মাসুল বাড়িয়ে ঘুরপথে আয়বৃদ্ধি রেলের
মজনতার গায়ে আঁচ লাগবে বলে নেত্রীর আদেশ শিরোধার্য করে বর্ধিত যাত্রীভাড়া প্রত্যাহার করেছিলেন রেলমন্ত্রী মুকুল রায়। কিন্তু বুধবার পার্সেল ও লাগেজ ভাড়া ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে তিনি সেই আমজনতারই যন্ত্রণাবৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করে দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
রেল বাজেটের ঠিক আগে পণ্য পরিবহণ মাসুল এক প্রস্ত বাড়িয়েছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদী। তার পর আজ পার্সেল ও লাগেজ ভাড়া বাড়ার ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আরও বাড়বে বলেই সংশ্লিষ্ট মহলের অভিমত। যদিও রেলমন্ত্রীর বক্তব্য, “এই ধরনের মাসুল সময় সময় বেড়েই থাকে। তবে সাধারণ মানুষের উপরে এর প্রভাব সামান্যই পড়বে।”
সাধারণ মানুষ রুষ্ট হবেন এই আশঙ্কায় গত দশ বছরে কোনও রেলমন্ত্রীই যাত্রীভাড়ায় হাত দেননি। কিন্তু তার ফলে দিনের পর দিন রুগ্ণ হয়েছে রেলের আর্থিক স্বাস্থ্য। কারণ রেলের আয় বাড়েনি, অথচ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে খরচের বোঝা।
এই পরিস্থিতিতে ব্যতিক্রমী হয়ে চলতি বাজেটে সব শ্রেণিতে যাত্রীভাড়া বাড়ানোর সাহস দেখিয়েছিলেন দীনেশ। যে জন্য দলনেত্রীর রোষের মুখে পড়ে মন্ত্রিত্ব খোয়াতে হয় তাঁকে। তার পর মুকুল রেলমন্ত্রী হয়েই বাতানুকূল প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি বাদে অন্য সব স্তরে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেন। ফলে চলতি আর্থিক বছরে দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা বাড়তি আয় হারায় রেল। তখনই মুকুল জানিয়েছিলেন, অন্য সূত্র থেকে এই অর্থ রোজগার করা হবে।
সেই বাড়তি আয়ের লক্ষ্যেই এ বার পার্সেল ও লাগেজ মাসুল বাড়ানো হল বলে মনে করা হচ্ছে। এই পথে চলতি আর্থিক বছরে ৩৭০ কোটি টাকা বাড়তি আয় হবে বলে রেল সূত্রে খবর। কিন্তু ঘুরপথে আয়বৃদ্ধির এই চেষ্টাকে মোটেই ভাল চোখে দেখছেন না বিশেষজ্ঞেরা। তাঁদের অনেকেরই বক্তব্য, যাত্রীভাড়া বাড়লে যাঁরা ট্রেনে চাপেন শুধু তাঁদেরই বাড়তি অর্থ গুনতে হয়। কিন্তু পণ্য মাসুল বাড়লে তার প্রভাব পড়ে সমাজের সর্বস্তরে। রেল সূত্রে অবশ্য এর পাল্টা বলা হচ্ছে, যাত্রীভাড়া বাড়লে এক জন যাত্রীর উপরে যতটা চাপ পড়ে, পণ্য মাসুল বাড়লে এক জন নাগরিকের উপরে চাপ পড়ে তার তুলনায় নগণ্য। কারণ বৃদ্ধিটা তখন অনেকের মধ্যে ভাগ হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে।
পার্সেল ও লাগেজ মাসুল বৃদ্ধির কারণ হিসেবে রেল সূত্রে বলা হচ্ছে, গত ছ’বছরে সড়ক পরিবহণের খরচ বাড়লেও রেলে সেই খরচ বিশেষ বাড়েনি। তাই বাজেটের আগেই পণ্য মাসুল ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়। তার পর ব্যবসায়ীদের একটি বড় অংশ মালগাড়ির বদলে পার্সেল ভ্যানে জিনিসপত্র পাঠাতে থাকেন। কারণ, পার্সেল ভ্যানের মাসুল বাড়ানো হয়নি। এ বার পণ্যমাসুল ও পার্সেলের ভাড়ার মধ্যে সমন্বয় আনা হল বলে রেল মন্ত্রক সূত্রে দাবি।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.