সরকারি দফতরে ভাঙচুর, পুলিশের উপরে আক্রমণ, গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন ধরানোর অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতদের বুধবার বোলপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক ১৪ দিন জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দেন। এ দিকে, অভিযুক্তদের ধরতে গিয়ে মধ্যরাতে বাড়িতে ঢুকে মহিলাদের হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে বুধবার বোলপুর থানা ঘণ্টা দু’য়েক ঘেরাও করে রাখেন হাটতলা ও মিস্ত্রিপাড়ার মহিলারা। জেলা পুলিশ সুপারের আশ্বাসে তাঁরা ঘেরাও এবং অবস্থান -বিক্ষোভ তুলে নেন।
প্রসঙ্গত, তোলা দিতে রাজি না হওয়ায় হকার স্বপন দাসকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে বোলপুর আরপিএফের এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় বোলপুর স্টেশন চত্বর। ঘণ্টাখানেক ধরে ওই হকারের নিথর দেহ স্টেশনে পড়ে থাকতে দেখে উত্তেজিত জনতা আরপিএফ ও জিআরপি-র অফিসে ভাঙচুরও চালান। অভিযুক্ত আরপিএফ এএসআই একে চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আটকে রাখে ডাউন শান্তিনিকেতন এক্সপ্রেসকে।
ঘটনাস্থলে এসে জনতার ক্ষোভের মুখে পড়েন বোলপুর থানার এএসআই মানব চক্রবর্তীও। মারধর করে তাঁর মোটরবাইকে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তপ্ত জনতা। অভিযুক্ত আরপিএফ কর্মীকে কড়া শাস্তি দেওয়া এবং ক্ষতিপূরণের দাবিতে মঙ্গলবার সিউড়িতে জেলাশাসকের দফতরের সামনে সারা বাংলা হকার ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি একটি পথসভা করে। |
পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “ওই দিন সরকারি দফতরে ভাঙচুর, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া, ও পুলিশের উপরে আক্রমণ করার জড়িত অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” সরকারি আইনজীবী ফিরোজকুমার পাল জানান, ধৃতদের জামিন আবেদন নাকজ করে দিয়ে বিচারক জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২০ জুন তাদের ফের আদালতে হাজির করানো হবে। এ দিকে, আরপিএফ-এর ডিআইজি (ইস্টার্ন রেল) জিএম ঈশ্বর রাও বলেন, “অভিযুক্ত এএসআইকে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে দু’জন অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়ে গিয়েছে এবং ৩০৪ ধারায় মামলা করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্য দিকে, স্থানীয় বাসিন্দা বেবি সিংহ, কবিতা খাতুন, ময়না বিবিদের অভিযোগ, “মহিলা পুলিশকর্মী থাকা সত্ত্বেও পুরুষ পুলিশকর্মীরা আমাদের হেনস্থা করেছে। বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তাই ওই সব পুলিশকর্মীদের শাস্তির দাবিতে এ দিন থানা ঘেরাও করা হয়েছে।” পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত, তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, হকার অ্যাসোসিয়েশনের নেতা অশোক সাহানী-সহ বিভিন্ন সংগঠনের লোকেরা ঘটনার প্রয়োজনীয় তদন্তে থানায় দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেন। পুলিশ সুপার হৃষিকেশ মিনা বলেন, “লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |