কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং মালদহ মেডিক্যাল কলেজে চলতি শিক্ষাবর্ষে আর মেডিক্যাল ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হতে পারবেন না। কারণ, পরিকাঠামো যথাযথ না-থাকায় মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এমসিআই) ওই দু’টি মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন এ বার আর নবীকরণ করেনি। এমসিআইয়ের সচিব পি প্রসন্নরাজ এই সিদ্ধান্তের কথা গত ২৬ মে রাজ্যের স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছেন।
গত বছর থেকেই কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র ভর্তি শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে মুর্শিদাবাদেও একটি নতুন মেডিক্যাল কলেজ চালু করার পরিকল্পনা ছিল রাজ্য সরকারের। ওই কলেজটি গত বছর এমসিআই-এর অনুমোদন পায়নি। এ বারেও তারা সেই অনুমোদন পেল না। দু’টি মেডিকাল কলেজের অনুমোদন স্থগিত হয়ে যাওয়ায় রাজ্যে এ বার এক ধাক্কায় মেডিক্যালে ২০০টি আসন কমে গেল। ওই দু’টি মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র ভর্তি করা যাবে ধরে নিয়েই এগিয়েছিল রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়।
এমসিআই এ বার সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদন নবীকরণ করল না কেন? এমসিআই সূত্রে জানানো হয়েছে, সেখানে প্রস্তাবিত ৫০০ শয্যার হাসপাতাল তৈরি হয়নি। প্যাথলজিক্যাল ক্লিনিক, আলট্রাসোনোগ্রাফি কেন্দ্রও কাজ শুরু করেনি। দ্বিতীয় বর্ষে যে-সব বিষয় পড়ানো হয়, সেই কমিউনিটি মেডিসিন, মাইক্রোবায়োলজি, ফার্মাকোলজি, ফরেন্সিক মেডিসিনের মতো বিভাগ তৈরির কাজ এখনও শেষ হয়নি। গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে যখন এমসিআই-কর্তারা পরিদর্শনে এসেছিলেন, সেই সময় পার্শ্ববর্তী কামারহাটি ইএসআই হাসপাতালের শয্যাকে সাগর দত্ত কলেজের শয্যা হিসেবে দেখানো হয়েছিল। তার প্রতিবাদে সাগর দত্ত কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ তাপস ভট্টাচার্য পদত্যাগ করতেও চেয়েছিলেন।
মালদহ মেডিক্যাল কলেজের অনুমোদনের নবীকরণ আটকে গেল কেন? এমসিআই সূত্রে বলা হয়, যথেষ্ট সংখ্যায় ছাত্রছাত্রীদের হস্টেল এবং মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের থাকার আবাসন নেই। মেডিসিন বিভাগে শয্যা অপ্রতুল। আইসিসিইউ, আইসিইউ, এসআইসিইউ-এ শয্যা নেই। এক্স-রে করার ব্যবস্থা নেই। অ্যানাটমি বিভাগে পরিকাঠামো নেই বললেই চলে। অ্যানাটমি বিভাগে যথেষ্ট আলো, জল সরবরাহ ও নিকাশির ব্যবস্থা নেই। শব ব্যবচ্ছেদের হলঘরও যথোপযুক্ত নয়। রাজ্যের স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্তবাবু বলছেন, “চালু হওয়ার পরে প্রথম কয়েক বছর সব মেডিক্যাল কলেজই এই ধরনের একটু-আধটু সমস্যার মুখে পড়ে। জুনের মধ্যে পরিকাঠামো ঠিক হয়ে যাবে। অগস্টে ছাত্র ভর্তি হওয়ার কথা। আশা করছি, এমসিআই তখন আর আপত্তি করবে না।” পরিস্থিতি সামলাতে আগামী ১ জুন দিল্লি যাচ্ছেন সুশান্তবাবু। |