|
|
|
|
স্কুল সরিয়ে বহুতলে বাণিজ্যিক ভবন,
পুরসভার ভূমিকা নিয়ে জল্পনা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
স্কুলের জন্য তৈরি হয়েছিল বহুতল। বহু বছর ধরে সেখানে স্কুল ছিল। সম্প্রতি স্কুল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার পরে পুরসভার অনুমতি ছাড়াই ওই বহুতলে শপিং মল তৈরির কাজ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ। শিলিগুড়ি পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের শেঠ শ্রীলাল মার্কেটের ঘটনা। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের তরফে বেশ কয়েকজন পুরসভায় বিষয়টি জানিয়েছেন। ডান-বাম উভয় দলের একাধিক কাউন্সিলরও বিষয়টি জানেন বলে ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি। তা সত্ত্বেও বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ নিয়ে পুরসভার কাউন্সিলররা উদাসীন কেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা। এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ীর অভিযোগ, কংগ্রেস-তৃণমূল তো বটেই, সিপিএমের কাউন্সিলরদের একাংশও বিষয়টি জেনেও চুপ করে রয়েছেন। শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত অভিযোগ গুরুতর বলে স্বীকার করেছেন। মেয়র বলেন, “বেআইনি ভাবে শেঠ শ্রীলাল মার্কেটে ওই বহুতলে শপিং মল করা হচ্ছে বলে আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ওই সংস্থাকে আপাতত কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে দেখা করতে বলা হয়েছে।” পুরসভা জানিয়েছে, ওই ভবনটি একটি বেসরকারি ট্রাস্ট তৈরি করছে। ট্রাস্টের তরফে দাবি করা হয়েছে, বেআইনি কাজ তাঁরা করছেন না। মূল ভবন তৈরির সময়েই পুরসভা থেকে নকসা অনুমোদন করানো হয়। ট্রাস্টের সভাপতি মতিলাল গুপ্তা বলেন, “প্ল্যান পাস করিয়েই ওই ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। ওই জায়গা বাজারের ভেতরে। যাতায়াতের রাস্তা খুব ছোট। ফলে গাড়ি ঢুকতে পারে না। তাই দুই মাইলে স্কুল স্থানান্তর করা হয়েছে। ওই ভবনের ভেতরে কিছু কাজ করা হচ্ছিল। তার জন্য অনুমতি নিতে হবে জানা ছিল না। পুরসভার নোটিশ এখনও পাইনি। তা হাতে পেলে পুরসভায় দেখা করব।” পুরসভা সূত্রের খবর, শেঠ শ্রীলাল মার্কেটের ভেতরে রয়েছে পাঁচতলা ওই ভবন। সেখানে প্রায় ২৮ বছর ধরে শিলিগুড়ি মারোয়ারি পঞ্চায়েত চ্যারিটিবেল ট্রাস্টের তরফে একটি স্কুল চালানো হত। সপ্তম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ওই স্কুলে পড়াশোনা হয়। ট্রাস্টের দাবি, ওই জায়গায় সাইকেল, গাড়ি নিয়ে যাতায়াতে অসুবিধে হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে তা স্থানান্তরের দাবি করছিলেন পড়ুয়াদের অভিভাকেরা। তা ছাড়া পুরোপুরি বাজার এলাকায় হওয়ায় সেখান থেকে স্কুল স্থানান্তরের চেষ্টা করছিল ট্রাস্ট। পাশাপাশি সেখানে ইন্দিরা গাঁধী ওপেন ইউনিভার্সিটির (ইগনু) একটি শাখা ছিল। গত ১২ মার্চ শেঠ শ্রীলাল মার্কেট থেকে স্কুলটি দুই মাইলে স্থানান্তর করা হয়। ইগনু’র শাখাটিও সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয়। এর পরেই বহুতলের চতুর্থ ও তৃতীয় তলা ভেঙে শপিং মলের কাজ শুরু করা হয় বলে অভিযোগ। তা নিয়ে অভিযোগ ওঠে। পুরসভার একটি দল সেখানে গিয়ে সব খতিয়ে দেখে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন। ট্রাস্টের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, দুই মাইলে স্কুলের জন্য জায়গা দিয়েছেন বেগরাজ অগ্রবাল। তার জন্য শেঠ শ্রীলাল মার্কেটের ভেতরে থাকা বহুতলটি তাঁকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বেগরাজবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, “স্কুলের জন্য জায়গা দান করেছি আমি। সে জন্য ওই বহুতল নেওয়ার কোনও ব্যাপার নেই। আমাকে ওই বহুতল দেওয়া হয়েছে এটা ঠিক কথা নয়।” ওই এলাকার কাউন্সিলর তথা শিলিগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান নান্টু পালও ওই ভবনে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগের কথা শুনেছেন বলে স্বীকার করেছেন। তবে নান্টুবাবু তা নিয়ে কিছু বলতে চান না। তাঁর বক্তব্য, “বিষয়টি পুরসভার বিল্ডিং সেলের মেয়র পারিষদ দেখছেন। তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। বেআইনি কাজ হলে পুরসভা ব্যবস্থা নেবে।” পাশাপাশি, চেয়ারম্যান জানান, একাধিক বেআইনি নির্মাণ ভাঙার ব্যাপারে পুরসভা তৎপর হয়েছে। পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের মেয়র পারিষদ সীমা সাহা বলেন, “শেঠ শ্রীলাল মার্কেটের মধ্যে থাকা ওই ভবনে বেআইনি নির্মাণের অভিযোগ মিলেছে। ওই সংস্থাকে কাজ বন্ধের কথা বলে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।” |
|
|
|
|
|