মমতার চাপে লোকপাল বিলে বাদ ‘লোকায়ুক্ত’ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
তৃণমূলের দেওয়া সংশোধনীগুলি মেনে নিয়েই লোকপাল বিল পেশ হতে চলেছে রাজ্যসভায়। শিরোনাম তো বটেই, বিলের আরও যেখানে-যেখানে ‘লোকায়ুক্ত’ শব্দটি ছিল, সমস্তই বাদ দেওয়া হয়েছে। সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী তৃণমূলের সংসদীয় দলকে আজ এই কথা জানান। তৃণমূল সূত্রের খবর, বিষয়টি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাতে সাংসদদের অনুরোধ করেন নারায়ণস্বামী।
মমতার সঙ্গে যোগাযোগ করাও হয়েছে। তবে নতুন চেহারার বিলটি সম্পর্কে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা এখনও দল স্থির করেনি। বিলটি ভাল করে খতিয়ে দেখে তবেই এ ব্যাপারে মতামত জানাবেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, মমতার সবুজ সঙ্কেত পেলে সংসদের চলতি অধিবেশনের একদম শেষের দিকে (সম্ভবত ২১ মে) বিলটি রাজ্যসভায় আনবে কেন্দ্র।
তৃণমূলের আপত্তিতে রাজ্যসভায় ‘লোকপাল এবং লোকায়ুক্ত’ বিলটিকে পাশ করাতে পারেনি কেন্দ্র। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব অনেক বোঝালেও তাদের সংশোধনী প্রস্তাবগুলি প্রত্যাহার করেনি তৃণমূল। শেষ পর্যন্ত মমতার চাপের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে কংগ্রেস। সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে বিজেপি-সহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে কথা বলে ঐকমত্য গড়ার চেষ্টাও চালানো হচ্ছে কংগ্রেসের তরফে।
তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, কোনও মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলে তিনি পদে থাকবেন কি না, তা রাজ্যের আইনেই ঠিক হবে। লোকায়ুক্ত গড়ে এ নিয়ে কেন্দ্র খবরদারি করতে পারে না। মমতার বক্তব্য ছিল, এ ভাবে বিলটি পাশ হলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত আসবে। লোকসভায় বিলটি পাশের সময়ে সরকারকে তৃণমূল সমর্থন করলেও পরে তা খতিয়ে দেখে মমতা বলেন, প্রয়োজনে নিজের মতো লোকায়ুক্ত তৈরি করবে রাজ্য। কেন্দ্র তার বিলটিকে মডেল হিসেবে তুলে ধরতে পারে। কিন্তু রাজ্য তা মানতে বাধ্য নয়। রাজ্যসভায় তৃণমূলের দেওয়া সংশোধনীর বক্তব্য ছিল, সংবিধানের ২৪৬ ধারা অনুযায়ী রাজ্য তার লোকায়ুক্ত নিজেই গড়তে পারে। তাই ‘লোকপাল এবং লোকায়ুক্ত বিল’ এই নাম পাল্টে বিলের নাম হোক লোকপাল। রাজ্যে লোকায়ুক্ত গঠন নিয়ে যে সব অনুচ্ছেদ রয়েছে (তিন নম্বর পর্বের ৬৯ থেকে ৯৩ অনুচ্ছেদ এবং ৬৪ নম্বর ধারার ৫ নম্বর উপধারা), সেগুলি বাদ দেওয়া হোক। সেই মতো এই সবক’টি অংশই বাদ গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। |