গ্রামীণ হাসপাতালে ‘সিক নিউ বর্ন ইউনিট’ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়নাগুড়ি |
চিকিৎসকের সমস্যা না-মিটিয়ে বৃহস্পতিবার ‘সিক নিউ বর্ন স্টেবিলাইজেশন ইউনিট’ চালু হচ্ছে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। একই সঙ্গে চূড়াভাণ্ডার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শুরু হবে দশ শয্যার ইন্ডোর চিকিৎসা পরিষেবা। ওই উদ্যোগে খুশি হলেও উদ্বেগ পিছু ছাড়ছে না ব্লক স্বাস্থ্য কর্তাদের। দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ করা না হলে গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা কতদিন স্বাভাবিক রাখা সম্ভব সম্ভব হবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ময়নাগুড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সন্দীপ বাগ বলেন, “উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যে চলতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসক নেই। বারবার জানিয়ে কোনও লাভ হচ্ছে না। চিকিৎসকরা বাড়তি চাপ নিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। এ ভাবে চলতে থাকলে পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে পড়বে।” সমস্যার কথা স্বীকার করে জলপাইগুড়ির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বপন সরকার বলেন, “ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের সমস্যার কথা জানি। চিকিৎসকদের কাছে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখার জন্য অনুরোধ করেছি। সেই সঙ্গে শূন্যপদ পূরণের চেষ্টাও করছি।” নামে গ্রামীণ হাসপাতাল। নেই শিশু, স্ত্রী রোগ ও মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। ছয়জন চিকিৎসক থাকার কথা হলেও রয়েছেন পাঁচজন। তাঁদের মধ্যে একজনকে আজ, বৃহস্পতিবার চূড়াভাণ্ডার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বদলি করে সেখানে ইণ্ডোর চিকিৎসা পরিষেবা চালু করা হচ্ছে। এ দিন থেকে চারজন চিকিৎসককে ৬০ শয্যার গ্রামীণ হাসপাতাল সামলাতে হবে। ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের বহির্বিভাগে গড়ে ছয়শো রোগী চিকিৎসার জন্য ভিড় করেন। এত দিন পাঁচজন চিকিৎসক দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা করে বহির্বিভাগ সামাল দিতে গিয়ে নাকাল হতে হয়েছে। আরও একজন চিকিৎসক কমে যাওয়ায় পরিষেবা কেমন করে স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হবে তা ভেবে স্বাস্থ্যকর্তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দু’বছরে জেলার মধ্যে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে রেকর্ড সংখ্যক শিশু ভূমিষ্ঠ হয়েছে। ২০১০-২০১১ সালে ২ হাজার ৯৫৮টি শিশু সেখানে জন্মগ্রহণ করে। চলতি বছরেও শিশু জন্ম হার বেড়েছে। হাসপাতালে শিশু জন্মের হার বেড়ে যাওয়ায় ২০১০ সাল থেকে ব্লক স্বাস্থ্যকর্তারা ‘সিক নিউ বর্ন স্টেবিলাইজেশন ইউনিট’ তৈরির পাশাপাশি শিশু ও স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ পাঠানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে আসছেন। অবশেষে প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ করে ইউনিট তৈরি হলেও চিকিৎসক নিয়োগের কোনও ব্যবস্থা হয়নি। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না-এলে কেমন করে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখব সেটাই বুঝতে পারছি না।” এ দিকে স্বাস্থ্যকর্তাদের উদ্বেগের পাশাপাশি বার্নিশ ও চূড়াভাণ্ডার প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে শয্যা চালুর সিদ্ধান্তে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে খুশির আবহ তৈরি হয়েছে। ব্লক তৃণমূল নেতা মনোজ রায় বলেন, “চূড়াভাণ্ডার প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শয্যা চালুর দাবিতে আন্দোলন চলছে। দাবি পূরণ হওয়ায় দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হল।” |