বাংলাদেশের এক কিশোরীকে পাচারের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার বর্ধমানের তিনকোনিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে তাকে ধরা হয়। ওই কিশোরীকেও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কিশোরীকে নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে ওই যুবককে ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয় মানুষজনের সন্দেহ হয়। তাঁরা পুলিশে খবর দেন। আইসি দিলীপ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বর্ধমান থানার মহিলা সেলের পুলিশ গিয়ে দু’জনকে আটক করে। পুলিশের দাবি, জেরার মুখে ওই কিশোরী জানিয়েছে, তার বাড়ি বাংলাদেশের কুরিগ্রাম জেলার নাগেশ্বর থানার রায়গঞ্জ গ্রামে। ৮-৯ বছর বয়সে তার মা খুন হয়ে যায়। বাবা দেখভাল না করায় পেটের দায়ে তাকে ঢাকায় একটি বাড়িতে পরিচারিকার কাজ নিতে হয়। কয়েক বছর পরে বাড়ি ফিরলে তার সৎ মা তাকে ঢাকার এক যৌনপল্লিতে বিক্রি করে দেন। সেখানে তাকে এক সময়ে গণধর্ষণের শিকারও হতে হয়েছে বলে ওই কিশোরীর দাবি। এরই মধ্যে তার পরিচয় হয় আলমগিরের সঙ্গে। কিশোরীর দাবি, ‘সুস্থ জীবনে ফেরানোর’ আশা দেখিয়ে আলমগীর তাকে দিল্লি নিয়ে যাচ্ছিল। পাচার করার কথা সে ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি।
পুলিশের দাবি, বছর বত্রিশের আলমগীর জেরায় জানিয়েছে, তার বাড়ি ঢাকায়। বাংলাদেশ থেকে ওই কিশোরীকে দিল্লিতে পাচার করতে পারলে যাতায়াতের খরচ ছাড়াও ১০ হাজার টাকা পেত সে। পুলিশের আরও দাবি, এই যুবক এর আগেও অনেককে এ ভাবে দিল্লিতে পাচার করেছে বলে কবুল করেছে। সে আরও জানিয়েছে, কোনও বৈধ কাগজ ছাড়াই বাংলাদেশ থেকে দিল্লি যাতায়াত করে সে। চার দিন আগে নদিয়ায় সীমান্ত পার হয়ে ওই কিশোরীকে নিয়ে সে এ দেশে ঢোকে। কৃষ্ণনগর থেকে তারা বাসে করে চলে আসে বর্ধমানে। সেখানে থেকে হাওড়া গিয়ে দিল্লির ট্রেন ধরাই তার উদ্দেশ্য ছিল বলে জেনেছে পুলিশ।
বর্ধমানের পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “এই যুবককে জেরা করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলতে পারে। তদন্ত চলছে।” ধৃতকে বুধবার আদালতে তোলা হবে। |