বৃষ্টির দেখা নেই, তীব্র দহনে জেলায় মৃত ৮ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
গরমে অসুস্থ হয়ে দুই মেদিনীপুরে মারা গেলেন আরও কয়েকজন। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরে অন্তত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এ দিন দুপুরে পিরাকাটায় এসেছিলেন ছত্রধর মাহাতো (৪৮) নামে শালবনির রামেশ্বরপুরের এক বাসিন্দা। দুপুরে বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। খানিক পরেই তাঁর মৃত্যু হয়। দুপুরেই বেলপাহাড়ি থানার ওদলচুয়া থেকে এক বৃদ্ধার দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয় এক বিদ্যালয়ের সামনে দেহটি পড়েছিল। গরমে অসুস্থ হয়েই এই বৃদ্ধা প্রাণ হারিয়েছেন বলে অনুমান। মৃতার নাম-পরিচয় জানা যায়নি। ব্লক প্রশাসন প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছে, বৃদ্ধার বাড়ি ঝাড়খণ্ডে। তিনি এক আত্মীয়র বাড়িতে এসেছিলেন। আনন্দপুর থানার বুড়াপাট পাঁচখুরিতেও এক মহিলার মৃত্যু হয়েছে। মৃতার নাম ছবি পাখর (৫৮)। দুপুরে চাষের কাজে মাঠে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে এসে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে মারা যান। মঙ্গলবার দুপুরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন পার্থসারথি দিবাকর লা (৫৩) নামে এক ব্যক্তি। পার্থসারথিবাবু একটি রাস্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের আধিকারিক। শালবনি থানার দেবগ্রাম শাখায় কর্মরত ছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। গরমে অসুস্থ হয়ে মঙ্গলবার রাতে খড়্গপুর রেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন প্রতিভা চক্রবর্তী (৬৭)। বাড়ি খড়্গপুরের সাঁজোয়ালে। গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার বিকালে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে দাঁতন রেল স্টেশনে। |
|
বিকেলে আকাশে মেঘ করলেও দেখা মেলেনি বৃষ্টির। ছবি: কিংশুক আইচ। |
এ দিন বিকালে টিকিট কাউন্টারের সামনে তাঁর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। খড়্গপুর রেলওয়ে থানার পুলিশ রাতে দেহটি উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে প্রাথমিকভাবে অনুমান গরমেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দুপুরে বাড়ি থেকে খাকুড়দা বাসস্ট্যাণ্ডে যাচ্ছিলেন বেলদা থানা এলাকার দিঘা গ্রামের বাসিন্দা চরণ সিংহ (৬০)। পথে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে দাঁতন-২ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গরমে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েকজন বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে ১২ জন ভর্তি রয়েছেন। খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ২ জন ভর্তি। বিভিন্ন ব্লক হাসপাতালেও বেশ কয়েকজন ভর্তি হয়েছেন। পরিস্থিতি দেখে জেলার বিভিন্ন উপ- স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ওআরএস মজুত করে রাখার কথা জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। সেই সঙ্গে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সচেতন করার কথাও বলা হয়েছে। জানানো হয়েছে, এই সময় সকলে যেন হালকা পোশাক পরেন। রোদে না বেরোন। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সবিতেন্দ্র পাত্র বলেন,“ বিভিন্ন উপ- স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ওআরএস মজুত করে রাখা হয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের তা দেওয়া হচ্ছে।” গরমে কারও মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের তরফ থেকে দাবি করা হলে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির দেহ ময়নাতদন্ত করার জন্য ইতিমধ্যে মহকুমাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বুধবার মেদিনীপুরের তাপমাত্রা তুলনায় কিছুটা কম ছিল। মেদিনীপুর কলেজের এন সি রাণা আকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র সূত্রে খবর, এ দিন মেদিনীপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন ২৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল থেকেই শহর ও শহরতলিতে তাপপ্রবাহ চলতে থাকে। বিকেলের পর অবশ্য আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন হয়। মেঘ করলেও অবশ্য বৃষ্টি হয়নি। |
|