মরণ-বাঁচন গ্রুপের প্রতিপক্ষ হলেও চমক দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে পর্তুগালের। এ রকমই বলছেন আর্সেনাল ম্যানেজার আর্সেন ওয়েঙ্গার।
ক্লাবের ওয়েবসাইটে তিনি বলেছেন, “পর্তুগালের সেরা অবশ্যই ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। তার সঙ্গে ওদের নানি আছে। আরও ভাল-ভাল ফুটবলার আছে।” এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেন, “সদ্য-সদ্য ওদের পারফরম্যান্স খুব একটা ভাল নয়। তাই ফেভারিটের তকমা ওদের গায়ে নেই। কিন্তু ওরা চমকে দিতে পারে।” যদিও ওয়েঙ্গার স্বীকার করে নিচ্ছেন, নেদারল্যান্ডস বা জার্মানির মতো টুর্নামেন্টের ফেভারিটের সঙ্গে এক গ্রুপে থাকায় রোনাল্ডোদের কাজটা মোটেই খুব সহজ নয়।
সেটা স্বীকার করছেন পর্তুগাল কোচ পাওলো বেন্তো। তাঁর মতে প্রথম ম্যাচটা সব সময় গুরুত্বপূর্ণ। যেখানে নানি-রোনাল্ডোর প্রতিদ্বন্দ্বী জার্মানি। বেন্তো বলছেন, “জার্মানি টিমটার দুর্বলতা হাতে-গোনা। খুব কঠিন ম্যাচ হবে বলেই ধরে রাখছি। সব থেকে সাঙ্ঘাতিক ওদের রক্ষণ থেকে আক্রমণে উঠে আসা।” গ্রুপের তুলনামূলক ভাবে সহজ প্রতিপক্ষ ডেনমার্ককেও হালকা ভাবে নেওয়ার অবকাশ নেই পর্তুগিজ কোচের। যোগ্যতা অর্জন পর্বে ডেনমার্কের ঘরের মাঠে হেরে গ্রুপে দ্বিতীয় হয়েছিলেন রোনাল্ডোরা।
চলতি বছরে তিনটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন রোনাল্ডোরা। জেতেননি একটিও। শেষ ম্যাচে লিসবনে ১-৩ হারতে হয়েছে তুরস্কের কাছে। যারা ইউরো কাপের যোগ্যতাই পায়নি। ম্যাচে পেপে-ব্রুনো আলভেসের স্টপার জুটি হতাশ করেছেন সমর্থকদের। গ্যালারির তীব্র বিদ্রুপ শুনে মাঠ ছেড়েছেন রোনাল্ডো-নানিরা। তবু পতুর্গালের মানুষ স্বপ্ন দেখছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে ঘিরে। নিজের ক্লাবকে লা লিগা চ্যাম্পিয়ন করানোর পিছনে যাঁর অবদান বিশাল। মঙ্গলবার তিনি আবার ঘোষণা করে দিয়েছেন, “রিয়াল মাদ্রিদ থেকেই অবসর নিতে চাই আমি।” স্পেনের ক্লাবটির হয়ে এ বছর তাঁর পারফরম্যান্সও চোখ ধাঁধানো।
|
সম্ভাব্য প্রথম এগারো |
গোলকিপার: পাত্রিসিও (স্পোর্টিং লিসবন)
ডিফেন্ডার: লোপেস (ব্রাগা), পেপে (রিয়াল মাদ্রিদ), আলভেস (জেনিট সেন্টপিটার্সবার্গ), কোয়েন্ত্রাও (রিয়াল মাদ্রিদ)
মিডফিল্ডার: মেইরেলেস (চেলসি), ভেলোসো (জেনোয়া), মোতিনহো (পোর্তো), আলমেইদা (বেসিকতাস), নানি (ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড)
ফরোয়ার্ড: রোনাল্ডো (রিয়াল মাদ্রিদ)
|
বেঞ্চে থাকবেন যাঁরা |
গোলকিপার: এদুয়ার্দো (বেনফিকা), বেতো (ক্লুজ)
ডিফেন্ডার: কোস্তা (ভালেন্সিয়া), রোলান্দো (পোর্তো), পেরিরা (স্পোর্টিং লিসবন)
মিডফিল্ডার: কাস্তোদিও (ব্রাগা), কুয়ারেসমা (বেসিকতাস), মিকায়েল (জারাগোজা), ভিয়ানা (ব্রাগা) ফরোয়ার্ড: ওলিভিয়েরা (বেনফিকা), ভারেলা (পোর্তো), পোস্তিগা (জারাগোজা) |
|
পর্তুগাল এখনও পর্যন্ত বড় পর্যায়ের কোনও ট্রফি জিততে ব্যর্থ। আট বছর আগে ঘরের মাঠে ইউরো ফাইনালে গ্রিসের কাছে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ফিগো-পাওলেতাদের টিমে রোনাল্ডো সেই ফাইনালে খেলেছিলেন উঠতি তারকা হিসাবে। এ বার পরিণত তারকা। কিন্তু কোচ বেন্তো মনে করছেন না রোনাল্ডোর উপর অতিরিক্ত চাপ থাকবে। তাঁর বক্তব্য, “ক্রিশ্চিয়ানো একাই আমাদের গ্রুপ অব ডেথের বাধা উতরে দেবে সে রকম মোটেই নয়।”
পতুর্গালের সাম্প্রতিক কালের সেরা দল ছিল ২০০০ ইউরো কাপে। যেটাকে বলা হয় পর্তুগিজদের সোনালি যুগ। ফিগো, রুই কোস্তা, পাওলেতা, নুনো গোমেসরা চোখ ধাঁধিয়ে দিয়েছিলেন ফুটবল ভক্তদের। সেই দলের সদস্য ছিলেন বর্তমান কোচ। ফ্রান্সের কাছে সেমিফাইনালে হারের দিন রেফারিকে গালাগাল করে লাল কার্ড দেখেছিলেন বেন্তো। এ বার তাঁর ইউরোয় প্রত্যাবর্তন হচ্ছে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে কমবয়সি কোচ হিসাবে।
|
পল-কে মনে আছে? দু’ বছর আগে বিশ্বকাপ ফুটবলের ভবিষ্যৎদ্রষ্টা সেই অক্টোপাসকে? জার্মানির ছ’টা ম্যাচেই মিলে গিয়েছিল জারের মধ্যে থাকা পলের ভবিষ্যদ্বাণী। জার্মানি আর তার প্রতিপক্ষের দুটো পতাকার প্রতিরূপের মধ্যে একটা বেছে নিত পল। এ বার ইউরোয় জার্মানিকে জেতাতে মাঠে নেমে পড়ল ফুটবলার নেলি। একটি মেয়ে হাতি। গোলে শট নিতে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। জার্মানির প্রতি ম্যাচের আগে নেলি পেনাল্টি স্পট থেকে পাশাপাশি সাজানো দুটো গোলে একটা করে শট নেবে। একটি গোল জার্মানির, অন্যটি প্রতিপক্ষের। দুটোতেই গোলকিপার থাকবে। নেলি প্রতিপক্ষের গোলে বল ঢোকাতে পারলেই নাকি জিতবে জার্মানি। পর্তুগালের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচের আগে আজই জার্মানির হোডেনহাগেনের সেরেঙ্গেটি পার্কে নেলির শট হাসি ফুটিয়েছে জার্মান সমর্থকদের মুখে। বল ঢুকেছে পর্তুগালের গোলে! জার্মান গোল রক্ষা করেছেন কিংবদন্তি গোলকিপার সেপ মেয়ার। |