট্রোল, ডিজেল তেল, মলোটভ্ বোমা, হাইড্রোজেন বোমা, স্যান্ডুইচ, সুনামি, ব্যালট বাক্স, কন্ট্রোল, র্যাশন, মোবাইল, চ্যানেল, চকোলেট, আঁতাত, বাইপাস, সত্যিই গুনে শেষ করা যায় না।
তবে মাঝে-মধ্যে একটু মুশকিলও দেখা দিয়েছে। অনেক বিদেশি শব্দ সংবাদপত্রের মহিমায় বাংলা ভাষায় এখন কায়েম হয়ে বসেছে, অথচ সামান্য একটু চিন্তা করলেই তাদের যথাযথ প্রতিশব্দ আমাদের ভাষার ভাণ্ডারে খুঁজে পাওয়া সম্ভব ছিল, বিদেশি শব্দাদি আমদানি সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়। একটি উদাহরণ দিচ্ছি। খবর-কাগজের দৌলতে বঙ্গভাষী রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে সাধারণ গৃহবধূ পর্যন্ত অহরহ ‘ইস্যু’ নিয়ে ভাবিত, সমস্ত প্রসঙ্গ বা সমস্যাই তাঁদের কাছে ‘ইস্যু’ হিসেবে বিরাজ করে, পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষ সরিয়ে রেখে দুই দেশের নেতারা নাকি ‘ইস্যু-ভিত্তিক’ আলোচনায় সম্মত হয়েছেন, অমুক ‘ইস্যু’তে তমুক দল ধর্মঘট ডেকেছেন, পুরনো কাসুন্দি আর কেউ ঘাঁটেন না, পুরনো ‘ইস্যু’গুলি ঘাঁটাঘাঁটি করেন। সামনে ইস্যু, পিছনে ইস্যু, ডাইনে ইস্যু, বাঁয়ে ইস্যু, ইস্যুর ফাঁসে আমাদের নাভিশ্বাস। অথচ বাংলা ভাষা জুড়ে সুন্দর সুন্দর এত সমশব্দ, প্রসঙ্গ বুঝে যাদের থেকে ঠিক-ঠিক বেছে নেওয়া সম্ভব: প্রসঙ্গ বা সমস্যা শুধু নয়, প্রশ্ন, বিষয়, ব্যাপার, সমস্যা, ধাঁধা, হেঁয়ালি, মাইকেলীয় সেই বিখ্যাত খেদ হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন...ইত্যাদি ইত্যাদি হঠাৎ যেন ভীষণ প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে।
এমনধারা আলস্য-সঞ্জাত স্বেচ্ছাচারিতার আরও উদাহরণ সহজেই পেশ করা যায়, কিন্তু অনেকে হয়তো বলবেন, কোনও ভাষার উপর যখন বাইরেকার ধাক্কা হঠাৎ প্রবল আকারে উপস্থিত, একটা-দুটো এ ধরনের স্খলন নিয়ে গৃহবিলাপ অর্থহীন। তেমন বাড়াবাড়ি ঘটলে ভাষা-ব্যবহারকারীরাই তা ক্রমে শুধরে নেবেন। এ সব ফালতু ‘ইস্যু’ নিয়ে অযথা কণ্ডূয়ন কেন?
সত্যিই তো আরও অনেক অনেক বড় সংকট, যা ইতিমধ্যেই আমাদের প্রায় ঘাড়ের উপর উদ্যত খড়্গের মতো, তা নিয়ে ভাবা অবশ্যই বহুগুণ বেশি জরুরি। সংবিধান সংশোধন করে দেশের প্রত্যেকটি শিশুকে শিক্ষাদান রাষ্ট্রের পক্ষে অপরিত্যাজ্য অবশ্যকরণীয় দায়িত্ব বলে সম্প্রতি ঘোষিত হয়েছে। অনেকগুলি জটিল সমস্যা এই দায়িত্ব সুষ্ঠু পরিপালনের সঙ্গে জড়িত। আমাদের রাজ্যে অতিশৈশব থেকে যুগপৎ মাতৃভাষা ও ইংরেজির মধ্যবর্তিতাতে শিক্ষা-প্রদানের ব্যবস্থা ইতিমধ্যে চালু হয়েছে। কচি-কাঁচারা, বিশেষ করে যুগ-যুগ ধরে দারিদ্র, অপুষ্টি ও নিরক্ষরতার ঐতিহ্য-বহনকারী নিম্নবর্গভুক্ত পরিবারের কাচ্চাবাচ্চারা একসঙ্গে দু’টি ভাষা সমান রপ্ত করতে পারবে কি না, না কি দুই ভাষাতেই তাদের ভিত কাঁচা থেকে যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা আদৌ অযৌক্তিক নয়। প্রয়োজন-মতো উপযুক্ত শিক্ষক সংগ্রহও আদৌ সহজ নয়, বিশেষ করে যে হারে মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে, এবং সেই সঙ্গে সামাজিক অশান্তিবৃদ্ধিও, শিক্ষকমহলে সেই আগুন স্পর্শ না করে পারে না। তা ছাড়া, ছন্নছাড়া প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে যথেষ্টসংখ্যক শিক্ষক পাঠানো সম্ভব হবে কি?
