আধঘণ্টা নিষ্প্রদীপ এসএসকেএম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
একে অসহ্য গরম, তার উপরে বিদ্যুৎ নেই। সব মিলিয়ে চরম ভোগান্তিতে রোগীরা। বুধবার সকাল থেকে দফায় দফায় এই ভোগান্তি চলেছে এসএসকেএম হাসপাতালে। বিদ্যুৎ চলে গিয়ে পরিষেবা থমকে যায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আউটডোরেও। ফলে সেখানেও কাউন্টার বন্ধ, রোগীদের দীর্ঘ লাইন। চলে ক্ষোভ-প্রতিবাদ। এ দিকে, এ দিনই দুপুরে পুলিশে চাকরির পরীক্ষা দিতে এসে গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন এক যুবক। পিজিতে নিয়ে আসা হয় তাঁকে। কর্তব্যরত অবস্থায় গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন গোয়েন্দা বিভাগের এক অফিসার এবং এক ট্রাফিককর্মী। |
এসএসকেএমের নিষ্প্রদীপ আউটডোর। বুধবার। — নিজস্ব চিত্র |
মঙ্গলবারই স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছিলেন, অসহ্য গরম থেকে বাঁচতে সাধারণ মানুষের কী করা উচিত, কোন ধরনের খাবার খাওয়া উচিত, কেমন পোশাক পরা উচিত, তা জানাতে চিকিৎসকদের পরামর্শ-সহ প্রচার শুরু করবেন তাঁরা। এ দিন আরও এক ধাপ এগিয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, শুধু পরামর্শ দিয়েই শেষ হবে না, আপাতত স্বাস্থ্যকর্মীরা সাপ্তাহিক ছুটির বাইরে আর কোনও ছুটিও নিতে পারবেন না। তিনি বলেন, “অসহ্য গরমে গোটা রাজ্য জ্বলছে। বহু মানুষ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এখন কর্মীর অভাব হলে পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটবে। তাই পরবর্তী নির্দেশ না যাওয়া পর্যন্ত চিকিৎসক, নার্স এবং প্যারা মেডিক্যাল কর্মীদের ছুটি বাতিল হচ্ছে।”
সিইএসসি জানিয়েছে, এ দিনের বিপর্যয়ে তাদের কোনও দায় নেই। পূর্ত দফতরের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের কর্মীরা জানান, বাইরের তাপমাত্রা অত্যধিক বেড়ে যাওয়াতেই লাইন ট্রিপ করেছে। এ দিন সকাল থেকে দফায় দফায় বিদ্যুৎ চলে যায় এসএসকেএম হাসপাতালে। বিভিন্ন ওয়ার্ড, আউটডোর, এমনকী মেন ওটি কমপ্লেক্সেও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। তখন মেন ওটিতে বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচার চলছিল। আচমকা নিষ্প্রদীপ হয়ে পড়ায় চিকিৎসকেরা কোনওমতে ইমার্জেন্সি লাইট ব্যবহার করে কাজ চালু রাখেন। আধ ঘণ্টা পরে বিদ্যুৎ ফিরলেও কিছুক্ষণ পরে ফের তা চলে যায়। দ্বিতীয় বারে অবশ্য তা মিনিট পাঁচেকের বেশি স্থায়ী হয়নি। আউটডোরে বিদ্যুৎ না থাকায় টিকিট দেওয়া বন্ধ ছিল দীর্ঘক্ষণ। লাইনে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন বহু রোগী। যাঁদের টিকিট হয়ে গিয়েছিল, ঘরে আলো না থাকায় তাঁদেরও পরীক্ষা করতে পারছিলেন না চিকিৎসকেরা। এক সময়ে অধৈর্য্য হয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন বহু রোগী। পরিস্থিতি সামলাতে বেশ কিছু আউটডোরে চিকিৎসক ও নার্সেরা বাইরে টেবিল-চেয়ার পেতে রোগী দেখেন। চিকিৎসকদের কোয়ার্টার্সে এবং নার্সিং সুপারের দফতরে বিদ্যুৎ ছিল না দীর্ঘক্ষণ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বিকেল গড়িয়ে যায়। অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র বলেন, “একে অসহ্য গরম, তার উপরে এই বিপর্যয়ে রোগীদের ভোগান্তি কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছিল। ডাক্তার-নার্সেরা অসীম ধৈর্য্য ধরে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন।” |