এয়ার ইন্ডিয়ার উড়ানে টিকিট-বিভ্রাটে ওই সংস্থার ম্যানেজার এবং এক আধিকারিকের বিরুদ্ধে পুলিশে ‘প্রতারণা ও ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ দায়ের করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। ওই অভিযোগের প্রতিলিপি তিনি পাঠিয়েছেন রাজ্যসভার সেক্রেটারি জেনারেল এবং ‘পার্লামেন্টারি কমিটি অন পাবলিক গ্রিভান্স’কেও। ওই কমিটির হয়েই মঙ্গলবার ‘স্টাডি-ট্যুরে’ কলকাতা থেকে গুয়াহাটি যাওয়ার কথা ছিল সুখেন্দুবাবুর। যদিও তিনি সেই সফর বাতিল করেছেন।
|
সুখেন্দুশেখর রায় |
রাজ্যসভার তরফে সুখেন্দুবাবুকে বলা হয়েছিল, ব্যক্তিগত এজেন্ট দিয়ে বিমানের টিকিট কেটে নিতে। এজেন্ট গত ২৯ মে এয়ার ইন্ডিয়ার এগজিকিউটিভ ক্লাসের (‘জে’ ক্লাস) ‘কনফার্মড’ টিকিট এনে দেন সুখেন্দুবাবুকে। কিন্তু সোমবার রাতে হঠাৎই সেই এজেন্টের ফোনে সাংসদ জানতে পারেন, ৫ জুনের গুয়াহাটিগামী উড়ানের ‘জে’ ক্লাসে তাঁর নাম নেই। নাম রয়েছে ইকনমি (‘ওয়াই’ ক্লাস)-এ। আসন নম্বর: ৪-এ। ‘বিস্মিত’ সুখেন্দুবাবু এর পরেই সোমবার রাত ১১টা নাগাদ এয়ার ইন্ডিয়ার ম্যানেজার গৌতম সাহাকে ফোন করেন বলে বিমানবন্দর সূত্রের খবর। হাতে ‘জে’ ক্লাসের কনফার্মড টিকিট থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে ওয়াই ক্লাসে তাঁর আসন বরাদ্দ হল, তা জানতে চান সাংসদ। গৌতমবাবু সুখেন্দুবাবুকে জানান, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। অন্য এক আধিকারিক তাঁকে ফোন করে বিষয়টি নিয়ে কথা বলবেন। ওই রাতে বিমানবন্দরে কর্মরত আরতি ঘোষ নামে এয়ার ইন্ডিয়ার এক আধিকারিক ফোন করেন সাংসদকে। তাঁকে এগজিকিউটিভ ক্লাসে আসন দেওয়া যাবে না বলে ওই আধিকারিক জানান। তার পরেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন সাংসদ।
টিকিট-বিভ্রাটের ব্যাপারে প্রকাশ্যে কিছু বলতে চাননি সুখেন্দুবাবু। তবে ঘনিষ্ঠমহলে তাঁর প্রশ্ন, টিকিট ‘কনফার্মড’ থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে আসন অদল বদল হল? এয়ার ইন্ডিয়া তা আগেভাগে জানাবে না কেন? এমন যাতে আর না-হয়, তার বিহিতের জন্যই সুখেন্দুবাবু রাজ্যসভা ও সংসদীয় কমিটিকেও অভিযোগ জানিয়েছেন।
পুলিশকে সুখেন্দুবাবু জানান, তাঁর এজেন্ট তাঁকে ‘এগজিকিউটিভ’ শ্রেণির টিকিট দিলেও গৌতমবাবু এবং আরতিদেবী তা না মেনে তাঁকে সাধারণ শ্রেণিতে যাওয়ার কথা বলেন। সুখেন্দুবাবুর ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতার বক্তব্য, “কোন ক্লাসে যাওয়া, তা বড় কথা নয়। যাত্রী সাংসদ না আমজনতা, তা-ও বিবেচ্য নয়। আসল কথা হল, কেন কারও সঙ্গেই এমন ঘটবে এবং সংশ্লিষ্ট যাত্রীকে কেন তা জানানো হবে না?”
এয়ার ইন্ডিয়ার অবশ্য দাবি, গুয়াহাটিগামী এয়ারবাস ৩১৯-এর এগজিকিউটিভ ক্লাসের জন্য যে সাত জন সাংসদের তালিকা কেন্দ্র পাঠিয়েছিল, তাতে সুখেন্দুবাবুর নাম ছিল না। এর আগে ৩৩ জন সাংসদের মধ্যে ২৫ জনের জন্য এগজিকিউটিভ ও ৭ জনের জন্য ইকনমি ক্লাসের আসনের আবেদন করেছিল কেন্দ্র। বিমানসংস্থা জানায়, ওই উড়ানে ৮টি এগজিকিউটিভ আসন রয়েছে। যার একটিতে বাধ্যতামূলক ভাবে এয়ার মার্শাল যাবেন। ফলে সাতটির বেশি এগজিকিউটিভ আসন নেই। এর পরেই কেন্দ্র সাত জনের নামের তালিকা পাঠায় বলে এয়ার ইন্ডিয়ার দাবি। |