তাজা হাওয়া আনতে গম্ভীরকে
অধিনায়ক করে দেওয়া উচিত

টানা আটটা টেস্ট হারার পর ক্রিকেটের ইতিহাসে কোনও অধিনায়ক আজ পর্যন্ত বাঁচেনি। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির নেতৃত্ব এখনও বেঁচে থাকাটা আমার কাছে তাই আশ্চর্যের। কিন্তু তার চেয়েও বেশি আশ্চর্য হলাম দিন কয়েক আগে ধোনির মন্তব্য শুনে। ওর পছন্দের ভারত অধিনায়ক নাকি ও নিজেই! এটা পরিষ্কার, কথাটা ধোনি বলেছে ক্যাপ্টেন্সি হারানোর ভয় থেকে। আগেভাগে নির্বাচকদের ওপর চাপ তৈরি করে রাখছে। যাতে ওকে কেউ অন্তত ফোনেও জিজ্ঞেস করতে না পারে তুমি আটটা টেস্ট টানা হেরেছ, আমরা ভারতের টেস্ট দলের জন্য অন্তত নতুন ক্যাপ্টেন নির্বাচন করব। তুমি কি তার আগেই সরে দাঁড়াবে?
আমার মতে ধোনিকে সটান টেস্ট অধিনায়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত। ওয়ান ডে-তে ক্যাপ্টেন থাকুক। কারণ এখনও ওয়ান ডে বা টি-টোয়েন্টিতে বেশ ভাল করছে। এই দু’টো ফর্ম্যাটে ও দুর্দান্ত ব্যাটসম্যানও। সাধারণত সীমিত ওভারের ম্যাচে ক্যাপ্টেনকে পাঁচ দিনের ম্যাচের মতো চিন্তাভাবনা করতে হয় না। মোটামুটি বাঁধা গতে কাজ চলে যায়। এক জন ব্যাটসম্যান যতই ভাল খেলুক, ৩০-৩৫, কী ৪০ ওভার খেলার সুযোগ পায় ওয়ান ডে-তে। এক জন বোলার যতই ভয়ঙ্কর ফর্মে থাকুক, চার ওভারের বেশি বল করার সুযোগ নেই টি-টোয়েন্টিতে। ফলে সেই ব্যাটসম্যান বা বোলারকে সামলানোর স্ট্র্যাটেজিগুলো খুব নিদিষ্ট, ধরা-বাঁধা। যেখানে ধোনি এখনও দুর্দান্ত।
কিন্তু টেস্টে একটা পার্টনারশিপ দু’দিনও চলতে পারে। বারবার বদলাতে হয় স্ট্র্যাটেজি। এক জন বোলার সারা দিনে ২৫-৩০ ওভার বল করে ত্রাস তৈরি করতে পারে। যেগুলো সামলাতে প্ল্যান ‘এ’ কাজ না করলে প্ল্যান ‘বি’ বা ‘সি’ বের করতে হয়। যেটায় ধোনি খুব বেশি সফল বলে আমার জানা নেই। তা ছাড়া অধিনায়ক হিসেবে ওর সব কিছু পাওয়া হয়ে গিয়েছে। টি-টোয়েন্টি ও ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ, টেস্টে আইসিসি ক্রমপর্যায়ে এক নম্বর হওয়া। আইপিএল আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগও পেয়েছে। হতেই পারে, মনের অবচেতনে একটু হলেও ধোনি তৃপ্ত, নিজেকে সফল দেখার প্রচণ্ড খিদেটা আর নেই ওর।
তা ছাড়া ৫০ বা ২০ ওভারের ম্যাচের চেয়ে টেস্টে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক নেতৃত্বের দরকার হয়। ধোনি যা কোনও কালেই নয়। ‘ক্যাপ্টেন কুল’ মানে কিন্তু নেতৃত্বে ঠান্ডা হাবভাব নয়। ‘ক্যাপ্টেন কুল’ ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজে যে জন্য ‘ক্যাপ্টেন ভুল’ হয়ে দাঁড়িয়েছে বারবার। কিন্তু আমাদের মতো ধোনিও বিলক্ষণ জানে, সামনে প্রায় দেড় বছর ভারতের সমস্ত টেস্ট সিরিজ দেশের মাঠে। সেখানে যে-ই ক্যাপ্টেন থাক না কেন, ভারতের জেতার সম্ভাবনা ৯০ ভাগ।
টেস্ট টিমের ভবিষ্যতের কথা ভাবলে গম্ভীরকে মনে হয় সামনের সিরিজে অধিনায়ক করা ভাল। বিশেষ করে টিমটা যখন একটা পরিবর্তন-অধ্যায়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। নতুন কোনও অধিনায়ক হলে সেই দলের মধ্যে একটা তাজা হাওয়া আসে। রিকি পন্টিংয়ের জায়গায় মাইকেল ক্লার্ক অধিনায়ক হওয়ায় যা অস্ট্রেলিয়া টিমে হয়েছে। গম্ভীর কেকেআরকে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করেছে বলে এটা বলছি না। বরং দিল্লি টিমকে রঞ্জিতে বা দলীপে উত্তরাঞ্চলকে ওর নেতৃত্ব দেওয়া দেখে আমি টেস্টে গম্ভীরের অধিনায়কত্ব সম্পর্কে আশাবাদী। ভীষণ আক্রমণাত্মক ক্যাপ্টেন। আইপিএলে যেটা দেখা গিয়েছে। আর ভারতীয় টেস্ট দলে এখন এমন নেতাই দরকার।
গম্ভীর ‘‘আমি টেস্টে নেতৃত্ব দিতে তৈরি’’ মন্তব্য করে নির্বাচকদের পাশাপাশি ধোনিকেও চাপে ফেলে দিয়েছে। নির্বাচকদের কোহলিকে সহ-অধিনায়ক করে দেওয়ার পিছনে হয়তো স্ট্র্যাটেজি ছিল কোহলি তো তরুণ। এখনও টেস্ট খেলা শিখছে। অভিজ্ঞ হতে সময় লাগবে। ওকে ভাইস ক্যাপ্টেন করা মানে ধোনির ২০১৫ পর্যন্ত নেতা থেকে যাওয়ার রাস্তা প্রায় পরিষ্কার।
কেকেআরের আইপিএল জেতা আর গম্ভীরের সাহসী মন্তব্য যে স্ট্র্যাটেজিতে জোর ধাক্কা মেরেছে। ধোনিও হয়তো সেটা বুঝছে। তাই নিজেকেই নিজে সার্টিফিকেট দিচ্ছে!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.