গরমে নামছে জলস্তর, ঘেরাও-বিক্ষোভ
থায় আছে, সকাল দেখলে বোঝা যায় সারাদিন কেমন যাবে। সারাদিন ভাল না মন্দ যাবে, তা বোঝা যায় কি না জানা নেই। কিন্তু সূর্যের আলো গায়ে পড়লে বোঝা যায় দিনের বাকি সময়টা তাপ কেমন বাড়বে।
সকাল ৮টা বাজতেই রোদের তাপ গায়ে লাগছিল। বেলা ১১টা বাজলেই সেই তাপে গা যেন পুড়ে যাচ্ছে। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিকের ফল বেরিয়েছে। স্কুলে স্কুলে বা কলেজে কলেজে ছাত্রছাত্রীরা ফর্ম তোলার জন্য দৌড়চ্ছে। রোদে গলদঘর্ম অবস্থায় স্কুল বা কলেজ চত্বরে একটু ছায়ার খোঁজে মোটরবাইক, সাইকেল রেখে দাঁড়িয়ে পড়ছেন কেউ কেউ। অসহ্য গরম পড়েছে বলেই সকলেই বিরক্ত হয়ে যাচ্ছেন। কোথাও আবার কোনও কোনও কলেজে পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার্থী থেকে পরীক্ষক সকলেই গরমের দাপটে হাঁসফাঁস অবস্থা। তবে দুবরাজপুর, রাজনগর-সহ জেলার কিছু কিছু এলাকার কলেজে দুপুর ১২টা-১টার মধ্যে ফর্ম দেওয়া শেষ হয়ে যায়। কোথাও আবার এখনও ফর্ম দেওয়া শুরু হয়নি। এত গরমের মধ্যে যাঁরা খুব প্রয়োজনে বাইরে বেরচ্ছেন, তাঁরা বিরক্তির সুরে বললেন, পারদ যেন চড়ছে। বিকেলে আকাশের দিকে তাকালে একটু মেঘের দেখা পাওয়া যায়। কিন্তু তাতে বৃষ্টি হওয়ার মতো নয়। উল্টে মেঘের কারণে গুমট ভাব আরও বাড়ে। বুধবার সন্ধ্যার দিকে বোলপুর, রামপুরহাট-সহ জেলার কিছু জায়গায় অল্প কিছুক্ষণ বৃষ্টি হয়। তাতে সাময়িক স্বস্তি এলেও অস্বস্তি কমেনি।
শ্রীনিকেতন সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পারদ চড়লেও জেলায় লোডিশেডিংয়ের মাত্রা কিছু হলেও কমেছে। তবে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। মুরারইয়ের রাজগ্রাম, রামপুরহাটের মাসড়া, নারায়ণপুর, কুশুম্বা, সিউড়ি প্রভৃতি এলাকায় জলস্তর নেমে গিয়েছে। এলাকার মানুষ পঞ্চায়েত থেকে পঞ্চায়েত সমিতি এমন কী পুরসভায় জলের সমস্যা মেটানোর জন্য আবেদন জানাচ্ছেন। কোথাও জল না পেয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ, ভাঙচুরও হচ্ছে। সম্প্রতি নলকূপ সংস্কারকে কেন্দ্র করে নলহাটি থানার হরিদাসপুর পঞ্চায়েতে জলের ট্যাঙ্ক ভাঙচুর হয়েছিল। জলের দাবিতে বুধবার সিউড়ির ১ নম্বর ওয়ার্ডের একেরপল্লির মহিলা কাউন্সিলর অনিতা কাহারকে ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখেন এলাকার বাসিন্দারা। যদিও কাউন্সিলর তাঁর জামাইবাবুকে মারধর করা হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন। সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় বলেন, “সিউড়িতে সার্বিক ভাবে জলের সমস্যা আছে। এটা নতুন কিছু নয়। তার পরে পাম্প পুড়ে যাওয়ায় পরিষেবা আরও ব্যহত হয়েছে। এ সব জেনেও ওই ওয়ার্ডের কিছু বাসিন্দা যে কাজ করেছেন তা কখনও কাম্য নয়।”
এ দিনই পানীয় জলের সঙ্কট মেটাতে অবিলম্বে বোলপুর মহকুমাশাসকের হস্তক্ষেপের দাবি জানান পুরসভার ১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাজি রোড, উত্তর ও দক্ষিণ মহল্লা, বিহারিদত্তলাল, বাসন্তীতলা প্রভৃতি এলাকার বাসিন্দারা। শৈলেন্দ্রকুমার মিশ্র, অভিষেক কাহান, অশোককুমার দে’র ক্ষোভ, “বেশ কয়েকদিন ধরে পানীয় জলের সমস্যা দেখা দিয়েছে। সমস্যার কথা পুরসভায় জানানো হয়েছিল। কিন্তু আশু সমস্যা সমাধানের জন্য মহকুমাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছি।” সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়ে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবাশিস বীরবংশী বলেন, “ভূগর্ভস্থ জলস্তর নীচে নেমে গিয়েছে বলে শুনেছি। সাময়িক জল যোগানে সমস্যা আছে। বিকল্প ব্যবস্থার জন্য পুরপ্রধানকে জানিয়েছি।” এ দিকে, গরমের কারণে ব্যবসাও মার খাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান, ১০টার পর থেকে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। দোকান খোলা থাকলেও ক্রেতা নেই।
জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, “বিডিও থেকে পঞ্চায়েত প্রধান সকলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, কোথাও জলের সমস্যা দেখা দিলে বিকল্প হিসেবে ট্যাঙ্কে করে ওই জায়গায় জল পৌঁছে দিতে হবে।” জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক আশিসকুমার মল্লিক বলেন, “স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য সচেতনতা বাড়াতে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.