পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর থানার আইসি নীলেশচন্দ্র ঘোষ (৪৪) সহ দু’জন। জলপাইগুড়িতে একটি মামলার সাক্ষ্য দিয়ে শুক্রবার সকালে সেখান থেকে হরিরামপুর ফিরছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু সারোয়ার হোসেন (৪৪)। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থানার
|
আইসি নীলেশচন্দ্র ঘোষ। |
পানিশালা এলাকায় তাঁদের গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে একটি বড় ট্রাকের। ঘটনাস্থলেই মারা যান তাঁরা।
রায়গঞ্জের ডিএসপি অম্লান ঘোষ বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ট্রাকের চালক নিয়ন্ত্রণ হারানোয় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। চালক ও খালাসি পলাতক।”
পুলিশ জানায়, নীলেশবাবুর বাড়ি মালদহের কৃষ্ণপল্লি এলাকায়। সারোয়ার হোসেনের বাড়ি হরিরামপুরে। তিনি মাছের ব্যবসা করেন। তাঁর গাড়িতে করেই দু’জনে ফিরছিলেন। গাড়িটি চালাচ্ছিলেনও সারোয়ার হোসেন। দুর্ঘটনার পরেই ওই এলাকা দিয়ে রায়গঞ্জের কর্ণজোড়ায় যাচ্ছিলেন করণদিঘি থানার আইসি সুকুমার মিশ্র। সুকুমারবাবু বলেন, “রাস্তায় দুর্ঘটনা দেখে দাঁড়াই। গাড়িতে উঁকি দিতেই নীলেশবাবু এবং চালককে দেখি। তত ক্ষণে অবশ্য তাঁরা মারা গিয়েছেন।” নীলেশবাবু থাকতেন হরিরামপুর থানা সংলগ্ন পুলিশ আবাসনে। তাঁর যমজ ছেলে ও মেয়ের বয়স সাড়ে চার বছর। তাঁর স্ত্রী দীপাদেবী দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে বালুরঘাটের পুলিশ আবাসনে থাকতেন। দীপাদেবী বলেন, “এই ভাবে ও চলে যাবে বিশ্বাস করতে পারছি না। দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে এখন কী করব বুঝতে পারছি না।” |
কর্ণজোড়া পুলিশ লাইনে মৃত আইসিকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশের আধিকারিকেরা।
দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার চিরন্তন নাগ বলেন, “আমরা একজন দক্ষ পুলিশ অফিসারকে হারালাম। তাঁর পরিবার যাতে দ্রুত সরকারি ক্ষতিপূরণ পান, সে চেষ্টা করা হচ্ছে।” এই দিন রাতে নীলেশবাবুর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর মালদহের বাড়িতে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বালুরঘাট থানার সাব ইন্সপেক্টর পদ থেকে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন নীলেশবাবু। গত প্রায় ১২ বছর তিনি হিলি, কুমারগঞ্জ, গঙ্গারামপুর, বংশীহারি সহ জেলার বিভিন্ন থানায় ওসির দায়িত্বে ছিলেন। গত বছর নীলেশবাবু পদোন্নতি পেয়ে হরিরামপুর থানার আইসি’র পদে যোগ দেন। বিধানসভা ভোটের সময় সাময়িক ভাবে তিনি জলপাইগুড়িতে বদলি হয়েছিলেন। সেই সময় তিনি দুই দুষ্কৃতীকে মাদক সহ গ্রেফতার করেছিলেন। সেই মামলারই সাক্ষ্য দিতে বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়িতে গিয়েছিলেন তিনি। |