সব মিলিয়ে ভবিষ্যতের জন্য মস্ত-মস্ত অনেকগুলি প্রশ্নচিহ্ন বাচ্চারা কী শিখল, কতটা শিখল, শিক্ষাদানে শ্রেণিগত ও আঞ্চলিক বৈষম্য বাড়ল কি কমল, এ-সমস্ত বিভিন্ন উৎকণ্ঠার নিরসন করতলগত হরতুকির মতো নয়। আপাতত যা সামাজিক রাজনৈতিক বিন্যাস, তথাকথিত শিক্ষিত মধ্যবিত্তরাই শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রধান নিয়ামক হয়ে থাকবেন, তাঁদের ইচ্ছা-রুচি অনুযায়ী শিক্ষার বিষয় তথা প্রণালী-পদ্ধতি আরও বেশ কিছু দিন নিরূপিত হতে বাধ্য। দরিদ্রতর শ্রেণিভুক্তরা পড়ি-কি-মরি মধ্যবিত্তদের রুচি-অভিরুচি অনুযায়ী নিজেদের গড়ে তুলতে প্রয়াসবান হবেন, তাঁদের তো জাতে উঠতে হবে!
যখন এ সব হিসেব-নিকেশ চলছে, বোঝার ওপর শাকের আঁটি, সম্ভ্রান্ত শ্রেণির সমাজনিয়ামকরা চাইছেন তাঁদের সন্তানসন্ততি কম্পিউটার-বিজ্ঞানেও সমান দক্ষ হোক, কম্পিউটারের ভাষা শিখুক, নইলে প্রতিযোগিতামূলক পৃথিবীতে ঠাঁই পাবে না যে! গোলেমালে হরিবোল, একসঙ্গে তিনটি ভাষার মাতৃভাষা, ইংরেজি, কম্পিউটার-ভাষা পরস্পরকে গুঁতোগুঁতি, তবে ইংরেজি ভাষার মধ্যে কম্পিউটারের ভাষাকে সহজেই ঠাঁই দেওয়া যায় উপভাষা হিসেবে। সেই কাজ মোটামুটি হয়েও গেছে।
সুতরাং, দ্বন্দ্বটি দাঁড়াচ্ছে মাতৃভাষা ও কম্পিউটার-ভাষা-আত্মস্থ-করা ইংরেজি ভাষার মধ্যে। সমস্যাটি শুধু শিক্ষাক্রমেই নয়, সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রেও, খবরের কাগজে ব্যবহৃত ভাষা, টেলিভিশনে সঞ্চালক-সঞ্চালিকাদের বক্তব্যের ভাষা, সরকারি দফতরে ফাইল চালাচালির ভাষা, বিচারালয়ের ভাষা, বিজ্ঞাপনের ভাষা, সর্বত্রই সংকট। অথচ এই দ্বন্দ্ব থেকে উত্তীর্ণ হতে না পারলে গোটা সামাজিক-আর্থিক ব্যবস্থাই ভেঙে পড়ার আশঙ্কা। এই মুহূর্তে সমাজের যাঁরা কর্ণধার, তাঁদের বিশেষ শুচিবায়ু নেই, রবীন্দ্রনাথের ভাষার শুদ্ধতা চিরকাল অ-ক্ষুণ্ণ রইল কি না, সে বিষয়ে তাঁদের স্পষ্টতই মাথাব্যথা নেই, তাঁরা ‘কেজো’ সমাধানের অন্বেষী, তাঁদের নিজেদের ঘরের ছেলেমেয়েরা চমৎকার ইংরেজি বোঝে, কম্পিউটারের ভাষা বোঝে, মাতৃভাষায় আড়ষ্ট। অন্য পক্ষে গরিব ছাপোষাদের সন্তানসন্ততি যা-ও একটু-আধটু মাতৃভাষায় নিজেদের প্রকাশ করতে পারে, ইংরেজি ও কম্পিউটারের ভাষার উল্লেখে তারা ফ্যালফ্যাল তাকিয়ে থাকে। অথচ সংবিধানে অমোঘ নির্দেশ, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় নাগরিকে-নাগরিকে বৈষম্য করা চলবে না, অন্য সমস্ত অধিকারের মতো শিক্ষার অধিকারও সব স্তরের শ্রেণি, বর্গ ও সম্প্রদায়ের সম-প্রাপ্য।
আমি আপাতত একটি দুঃস্বপ্নের ঘোরে দিবানিশি ঘুরপাক খাচ্ছি। দেশে তো সংরক্ষণের একটি ব্যস্ত পর্ব চলছে, দলিত থেকে শুরু করে মহিলাদের জন্য, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য, এমনকী দারিদ্রপীড়িত ব্রাহ্মণ শাস্ত্রজ্ঞদের জন্যও সরকারি চাকরিবাকরি, সরকারি শিক্ষায়তনে লেখাপড়ার সুযোগ, সরকারি হাসপাতালে শয্যা পাওয়ার সুযোগ ঝুড়ি-ঝুড়ি সংরক্ষণের সরকারি প্রস্তাব পেশ করা হচ্ছে। কে জানে সমাজের মাথায় যাঁরা অবস্থান করছেন, তাঁরা হয়তো নিম্নরূপ প্রস্তাব দাখিল করবেন, সঙ্গে সঙ্গে সরকারও তা মেনে নেবেন: শিক্ষার একমাত্র বাহন মাতৃভাষাই থাকুক, কিন্তু এ বার থেকে অনুমোদিত প্রতিটি পাঠ্যপুস্তকে ব্যবহৃত মাতৃভাষায় ন্যূনতম তিপ্পান্ন শতাংশ ইংরেজি তথা কম্পিউটার-শব্দরাজি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, প্রশাসন পরিচালনার ব্যাপারেও অনুরূপ অনুশাসন জারি হবে, কাছারি-আদালতেও তাই, সরকার সম্ভবত আশা পোষণ করবেন, সংবাদপত্রাদি, টেলিভিশন চ্যানেলসমূহ, সেই সঙ্গে সমগ্র সাহিত্যিক সম্প্রদায়, এই নীতি অনুসরণ করে সামাজিক সুস্থিতি ফিরিয়ে আনবেন। |
|
|
|
|
|