পরিচিত এক যুবককে অপহরণ করে মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই যুবক তাঁর থেকে ৯০ হাজার টাকা ধার নিয়ে ফেরত না দেওয়ায়, বকেয়া টাকা আদায় করতেই তিনি এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ অপহৃতের স্ত্রীর। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার সালকিয়ায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত শুক্রবার কলকাতার ফেয়ারলি প্লেসে অফিস যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন রেলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী মহেশ রাম (৩০)। তার পরে চার দিন ধরে তিনি নিখোঁজ। পরিবারের তরফে পুলিশকে জানানো হয়, ওই বিকেলে মহেশবাবু তাঁর স্ত্রী দুর্গাবতীদেবীকে জানিয়েছিলেন, সন্ধের মধ্যে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু সন্ধে গড়িয়ে রাত হলেও তিনি বাড়ি না ফেরায় স্ত্রী ও আত্মীয়েরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নিতে শুরু করেন।
|
মহেশ রাম |
দুর্গাবতীদেবী পুলিশকে জানান, ওই রাতেই উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের পরেলি বাজারে বাপের বাড়িতে ফোন করে বিষয়টি জানান তিনি। ওই রাতে গোলাবাড়ি থানায় নিখোঁজ-ডায়েরিও করে মহেশবাবুর পরিবার। পরদিন, অর্থাৎ শনিবার সকালে গোরক্ষপুর থেকে দুর্গাবতীদেবীর বাবা রামনাগিনী প্রসাদ সালকিয়ায় ফোন করে জানান, তিনি মহেশের পরিচিত সালকিয়ারই বাসিন্দা সুভাষ জয়সোয়ারাকে ফোন করে খোঁজ নেন। তখন ওই যুবক দাবি করেন, মহেশ তাঁর থেকে ৯০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। সেটা ফেরত দিলেই মহেশকে ছাড়া হবে। টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি হিসেবে শনিবারই ১০ হাজার টাকা মহেশের অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হবে।
পুলিশ সূত্রে খবর, রামনাগিনীবাবু জানান, সুভাষের কথামতো সেই টাকা ব্যাঙ্কে জমা দেন তিনি। এর পরে বাকি টাকা দেওয়ার কথা বলে মহেশের সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু তাঁর দাবি, সুভাষ সেই কথায় রাজি হননি। উপরন্তু মহেশের অ্যাকাউন্টে বাকি টাকা জমা দেওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন তিনি।
এই ঘটনার কথা তাঁরা দফায় দফায় গোলাবাড়ি থানায় জানালেও পুলিশ প্রথমে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ মহেশবাবুর পরিবারের। মঙ্গলবার থানার সামনে দুর্গাবতীদেবী বলেন, “আমরা গত শনিবার থেকেই সমস্ত ঘটনা পুলিশকে জানাচ্ছি। কিন্তু তারা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। অপহরণের অভিযোগও দায়ের করেনি। আজ তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের নিয়ে থানার আসার পরে পুলিশ সুভাষের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা রুজু করে।”
তৃণমূলের হাওড়া জেলার সহ-সভাপতি নিমাই পাঠক বলেন, “এক যুবক অপহৃত হয়েছে জানার পরেও পুলিশ ঠিকমতো তদন্ত শুরু করেনি। এমনকী, অপহরণের মামলাও দায়ের করেনি। পুলিশের এই ভূমিকায় আমরা ক্ষুব্ধ।” যদিও হাওড়া সিটি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সদর) নিশাদ পারভেজের দাবি, “পুলিশ তদন্তে কোনও গাফিলতি করেনি। তদন্ত ঠিকমতোই চলছে। আজই আমরা অপহরণের অভিযোগ পেয়েছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।” |