দেশব্যাপী মন্দা। চাকরির বাজারও তথৈবচ। কিন্তু তাতে কী? সাধ্য না থাকলেও সাধ তো রয়েছে। তাই ‘না বলিয়া পরের দ্রব্য হরণ’ বা সোজা ভাষায় ‘চুরির’ পথই বেছে নিচ্ছে ব্রিটেনের মধ্যবিত্ত সমাজের একাংশ। এখানকার একটি অপরাধ-বিরোধী সংস্থার রেকর্ড থেকে সম্প্রতি এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
ব্রিটেনের সবচেয়ে নামীদামি দোকান থেকে একের পর এক জিনিস হাতসাফাই করছেন এক দল খরিদ্দার। পোশাকি ভাষায় ‘শপ লিফটিং’। দোকানে তাঁরা ঢুকছেন সাধারণ ক্রেতা হিসেবেই। সাজানো নানা রকম পসরা দেখতে দেখতে হয়তো টুক করে একটা কিছু তুলে নিচ্ছেন নিজের ব্যাগটিতে। তবে, সকলেই যে খুব সাফল্যের সঙ্গে হাতসাফাই করতে পারছেন তেমনটাও নয়। হাতেনাতে ধরা পড়েছেন অনেকেই। এবং এই ব্যর্থতার মূল কারণ, এঁরা কেউই পেশাদার চোর নন। বরং অধিকাংশই ব্রিটেনের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজের প্রতিনিধি। অপরাধ-বিরোধী সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে, এঁদের একাংশ এক সময়ে এই অভিজাত দোকানগুলির নিয়মিত ক্রেতাও ছিলেন। কিন্তু মন্দার ঠেলায় অনেকেই চাকরি খুইয়েছেন। ফলে ক্রয়ক্ষমতা তলানিতে এসে ঠেকায় এই পথ বেছে নিয়েছেন তাঁরা।
অপরাধ-বিরোধী সংস্থার মুখপাত্র, গ্রাহাম কলিন্স জানালেন আরও একটি তথ্য। এই অপরাধে ধৃতদের অধিকাংশই মাঝবয়সী মহিলা। এবং মূলত প্রসাধনী এবং সুগন্ধীদ্রব্যের দিকেই তাঁদের বিশেষ নজর। তাই এই ধরনের দোকানেই ‘শপ লিফটিং’-এর ঘটনা বেশি ঘটছে। এক দিকে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের রাজত্বের ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে গোটা ব্রিটেন খুশিতে মাতোয়ারা। রাজকীয় অনুষ্ঠানে খরচ হচ্ছে বিপুল অর্থ। অন্য দিকে অর্থাভাবের সৌজন্যে ব্রিটেনের মধ্যবিত্ত সমাজের এই অবক্ষয়ের ছবি। দুই ব্রিটেনকে কোনও ভাবেই মেলাতে পারছেন না কলিন্সরা।
কেন এই রকম ঘটনা ঘটছে সে নিয়ে খুব নিশ্চিত নন কলিন্স। তাঁর মতে, হয়তো মুহূর্তের লোভে বা পরিকল্পিত ভাবেই চুরি করছেন তাঁরা। তবে, চুরি ঠেকাতে ইতিমধ্যেই চেষ্টা শুরু করেছে সংস্থাটি। এই ধরনের দোষীদের যাবতীয় পরিচয় তাঁরা তুলে দিচ্ছেন নিজেদের ওয়েবসাইটে। যাতে অন্তত সামাজিক অসম্মানের ভয়ে কেউ এই অপরাধ করার কথা না ভাবেন।
সংখ্যাটা তবুও বেড়েই চলেছে। |