মাসুল যুদ্ধ জোরদার থ্রিজি ময়দানে
ত এক সপ্তাহে থ্রিজি পরিষেবার মাসুল গড়পড়তা ৭০% কমিয়েছে ৩ মোবাইল পরিষেবা সংস্থা। শুধু তা-ই নয়, আগামী দিনে তা আরও কমবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, টুজি-র বাজার ধরতে যে ভাবে মাসুল-যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, এ বার সেই রকম লড়াই শুরু হল থ্রিজি-তেও। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, শুধু মাসুল কমানোয় চিঁড়ে ভিজবে না। থ্রিজি-কে জনপ্রিয় করতে বাজারে আনতে হবে স্থানীয় ভাষায় তথ্য ব্যবহারের সুযোগ-সহ নানা আকর্ষণীয় প্রকল্পও।
থ্রিজি-র মাসুল কমানোর বিষয়ে প্রথম পথ দেখিয়েছে এয়ারটেল। তার পর একই রাস্তায় হেঁটেছে আইডিয়া ও রিলায়্যান্স কমিউনিকেশন্স। তবে এখনই এই সিদ্ধান্তকে ‘লড়াই’য়ের তকমা দিতে নারাজ টেলিকম শিল্পমহল। তাদের বক্তব্য, এই পরিষেবা এখনও প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। ফলে, মাসুল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা অবশ্যম্ভাবী। এ প্রসঙ্গে সেলুলার অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (সিওএআই) কর্তা রাজন ম্যাথুজের দাবি, বিভিন্ন মাসুল হার স্থির করে সংস্থাগুলি আসলে যাচাই করে দেখতে চায়, কোনগুলি গ্রহণযোগ্য।
বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অবশ্য অনেকেই মনে করছেন যে, কাঙ্খিত সংখ্যক গ্রাহকের কাছে পৌঁছতে মাসুল কমানো এবং উদ্ভাবনী কৌশল অবলম্বন করা ছাড়া তেমন গত্যন্তর ছিল না পরিষেবা সংস্থাগুলির সামনে। গোড়ায় ওই সব সংস্থার আশা ছিল, থ্রিজি চালু হলে, দেশের ৯১.৯ কোটি মোবাইল গ্রাহকের অন্তত ১০% (প্রায় ৯.২ কোটি) ঝুঁকবেন তার দিকে। কিন্তু সেখানে পরিষেবা চালুর পর দেড় বছর কেটে গেলেও সেই সংখ্যা এখন ১.৫-২ কোটি।
এঁদের মধ্যে আবার তা নিয়মিত ব্যবহার করেন আরও কম সংখ্যক গ্রাহক। মাত্র ১-১.২ কোটি। তাই এই পরিস্থিতিতে বাজারের আরও বড় অংশ ধরতে মাসুল কমাতেই হত বলে মনে করছেন অনেকে।
অবশ্য টেলিকম সংস্থাগুলির দাবি, মাসুল এর একমাত্র কারণ নয়। বরং তাদের মতে, এখনও থ্রিজি ব্যবহারের জন্য পুরোপুরি তৈরি নয় ভারত। কারণ, থ্রিজি-র আসল দক্ষতা বেশি তথ্য (ডেটা) দ্রুত পাঠানোয়। কিন্তু এ দেশে ওই কাজে মোবাইলের ব্যবহার কম। সেই তুলনায় কথা বলা বা বার্তা পাঠানোর জন্যই তার রমরমা।
উপদেষ্টা সংস্থা কেপিএমজি-র টেলিকম বিভাগের প্রধান রমল শেট্টির দাবি, উন্নত দুনিয়ার সঙ্গে ভারতের অধিকাংশ থ্রিজি গ্রাহকের চাহিদা ও মানসিকতার আমূল ফারাক। তাঁর উদাহরণ, “থ্রিজি ব্যবহার করে আস্ত ফুটবল ম্যাচ মোবাইলে দেখতে অভ্যস্ত ইউরোপের অনেকেই। কিন্তু এ দেশে অধিকাংশই বড়জোর দেখবেন ম্যাচের উত্তেজক কিছু ওভার।”
ভারতে প্রায় যে কোনও পণ্যের জনপ্রিয়তার ক্ষেত্রে তার দামই যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ, তা মেনে নিচ্ছেন শেট্টি। তবে তিনি মনে করেন, গ্রাহক টানতে শুধু সস্তা দরই শেষ কথা নয়। সেই সঙ্গে প্রয়োজন কৌশলও। যেমন, ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস বা বাড়তি পরিষেবা। তাঁর দাবি অনুযায়ী, উন্নত দুনিয়ায় থ্রিজি ব্যবসার ৭০% আসে এ ধরনের পরিষেবা মারফত। অথচ ভারতে এখনও তা খুব বেশি হলে ২০%।
তবে চাকা যে ঘুরতে শুরু করেছে, তারও ইঙ্গিত দিয়েছেন শেট্টি। তাঁর দাবি, আগামী দিনে আরও বেশি করে স্থানীয় চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিভিন্ন কাজে মোবাইল ব্যবহারের সুযোগ বাড়লে জনপ্রিয়তা বাড়বে থ্রিজি-রও। তবে দামের বিষয়ে ভারতের বাজার যথেষ্ট সংবেদনশীল হওয়ায়, অন্তত প্রথমে চাহিদা বাড়াতে মাসুল আকর্ষণীয় হওয়া জরুরি বলে মনে করেন তিনি। সারা বিশ্বেই থ্রিজি পরিষেবা পুরোদস্তুর চালু হতে সময় লেগেছে ৩-৪ বছর। ভারতে তা আরও বেশি হতে পারে বলে মনে করছে সিওএআই। তাদের মতে এর কারণ, স্পেকট্রামের স্বল্পতা ও তার চড়া দর, পরিকাঠামো গড়তে ব্যাঙ্কঋণ না-পাওয়া, বিপুল সংখ্যক প্রিপেড গ্রাহক ইত্যাদি। তাই আপাতত মাসুল কমিয়েই বাজার দখলের চেষ্টা করছে টেলি সংস্থাগুলি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.