সেরা দশে দুই জেলার এগারো
ক্কা হাঁকল বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার দুই জিলা স্কুল। পিছিয়ে নেই অন্য স্কুলগুলিও। শুক্রবার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রকাশিত মাধ্যমিক পরীক্ষার সেরাদের তালিকায় দুই জেলার ১১ জন ছাত্রছাত্রী স্থান করে নিয়েছে। তবে স্ক্রুটিনির পরে ফলের এদিক ওদিক হতে পারে।
দুই জেলার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে পুরুলিয়া জিলা স্কুলের প্রীতম সেন। ৬৭২ নম্বর পেয়ে সে চতুর্থ স্থান দখল করেছে। ওই স্কুলেরই ঋজু সরকার ৬৬৯ নম্বর পেয়ে ষষ্ঠ স্থান ও দেবাশিস দাস ৬৬৫ নম্বর পেয়ে দশম হয়েছে। পুরুলিয়ার নডিহায় প্রীতমের বাড়ি। ভৌতবিজ্ঞানে সে ১০০ পেয়েছে। অঙ্ক, জীবনবিজ্ঞান ও ইতিহাসে ৯৯ করে পেয়েছে। ভবিষ্যতে সে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। তার কথায়, “দিনে প্রায় ১৬ ঘণ্টা করে পড়তাম। স্কুলে কোনও বিষয় পড়ানোর পরে বাড়ি ফিরে সেই বিষয়ে পাঠ্যবই ও সহায়িকা বই পড়তাম।”
প্রীতম সেন শৌভিক গোস্বামী ঋজু সরকার অর্পণ মুখোপাধ্যায় অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়
তবে পড়ার ফাঁকে ফুটবল খেলতে এবং গোয়েন্দা গল্প বই পড়তে সে ভালবাসে। তার সহপাঠী ঋজু ভৌতবিজ্ঞান ও জীবনবিজ্ঞানে ১০০ নম্বর করে পেয়েছে। ক্রিকেট খেলা ছাড়াও গিটার বাজাতে সে ভালবাসে। ঋজুর মতোই ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চায় তার সহপাঠী দেবাশিসও। সে জীবনবিজ্ঞানে ১০০ পেয়েছে। এক দশক পরে পুরুলিয়া জিলা স্কুল মাধ্যমিকে এমন সাফল্য পেল। তিন কৃতীর কথায়, “বাড়িতে অভিভাবকদের পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষকরাও প্রচুর সাহায্য করেছেন।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক বারিদবরণ মিশ্র অবশ্য বলেছেন, “আমরা কিন্তু নিজেদের বিরাট কিছু পাল্টে ফেলিনি। আগেও যেরকম ভাবে ছাত্রদের তৈরি করতাম, এখনও সেভাবেই করছি।”
বাঁকুড়া জিলা স্কুলের ছাত্রদের কাছে মাধ্যমিকে সাফল্য পাওয়া যেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এই স্কুলের অর্পণ মুখোপাধ্যায় ৬৬৯ নম্বর পেয়ে রাজ্যে ষষ্ঠ হয়েছে। ওই স্কুলেরই অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায় ৬৬৮ নম্বর পেয়ে সপ্তম, শৌভিক সিংহ ৬৬৬ পেয়ে নবম ও সাগ্নিক চক্রবর্তী ৬৬৫ পেয়ে দশম হয়েছে। সাফল্যের চাবিকাঠি কী? স্কুলের শিক্ষকরা বলেন, “পড়ুয়াদের মধ্যে ভাল ফল করার জেদ তৈরি হয়েছে। অভিভাবকেরাও অনেক সজাগ হয়েছেন। সব মিলিয়েই এই সাফল্য।” আর কৃতীদের মধ্যে অর্ঘ্য-র কথায়, “আমাদের মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতা রয়েছে। বন্ধুত্বও রয়েছে। নোটস বিনিময় করেছি। কোনও বিষয়ে বুঝতে অসুবিধা হলে একে অন্যকে বুঝিয়ে দিতাম।” অর্পণ ও সাগ্নিকের বাড়ি কাঠজুড়িডাঙায়। হরেশ্বর মেলায় অর্ঘ্যর বাড়ি। আর শৌভিকের বাড়ি অরবিন্দপল্লীতে। অর্পণ বলে, “সারাদিনে প্রায় ১৪ ঘণ্টা পড়াশোনা করতাম। প্রতিটি বিষয়ের জন্য গৃহশিক্ষক ছিল।”
শৌভিক সিংহ শিল্পা পতি ঋতম বসু দেবাশিস দাস সাগ্নিক চক্রবর্তী
অঙ্কে ১০০ পাওয়া এই মেধাবী ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। অর্ঘ্য জীবন বিজ্ঞান ও ভৌতবিজ্ঞানে ১০০ নম্বর করে পেয়েছে। তবে অঙ্ক তার প্রিয় বিষয়। তার স্বপ্ন একটু আলাদা। সে আইপিএস অফিসার হতে চায়। অঙ্কে ১০০ পাওয়া শৌভিক অবশ্য ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। সাগ্নিক জানিয়েছে, তার প্রিয় বিষয় জীব বিদ্যা। সে ডাক্তার হতে চায়।
ওদের মতই জঙ্গলমহলের সারেঙ্গা ব্লকের গড়গড়িয়া সুভাষ হাইস্কুলের ছাত্র শৌভিক গোস্বামী ও ঋতম বসু-ও খুব ভাল বন্ধু। বরাবর স্কুলের ‘ফার্স্টবয়’ শৌভিক ৬৭০ নম্বর পেয়ে রাজ্যে পঞ্চম হয়েছে। ভৌতবিজ্ঞানে তার প্রাপ্ত নম্বর ১০০। ৬৬৫ পেয়ে ঋতম রাজ্যে দশম হয়েছে। দু’জনেই ডাক্তার হতে চায়। পড়ার ফাঁকে দু’জনেই টিভি দেখতে, ক্রিকেট খেলতে ও গল্পের বই পড়তে ভালবাসে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাধনচন্দ্র ঘোষ বলেন, “শিক্ষকদের দায়িত্ববোধ আর ছাত্র-ছাত্রীদের অদম্য চেষ্টায় এই সাফল্য।” রাজ্যে মেয়েদের মধ্যে সেরা হয়েছে বাঁকুড়া মিশন উচ্চবিদ্যালয়ের অনন্যা মণ্ডল। আর ৬৬৬ নম্বর পেয়ে পোয়াবাগানের বিবেকানন্দ শিক্ষা নিকেতনের শিল্পা পতি নবম স্থান পেয়েছে। কাঠজুড়িডাঙার বাসিন্দা শিল্পা বিজ্ঞানের তিনটি বিষয়েই ১০০ করে পেয়েছে। তারও ইচ্ছা, “ডাক্তার হব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.