মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন মার্কিন লগ্নি নিয়ে ছুঁৎমার্গ ছিল না তাঁর। কিন্তু বিরোধী পক্ষ হওয়ার পরেই মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টনের পশ্চিমবঙ্গ সফর নিয়ে সমালোচনায় সরব হলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রবিবার বুদ্ধবাবু বলেন, “এক জন বিদেশি অতিথি এসেছেন। কেন এসেছেন? কারণ, এ রাজ্যে তাঁদের মনের মতো সরকার এসেছে। মহাকরণে তাই সাজো সাজো রব। সব ইঙ্গিতগুলো বিপজ্জনক।”
বুদ্ধবাবু এই মন্তব্য নিয়ে এ দিনই প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের শীর্ষ সারির নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন নিজেই পুঁজির রং না-দেখার কথা বলেছিলেন বুদ্ধবাবু। আর এখন ক্ষমতা হারিয়ে ফিরে গিয়েছেন ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’-এর বস্তাপচা রাজনৈতিক স্লোগানে।
ব্যক্তিগত ভাবে যে বুদ্ধবাবু মার্কিন পুঁজির বিরোধী নন, বরং এ ব্যাপারে দলের কট্টর অবস্থানই তাঁর না-পসন্দ, সেটা স্পষ্ট হয়েছিল উইকিলিকসের ফাঁস করা তথ্য থেকেই। সেই তথ্য অনুসারে ২০০৯ সালে মার্কিন কনসাল জেনারেলকে বুদ্ধবাবু বলেছিলেন, সিপিএম-কে বদলাতে হবে, নইলে ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে একান্ত আলোচনায় এ কথা বললেও প্রকাশ কারাটদের মতো দলের কট্টরপন্থী নেতাদের চাপে মার্কিন লগ্নিকারীদের পশ্চিমবঙ্গে আনার ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগী হতে পারেননি বুদ্ধবাবু। কারণ, কারাটরা এখনও মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতাকেই দলের অন্যতম ‘আদর্শগত ভিত্তি’ বলে মনে করেন। যে সূত্র ধরে তাঁদের ভারত-মার্কিন অসামরিক পরমাণু চুক্তির বিরোধিতা। আর কারাটদের চাপের কারণেই বহু বার আমন্ত্রণ পাওয়া সত্ত্বেও আমেরিকা সফরে যাননি বুদ্ধবাবু। নিজের শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেনকে পাঠানোর কথা ভেবেছিলেন এক সময়ে। কিন্তু তা-ও শেষ পর্যন্ত। |