এই আবেগে এগোক বাংলাও, চান গম্ভীর
লের মালিক বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর।
তিনি কাপ-জয়ী অধিনায়ক। মঙ্গলবারের পরে তাঁর গলাতেও যেন রাজ্যের শুভেচ্ছা-দূতের সুর। স্বতঃস্ফূর্ত।
গৌতম গম্ভীরের কথা শুনে মনে হচ্ছিল, কলকাতার হয়ে আইপিএল জেতা নয়, রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের কথাও ভাবতে চাইছেন। তাঁর মনে হচ্ছে, শুধু আইপিএলের বিজয়মঞ্চ নয়, রাজ্যের এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা হয়ে থাকুক মঙ্গলবারের ইডেন। আর কলকাতার আবেগ যা গম্ভীর গত দু’মাস ধরে মাঠে দাঁড়িয়ে দেখেছেন, যে আবেগের লাভাস্রোত এ দিন ভাসিয়ে নিয়ে গেল তাঁদের সেটাকেই অস্ত্র করে এগিয়ে যাক পশ্চিমবঙ্গ। যে ভাবে গোটা রাজ্য ‘কেকেআর-কেকেআর’ বলে চিৎকার করেছে, সেই শক্তি আর আবেগ নিয়ে এ বার তারা গর্জন করে উঠুক, “আমরা এগোতে চাই।”
শাহরুখ ও ইউসুফের কাঁধে নাইট অধিনায়ক গম্ভীর। ছবি: রাজীব বসু
এত দিন গম্ভীর বলছিলেন ঠিকই যে, দিল্লি নয়, কলকাতাই তাঁর শহর। এ দিন বোঝা গেল তিনি সত্যি সত্যি বাংলাকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। যখন সংবর্ধনা থেকে ফিরে বললেন, “আশা করব আমরা সবাই একসঙ্গে এগিয়ে যাব। একসঙ্গে বেড়ে উঠব। কেকেআর সেই উন্নয়নের একটা অঙ্গ হবে। একমাত্র অঙ্গ নয়।” কলকাতার বাসিন্দার মতোই আবেদন রাখলেন, “আসুন আমরা একসঙ্গে বেড়ে উঠি। কেকেআর, এ রাজ্য, আমরা সবাই।”
আইপিএল জয়ের রাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশা প্রকাশ করেছিলেন, এই জয় রাজ্যের উন্নয়ন ও প্রগতির চিহ্ন হয়ে উঠবে। অনেকটা একই রকম শোনাচ্ছে নাইটদের কথাবার্তা। একা গম্ভীর নন। তাঁর টিম মালিক থেকে শুরু করে সতীর্থ ক্রিকেটার, সবাই এ দিন একাত্ম হয়ে যাচ্ছিলেন কলকাতার সঙ্গে। এত দিন কেকেআর-এ কলকাতার প্রতিনিধি বলতে ছিলেন মনোজ তিওয়ারি, লক্ষ্মীরতন শুক্ল এবং দেবব্রত দাস। ইডেনে সংবর্ধনা-উত্তর টিমটায় যেন পুরোপুরি ঢুকে পড়ল কলকাতার রং।
মনোজ তিওয়ারি রাতের ফ্লাইটেই বেরিয়ে গেলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বলে গেলেন, “এটা কলকাতাতেই শুধু সম্ভব। ইডেনে একটা চার মেরে যে রকম ভালবাসা পাওয়া যায়, সেটা আর কোথাও মেলে না।” কয়েক দিন আগে হলে হয়তো মনোজ এটা একা বলতেন। এখন তাঁর টিমের অন্যরাও বলছেন। লক্ষ্মীপতি বালাজি যেমন। নিজের শহর চেন্নাইয়ের হয়ে এক বার চ্যাম্পিয়ন, এক বার রানার্স হয়েছেন। এ দিনের উৎসবের পর বলে দিলেন, “চেন্নাইতেও আমরা সেলিব্রেট করেছিলাম, কিন্তু সেটা আজকের পাশে কিছুই না।” ইউসুফ পাঠান প্রথম আইপিএল জিতেছিলেন রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে। তিনিও বললেন, “এত ভালবাসা নিজের শহরেও পাওয়া যায় না।”
এই ভালবাসা আর আবেগকেই তো হাতিয়ার করার ডাক দিচ্ছেন গম্ভীর। তিনি দেখে আশ্চর্য যে, আইপিএল জয়কে ঘিরে একটা শহর এমন উত্তাল হতে পারে! এমনকী বিশ্বকাপ জয়ের উৎসব না আজকেরটা কোনটাকে এগিয়ে রাখবেন সেটার উত্তর দিতে গিয়েও দ্বিধায় পড়লেন। “বিশ্বকাপ জিতে আমরা সারা দেশকে আনন্দ দিতে পেরেছিলাম। এখানে একটা শহর যে রকম আনন্দ করছে, সেটাকেও পিছিয়ে রাখা খুব কঠিন।”
আবেগের এই উদ্গীরণে আপ্লুত গম্ভীরের টিমমালিকও। তিনি যেন আজই মুম্বইয়ের ঠিকানা ত্যাগ করে কলকাতার হয়ে গেলেন। না হলে বলবেন কেন, “এক-এক সময় আমারও বেশ অদ্ভুত লাগছে। আমরা যেন এক-এক জন এক-এক জায়গা থেকে এসে একটা শহর গড়ছি। অথচ একটা সময় শহরটা কেমন আমাদের সকলের আপন হয়ে গেল!” না হলে ঘোষণা করে দেবেন কেন, “আজ থেকে আমি আর কেকেআর-এর মালিক নই। টিমের মালিকানা তুলে দিলাম কলকাতার মানুষের হাতে।”
কেকেআর-এর বিদেশিরাও কি আর বিদেশি থাকলেন? ট্রেভর বেলিস, অস্ট্রেলীয় কোচ। হোটেলে ফিরে মন্ত্রমুগ্ধের মতো বলছিলেন, “পুরো শোভাযাত্রা আর সংবর্ধনা আমি ভিডিও করে রেখেছি। এ জিনিস কখনও দেখিনি।” রুডি ওয়েবস্টার। একটা সময় লয়েড, রিচার্ডসদের মনোবিদ হিসেবে কত সোনালি মুহূর্তের সাক্ষী থেকেছেন! সেই তিনিও বলছেন, “এমন আবেগ শেষ দেখেছি বার্বাডোজে। যে দিন লারা অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলে শেষ উইকেটে ওয়ালশকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছিল। ওটা বাদ দিলে..উঁহু..মনে করতে পারছি না!”
মনে হচ্ছে গম্ভীর এবং কেকেআর নতুন স্লোগানই লিখে দিয়ে গেলেন কলকাতার জন্য। আবেগ দিয়ে গড়ব রে!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.