টাটা-বিলাসপুর প্যাসেঞ্জার
ট্রেন ‘হাইজ্যাক’ করল সশস্ত্র জঙ্গিরা
কদল মাওবাদী জঙ্গির হানায় গত রাতে চক্রধরপুর ডিভিশনের পসইতা স্টেশনে থমকে গেল টাটা-বিলাসপুর প্যাসেঞ্জার। বস্তুত, গত কাল রাত সাড়ে ন’টা থেকে প্রায় আধ ঘণ্টারও বেশি সময় পসইতা স্টেশনে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রেনটির উপরে রেলের কোনও নিয়ন্ত্রণই ছিল না। অসহায় অবস্থায় ট্রেনের কামরা থেকে নেমে আতঙ্কিত যাত্রীরা রাতের অন্ধকারে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হন। তবে মাওবাদীদের এই ট্রেন ‘হাইজ্যাকিং’-এর ঘটনায় কোনও যাত্রীর বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি। অক্ষত রয়েছেন ওই ট্রেনটির চালক-গার্ড সহ ট্রেনকর্মীরাও।
রেল ও পুলিশ সূত্রের খবর, ট্রেনটি রাত পৌনে দশটা নাগাদ পসইতা স্টেশনে পৌঁছয়। ওই স্টেশনে ট্রেনটির দু’মিনিট থামার কথা। কিন্তু ট্রেনটি আসতেই সশস্ত্র মাওবাদীদের একটি বড় দল স্টেশনে হানা দেয়। প্রথমে তারা ইঞ্জিনের সামনে সশস্ত্র পাহারা বসায়। পাহারা বসানো হয় গার্ডের কামরাতেও। ইঞ্জিনের সামনে দলীয় ব্যানার লাগায় তারা। এর পরে বিভিন্ন কামরায় এক এক জন উঠে পোস্টার মারতে শুরু করে। যাত্রীদের মধ্যে লিফলেটও বিলি করে মাওবাদীরা। এ ভাবে প্রায় আধ ঘন্টা চলার পরে একটি কামরার দরজায় বিস্ফোরক ভর্তি ব্যাগ রেখে তারা ট্রেন থেকে নেমে যায়। তবে যাওয়ার সময় যাত্রীদের বলে যায়, “ওই ব্যাগে বোমা রাখা আছে।”
আতঙ্কিত যাত্রীরা ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। চালক ও গার্ড তাঁদের ওয়াকিটকি থেকে খবর দেন রেলের কন্ট্রোলে। খবর যায় পুলিশেও। প্রায় ৪৫ মিনিট পরে পুলিশ আসে। আসে আরপিএফ জওয়ানরা, বম্ব ডিজ্পোজাল স্কোয়াড। যে সব যাত্রীরা তখনও ট্রেন থেকে নামেননি তাঁদেরও নামিয়ে দেয় পুলিশ। ট্রেনটিকে একদম খালি করে রাত সওয়া ১০টা নাগাদ সেটিকে পরবর্তী মনোহরপুর স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে লাইনের পাশে, মাঠের মধ্যে ওই ব্যাগ ভর্তি বিষ্ফোরক ফাটানো হয়।
চাইবাসার পুলিশ সুপার অরুণকুমার সিংহ বলেন, “মাওবাদীরা ট্রেনটিকে প্রায় আধ ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখে। ইঞ্জিনের সামনে মাওবাদীদের একটি দল অস্ত্র নিয়ে ঘোরাঘুরি করছিল। দলটির বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।” পুলিশ জানিয়েছে: ট্রেনের মধ্যে যে সব পোস্টার মাওবাদীরা লাগিয়েছিল তাতে তিনটি বিষয় লেখা ছিল।
• ২৪ ঘণ্টার ভারত বন্ধকে সফল করুন।
• অপারেশন গ্রিনহান্ট বন্ধ করতে হবে।
• আদিবাসী এলাকায় কোনও বিদেশিকে কারখানা খোলার অনুমতি দেওয়া যাবে না। উল্লেখ্য, আজ রাত ১২ টা থেকে মাওবাদীদের ডাকা ২৪ ঘন্টার বন্ধ শুরু হচ্ছে।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কর্তারা জানান, টাটা-বিলাসপুরের যাত্রীদের পরে আপ কুরলা এক্সপ্রেসে তুলে দেওয়া হয়। নিরাপত্তা রক্ষীরা গোটা ট্রেনটিকে তল্লাশি করার পর, রাত আড়াইটে নাগাদ ছাড়পত্র দেয়। এরপরেই ট্রেনটি ফের বিলাসপুরের দিকে রওনা দেয়। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক
সৌমিত্র মজুমদার বলেন, “মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে মাওবাদীদের ডাকা ভারত বন্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রেন ও লাইনের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে ট্রেন পেট্রোলিং, দূরপাল্লার ট্রেনের আগে পাইলট ইঞ্জিন, প্রতিটি ট্রেনের আগে মালগাড়ি চালানো হচ্ছে। বিশেষ সর্তকতা হিসেবে রাতের প্রতিটি ট্রেনের গতিবেগ কমিয়ে, ঘণ্টায় ৭৫ কিলোমিটার বেগে চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” যে যে শাখায় এই সব বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেগুলি হল: খড়্গপুর-টাটানগর, খড়্গপুর-আদ্রা-চক্রধরপুর, ও টাটানগর-বিলাসপুর মেন লাইন।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.