দীর্ঘ কয়েক মাস গুদামে পড়ে থাকা চাল বণ্টন করছিল সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েত। ‘পচা চাল’ বিলি করা হচ্ছে বলে তৃণমূল এতে আপত্তি জানায়। বিডিও এসে চালের মান খতিয়ে দেখে ওই চাল বিলি বন্ধ করে দেন। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির হরিপালের পশ্চিম গোপীনাথপুর পঞ্চায়েতে। সিপিএমের পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূলের ‘অনৈতিক’ আন্দোলনেই এই পরিস্থিতি হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ৯ মাস আগে কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ৪০০ কুইন্টাল চাল আসে ওই পঞ্চায়েতে। এলাকার ১৬টি গ্রামের বিপিএল তালিকাভুক্তদের মধ্যে তা বিলি করার কথা। পঞ্চায়েত চাল বিলি আরম্ভও করে। তবে, শুধুমাত্র গোপালপ্রসাদ গ্রামে তা দেওয়া হয়। এর পরে তৃণমূলের ‘আন্দোলনে’ তা আর বিলি করা যায়নি। তৃণমূল অভিযোগ করে, বহু ‘ধনী’ লোকের নাম বিপিএল তালিকায় ঢুকিয়েছে সিপিএম। ওই ‘ধনী’ লোকেদের বিপিএল তালিকার চাল দেওয়া যাবে না। প্রকৃত দরিদ্র্যদের বেছে তা দিতে হবে। বিষয়টি নিয়ে টানাপোড়েনে বাকি চাল গুদামে পড়ে থেকে নষ্ট হয়। কেন চাল ফেলে রেখে নষ্ট করা হচ্ছে, তা নিয়ে সম্প্রতি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব আন্দোলনে নামে। বিষয়টি প্রশাসনিক স্তর পর্যন্ত পৌঁছয়।
এর পরেই এ দিন ফের ওই চাল বিলি করা শুরু হয়। কিন্তু নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক গ্রামবাসীই ওই চাল নিতে চাননি। তৃণমূলের স্থানীয় নেতারাও এতে আপত্তি জানান। বিডিও-কে খবর দেওয়া হয়। বিডিও সুমন্ত ঘোষ এসে চালের মান দেখে তা বিলি করা বন্ধ করে দেন। জেলাশাসকের কাছে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানানো হয় তৃণমূলের তরফে। ওই চাল বদলে ভাল চালের ব্যবস্থা করার আবেদন জানানো হয়।
ওই চাল যে গুদামে পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে গিয়েছে, পঞ্চায়েত প্রধান বাবুলাল মুর্মু তা মেনে নিয়েছেন। তবে, এর দায় তিনি তৃণমূল নেতাদের উপরেই চাপিয়েছেন। তিনি বলেন, “তৃণমূলের রাজনীতির জন্যই প্রথমে সব চাল বিলি করা যায়নি। এখন ওরাই আবার অভিযোগ তুলছে, আমরা নাকি চাল বিলি করিনি। ওরা গরিব মানুষের কথা না ভেবে রাজনীতি করছে।” প্রধান বলেন, “আমরা ভাল চালের বস্তা থেকে বেছে বেছে চাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলাম। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের চাল, এখন সরকারি নিয়মনীতি মেনে খারাপ চাল কি ভাবে পাল্টানো যায়, তা দেখা হচ্ছে।” |