হুকিংয়ের তারের সংস্পর্শে এসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছিল ন’বছরের ছেলে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে একই পরিণতি হল বাবা-মায়ের। মারা গিয়েছেন তিন জনই। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামনগরের নুরপুর পঞ্চায়েতের ভবানীপুর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন অলোক হালদার (৩৫), তাঁর স্ত্রী শিখা হালদার ওরফে মামনি (২৫) এবং ছেলে বিশ্বজিৎ হালদার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় বাস কন্ডাক্টর অলোকবাবুর বাড়ি থেকে সামান্য দূরে একটি খেজুর গাছের উপর দিয়ে গ্রামের বহু বাড়ির হুকিংয়ের তার গিয়েছে। এ দিন সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া বিশ্বজিৎ বন্ধুদের সঙ্গে গিয়েছিল সেখানে। স্বল্প উচ্চতার খেজুর গাছটি থেকে হাত বাড়িয়েই খেজুর পাড়ছিল সে। হঠাৎই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় ছেলেটি। সঙ্গীরা ছুটে গিয়ে খবর দেয় তার বাবা-মাকে। শিখাদেবী ঘর থেকে ছুটে এসে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে ছাড়ানোর চেষ্টা করলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। পিছনেই ছিলেন অলোকবাবু। তিনিও স্ত্রীকে-সন্তানকে টেনে ধরার চেষ্টা করেন। এ বার বিদ্যুৎপৃষ্ট হতে হয় তাঁকে। ওই দৃশ্য দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা বিদ্যুৎসংযোগ ছিন্ন করে দেন। সকলকে নিয়ে যাওয়া হয় ডায়মন্ড হারবার মহকুমা হাসপাতালে। তিন জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। পুলিশ জানায়, দেহগুলি পাঠানো হয়েছে ময়না-তদন্তের জন্য। অলোকবাবুর সাত ও পাঁচ বছরের আরও দুই ছোট ছেলেমেয়ে আছে। শিখাদেবীর বাড়ির লোকজনই আপাতত তাদের দেখভাল করবেন বলে জানিয়েছেন।
প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানান, সকালে সামান্য বৃষ্টি হয়েছিল। বিদ্যুতের তার পড়েছিল ভিজে গাছের উপরে। কোনওভাবে তা ‘লিক’ করায় বিশ্বজিৎ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার ডায়মন্ড হারবার শাখা অফিস সূত্রের খবর, বিষয়টি তাঁদের জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।
কয়েক মাস আগে এই জেলারই মগরাহাটের নৈনান গ্রামে হুকিংয়ের তার কাটতে গেলে পুলিশ ও বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কর্মীদের উপরে চড়াও হন গ্রামবাসীরা। আক্রান্ত এক পুলিশ কর্মী পরে মারাও যান। সে সময়ে রাজ্য জুড়ে অবৈধ সংযোগ কাটতে উদ্যোগী হয়েছিল বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি। কিন্তু মগরাহাট-কাণ্ডের পরে সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে ওই অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। |