ইউনূসের হয়ে সওয়াল, বার্তা হাসিনা সরকারকে
ক বছর আগে নিজের হাতে তৈরি করা ব্যাঙ্কের শীর্ষ পদ থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। আর আজ সেই মুহাম্মদ ইউনূস ও তাঁর গ্রামীণ ব্যাঙ্কের সমর্থনে সরব হলেন
খোদ মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টন। বাংলাদেশ সরকারের উদ্দেশে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, “এমন কিছু করবেন না যাতে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়।”
মার্কিন বিদেশসচিবের দু’দিনের বাংলাদেশ সফরের আজই ছিল শেষ দিন। দিনের শুরুতেই প্রাতরাশ বৈঠক ছিল তাঁর ‘অন্যতম দুই প্রিয় মানুষের’ সঙ্গে। প্রথম জন গ্রামীণ ব্যাঙ্কের প্রতিষ্ঠাতা মুহাম্মদ ইউনূস। দ্বিতীয় জন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ব্র্যাক’-এর প্রধান ফজলে হাসান আবেদ। ঢাকায় মার্কিন দূত ড্যান ডব্লিউ মোজেনার বাড়িতেই এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। এক গাল হেসে ইউনূস আর আবেদকে নিজে অভ্যর্থনা জানিয়েছেন হিলারি।
কী কথা হল বন্ধু হিলারির সঙ্গে? সাংবাদিকরা প্রশ্ন ছুড়েছিলেন ইউনূসের দিকে। ৭১ বছরের নোবেলজয়ীর জবাব, “দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কথা হয়েছে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক আর ক্ষুদ্র ঋণ নিয়েও।” আর ইউনূস ও তাঁর প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাঙ্ক সম্পর্কে হিলারি কী বললেন? প্রাতরাশ বৈঠকের পরে ঢাকার একটি স্কুলে গিয়েছিলেন প্রাক্তন মার্কিন ফার্স্ট লেডি। উদ্দেশ্য, ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আড্ডার মেজাজে সময় কাটানো। সেখানেই তিনি বললেন, “দেশের দরিদ্র মহিলাদের উন্নয়নে গ্রামীণ ব্যাঙ্ক অনেক কিছু করেছে।
মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে হিলারি ক্লিন্টন। রবিবার ঢাকায়। ছবি: এ পি
আমি চাই না, হাসিনা সরকার এমন কিছু করুক যাতে এই অভিনব সাংগঠনিক কাঠামোর উপর কোনও আঘাত আসে।” এই প্রসঙ্গে ইউনূসকে ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের পথিকৃতও বলেছেন হিলারি। বলেছেন, “ইউনূস ও তাঁর কাজকে আমি ভীষণ শ্রদ্ধা করি। বিনা বাধায় তিনি তাঁর কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন বলেই আমি আশা করি।”
গত বছরই প্রবল রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়ে গ্রামীণ ব্যাঙ্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টরের পদ থেকে সরতে বাধ্য হয়েছিলেন ইউনূস। তাঁর বিরুদ্ধে আইন লঙ্ঘনের মামলা দায়ের করা হয়। ইউনূসের ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্পের সমালোচনা করেছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। সে দিক থেকে হিলারি ক্লিন্টনের আজকের বক্তব্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তবে শুধু ইউনূস-প্রসঙ্গই নয়, ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনায় আজও ঘুরেফিরে এসেছে বাংলাদেশের উন্নয়নের বিষয়টি। ভৌগোলিক ভাবে বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থানকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন হিলারি। বলেছেন, “চিন উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে সব চেয়ে এগিয়ে। আর ভারতও খুব দ্রুত উন্নতি করছে। তোমাদের দেশ কৌশলগত ভাবে এই দুই দেশের মধ্যে অবস্থিত। এই সুযোগকে কাজে লাগাও।”
এরই মধ্যে এক ছাত্র প্রশ্ন করে, “অনেকে বলে আমেরিকা ইসলাম বিরোধী। এ প্রসঙ্গে আপনার প্রতিক্রিয়া?” হিলারি বললেন, “এই অভিযোগটি আমাকে খুব ব্যথা দেয়। সারা বিশ্বেই কিছু নির্দিষ্ট ধর্ম বা জাতির মানুষের বিরুদ্ধে বৈষম্য চলছে। এ ক্ষেত্রে শুধু আমেরিকাকেই দোষ দিলে হবে না।” তবে তাঁর দেশ যে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, সে কথাও মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি মার্কিন বিদেশসচিব।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.