নিজস্ব সংবাদদাতা • খয়রাশোল |
বছর দুই আগে গ্রামে ঢোকার মুখে কাঁদরের উপরে সেতু হয়। তখন হাসি ফুটেছিল খয়রাশোলের ছোলাবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে।
অবশ্য সেই হাসি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। এক বছর যেতে না যেতেই গত বর্ষায় সেতুটির দু’দিকে থাকা গার্ডওয়াল ভেঙে যাওয়ায় সেতু সংযোগকারী রাস্তার মাটি ধুয়ে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল।
তাই ছোলাবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দাদের দীর্ঘদিনের দাবি, সেতুটি পাকা করা হোক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছোলাবেড়িয়া গ্রামে প্রায় শ’তিনেক পরিবার বসবাস করে। তবে সেই পরিবারগুলির মধ্যে মাত্র ৩০টি পরিবার জেলায় রয়েছে। বাকি ২৫০-২৭০টি পরিবার রয়েছে খয়রাশোল লাগোয়া ঝাড়খণ্ডে। কাজেই মাত্র ওই কটি পরিবারের জন্য প্রশাসন সেতু তৈরি করতে সহজে রাজি হয়নি বলে দাবি বাসিন্দাদের। শেষ পর্যন্ত গ্রামবাসীদের দাবি মতো খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে ২০১০ সালে সেতুটি তৈরি হয়। |
বাসিন্দারা জানান, পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে তৈরি হওয়া সেতু বর্ষায় গার্ডওয়াল ভেঙে যাওয়ার ফলে সেতু সংযোগকারী রাস্তার মাটি ধুয়ে গিয়েছিল। বাসিন্দারা নিজেরাই মাটি ফেলে চলাচলের অস্থায়ী ব্যবস্থা করে নিলেও ওই সেতু দিয়ে দু’চাকা, চারচাকা গাড়ি চলাচলের জন্য যথেষ্ট বিপজ্জনক। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, প্রায় এক বছর কেটে গেলেও নতুন করে গার্ডওয়াল তৈরির জন্য উদ্যোগী হয়নি প্রশাসন। সামনেই বর্ষা আসছে তার আগে সমস্যা না মিটলে সেতু থাকা বা না থাকা দুই সমান।
বাসিন্দারা জানান, সেতুটি অবশ্য ১০-১২ মিটারের বেশি চওড়া হবে না। খয়রাশোল থেকে নওপাড়া, সগড়ভাঙা, পলাশবুনি হয়ে ছোলাবেড়িয়া গ্রামে যেতে বছরের অন্যান্য সময় অসুবিধা হত না। কিন্তু ছোলাবেড়িয়া কাঁদরে সেতুটি না থাকায় গ্রামটি বর্ষাকালে কার্যত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকত। স্থনীয় বাসিন্দা ধনঞ্জয় মণ্ডল, নিমাই মণ্ডল, শ্যামলী মণ্ডলরা বলেন, “শুধুমাত্র বাবুইজোড় পঞ্চায়েত বাদ দিয়ে ব্লক, সগড়ভঙা পোষ্ট অফিস, নাকড়াকোন্দা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র যেতে এটাই সহজ পথ। অন্তত ৬-৭ কিমি কম ঘুরতে হয়। শুধু ৩০টি পরিবারই নয়, গোটা গ্রামের মানুষের চাষ, হাটবাজার করার জন্য এই পথটি খুব প্রয়োজনীয়।” তাঁদের ক্ষোভ, “কিন্তু সেতু তৈরি হওয়ার পরে সেটি ব্যবহার না করতে পারলে সেটা খুব দুর্ভাগ্যের।” বাসিন্দারা কাজের মান নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।
এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগকে সমর্থন জানিয়ে বাবুইজোড় পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান তাপস ঘোষ বলেন, “অপরিকল্পিত ভাবে সেতুটি তৈরি হওয়ায় এলাকার মানুষ অসুবিধায় পড়েছেন।” খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমের সমীর রায় অবশ্য বলেন, “সেতুটি তুলনায় উঁচু হয়ে যাওয়ায় পাশ থেকে মাটির চাপে দেওয়ালটি ভেঙে গিয়েছে। সেতুটি সংস্কারের পরিকল্পনা আছে। শীঘ্রই সমস্যা মিটবে।” |