হেরিটেজ মিউজিয়ম
ছবি: সমিত ঘোষ
ভারতে প্রথম মিউজিয়ম স্থাপিত হয় ১৮১৪-তে। ঐতিহাসিক বস্তু সংরক্ষণের জন্য আইন প্রণয়ন করার বিষয়ে তৎকালীন গভর্নর জেনারেল ও ভাইসরয় লর্ড কার্জনের উদ্যোগ ছিল বিশেষ উল্লেখযোগ্য। ১৯০৪-এ তাঁরই আগ্রহে ঐতিহাসিক ‘অ্যানসেন্ট মনুমেন্টস অ্যাক্ট’ পাশ হয়েছিল। প্রাক স্বাধীনতা পর্বে বাংলার অন্যান্য অংশের মতো উত্তরবঙ্গেও বেশ কিছু মানুষ ইতিহাস সংগ্রহ ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছিলেন। এদের মধ্যে অন্যতম ঐতিহাসিক অক্ষয়কুমার মৈত্র। তাঁর উদ্যোগে এবং দিঘাপতিয়ার কুমার শরৎকুমার রায়ের সহায়তায় তৈরি হয়েছিল ‘বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি ও সংগ্রহশালা’। বাংলা ভাগের পর এ পারের সংগ্রহগুলির সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ১৯৬৫-তে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিনয়েন্দ্রনাথ দাশগুপ্তের উদ্যোগে একটি সংগ্রহশালা স্থাপিত হয়। এর নামকরণ হয় অক্ষয়কুমার মৈত্রর নামে। পরবর্তীতে নাম সামান্য পরিবর্তন করে হয় ‘অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় হেরিটেজ মিউজিয়ম’। সংযোজিত অংশটি ‘রাজারাম কালেকশন’। এটি মালদহের শ্রী শান্তিপ্রিয় রায়চৌধুরীর ব্যক্তিগত সংগ্রহ। মিউজিয়ম গ্যালারিতে রয়েছে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বের ছবি। কষ্টি পাথর, বেলে পাথরের তৈরি পাল-সেন যুগের বিষ্ণু, সূর্য, মনসা, দুর্গা ও অষ্টধাতুর মূর্তি। আছে দারু নির্মিত মুখোশ, দোতরা, সারেঙ্গি ইত্যাদি লোকশিল্প, তুলট ও তালপাতার পুঁথি, টোরাকোটার সংগ্রহ, মুদ্রা এবং অন্যান্য দলিল-দস্তাবেজ, পত্রপত্রিকা, সংবাদপত্র ও অন্যান্য পুরাবস্তুর সংগ্রহ। মিউজিয়মটি উত্তরবঙ্গের গর্ব।

টুসু মেলা
মালদা জেলার বামনগোলা থানার ছাইতনতলা গ্রামে টাঙ্গননদীর পাড়ে ফি-বছর বসে টুসুদেবীর প্রাচীন উৎসব ও মেলা। মেলার বয়স প্রায় অর্ধশতাব্দী। স্থানীয় বাসিন্দা এবং উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে জানা যায় যে, টুসু কোনও আর্য দেবী নন। টুসু আসলে মাহাতো সম্প্রদায়ের এক কন্যা। কিন্তু দেবীর মর্যাদায় পূজিত হয়ে আসছেন।
শোনা যায়, মাহাতো সম্প্রদায়ের সুন্দরী মেয়ে টুসুকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন এক রাজা। তিনি ছিলেন ভিন সম্প্রদায়ের। এই কারণেই টুসু ও তাঁর অভিভাবকরা এই বিয়েতে মত দেননি। রাজা তাদের কিছু দিন সময় দেন প্রস্তাবটি ভেবে দেখার জন্য। কিন্তু টুসু সরাসরি নাকচ করে দেন সে প্রস্তাব। টুসু এ-ও বুঝেছিলেন, এ বার রাজার রোষ নেমে আসবে তাঁর ও মাহাতো সম্প্রদায়ের ওপর। নিজের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হবে সঙ্গে বিপন্ন হবে নিজ সম্প্রদায়। বাঁচার জন্য টুসু আত্ম-বিসর্জনের পথ বেছে নেন।
পৌষ সংক্রান্তির দিনে টাঙ্গননদীর জলে ঝাঁপ দিয়ে তিনি হারিয়ে যায় চিরদিনের মতো। নারীত্বের সম্ভ্রম এবং সম্প্রদায়ের বিপন্নতা রোধ করতে আত্মত্যাগের কাহিনি তাঁকে মানবী থেকে দেবী করে তুলেছে। তাঁর আত্মত্যাগের পর থেকে প্রতি বছর টুসুকে স্মরণ করা হয় পৌষ সংক্রান্তির দিনটিতে।  টুসুর একটি মূর্তি গড়া হয়। এলাকার মাহাতো সম্প্রদায়ের মহিলারা মাটির হাঁড়ি মাথায় নিয়ে শোভাযাত্রা করে টুসুকে নিয়ে লোকগান গাইতে গাইতে নদীর ধারে মূর্তির কাছে যায়। হাঁড়িতে থাকে ফুল। পৌষ মাসের প্রথম দিন থেকে প্রতি দিন মেয়েরা একটি নতুন হাঁড়িতে টুসুর উদ্দেশ্যে এই ফুল নিবেদন করে রাখে। পুজো শেষ হয় সংক্রান্তির দিন। সে দিন গ্রামের মেয়েরা তাদের ফুলের হাঁড়িগুলো মেলা প্রাঙ্গণে টুসুর মূর্তির সামনে নিয়ে আসে। এর পর শুরু হয় লোকাচার ও সঙ্গীতাঞ্জলি। তার পর শোভাযাত্রা সহ গান গাইতে গাইতে নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয় হাঁড়িগুলি। মেলাতে টুসুদেবীকে নিয়ে বাঁধা গানের প্রতিযোগিতা বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ।

খুদে বিজ্ঞানী
ওরা যেন সব খুদে বিজ্ঞানী। পরিবেশ দূষণ, জল সংকট, জল সংরক্ষণ, বৃষ্টির জল ধরে রাখা ইত্যাদি নিয়ে ভীষণ চিন্তিত। কখনও ওদের ভাবিয়ে তুলছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং, কখনও ওজন স্তরে ছিদ্র হওয়ার বিষয়টি। ওরা মুনমুন, টোটন, স্নিগ্ধা, অন্তরা, মৌমিতা, আমিনুল, বিজয়, চন্দন, ঝুমা, পিংকি প্রমুখ। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা শিক্ষা দফতরের আয়োজনে সম্প্রতি বিভিন্ন ক্লাসের এই সব ছাত্র-ছাত্রীদের তৈরি ১৩০টি মডেল নিয়ে হয়ে গেল ‘সায়েন্স মডেল এক্সজিবিশন অ্যান্ড কম্পিটিশন’। পরিবেশের নানা সমস্যা নিয়ে কী ভাবছে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম? সেটাই উঠে এল এই অনুষ্ঠানে। যেমন, ভাঙ্গুরিয়া হাই স্কুলের বিজয় কিংবা চন্দন জলদূষণ এবং জলসংরক্ষণের বিষয়টি নিয়ে শুধু চিন্তিতই নয়, মাথা খাটিয়ে বের করার চেষ্টা করেছে এর সমাধানের পথ। অয্যোধা কে ডি বিদ্যানিকেতনের মুনমুন বর্মণ এবং টোটন দেবনাথ সৌরউনুন এবং সৌরবিদ্যুৎ নিয়ে নতুন নতুন ভাবনার দিশা দিয়েছে। খাদিমপুর গার্লস স্কুলের মৌমিতা বন্যার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলায় বন্যা প্রতিরোধের পথ বের করার চেষ্টা করেছে। দক্ষিণ দিনাজপুরে প্রচুর পরিমাণে চালকল রয়েছে। কবিতীর্থ উচ্চবিদ্যালয়ের রীনা সোরেন চাল কলের ধোয়া থেকে কী ভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে বিভিন্ন কাজে লাগানো যায় তার উপায় বের করেছে।

ভ্রাম্যমাণ চা
দুলালের এক কাপ চা খেতে ভোরবেলা অপেক্ষায় থাকেন দিনহাটা বাজারের দোকানদাররা। কাজের ফাঁকে ক্লান্তি দূর করতে চা নিয়ে হাজির হন ঝুড়িপাড়ার দুলাল বর্মণ। ভ্রাম্যমান চা বিক্রেতা। একটি সাইকেলে দুটি ফ্লাক্সে চা নিয়ে হাটে-বাজারে তিনি চা ফেরি করেন। ঝড় বা রোদবৃষ্টি, একই নিয়মে দুলাল বাড়ি থেকে চা বানিয়ে ক্রেতাদের জন্য হাজির হন বাজারে। সাইকেলের ভ্রাম্যমান চা জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে এই অঞ্চলে।


উত্তরের কড়চা
এ বি পি প্রাঃ লিমিটেড ১৩৬/৮৯ চার্চ রোড শিলিগুড়ি ৭৩৪৪০১



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.