রয়েছে আশঙ্কাও

স্বস্তির অপেক্ষা

পেক্ষার অস্বস্তি কাটছে। হাওড়ার কয়েকটি রাস্তায় তৈরি হয়েছে সুদৃশ্য যাত্রীছাউনি। তবে নতুন ছাউনিগুলির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে যাত্রীরা আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন।
এত দিন হাওড়া শহরের অধিকাংশ জায়গায় বাস ধরার জন্য খোলা আকাশের নীচেই দাঁড়াতে হত। এখন সেই দুর্ভোগের চিত্র কিছুটা হলেও পাল্টেছে। কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, জিটি রোড-সহ কিছু রাস্তায় তৈরি হয়েছে যাত্রীছাউনি। এর মধ্যে সাতটি ছাউনি তৈরি হয়েছে পুরসভার উদ্যোগে। একটি সাংসদ তহবিলের টাকায়। অন্য দু’টি পুলিশের উদ্যোগে।
হাওড়া শহরের বাসস্ট্যান্ডের সংখ্যা কম। থাকলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেশির ভাগের ভগ্ন দশা। কয়েকটি ভবঘুরেদের আস্তানা। ফলে অপেক্ষমাণ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। যেমন, কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বিদ্যাসাগর সেতু থেকে মৌখালি পর্যন্ত কোনও যাত্রীছাউনি ছিল না। ব্যারি রোডে একটি জরাজীর্ণ ছাউনি আস্তাকুঁড়ে পরিণত হয়েছে। একই অবস্থা ড্রেনেজ ক্যানাল রোড, পঞ্চাননতলা রোড, জিটি রোড, ইস্ট-ওয়েস্ট রোড, ফোরশোর রোড-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার যাত্রীছাউনিগুলির।
নিত্যযাত্রী বিশ্বনাথ ঘোষাল বলেন, “এত দিন কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বাসস্ট্যান্ডগুলিতে যাত্রীছাউনি ছিল না। কাঠফাটা গ্রীষ্মে বা বর্ষায় চরম দুর্ভোগ হত। এ বার কিছুটা সুরাহা হয়েছে। আরও যাত্রীছাউনির দরকার।” কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বেলেপোল মোড়ে দু’টি, ব্যাতড়ে একটি, বাঁকসাড়ায় একটি, জিটি রোডে শিবপুরে একটি, ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের শানপুরে একটি, ইস্ট-ওয়েস্ট রোডে চ্যাটার্জিপাড়ায় একটি হাওড়া পুরসভা সব মিলিয়ে এই সাতটি যাত্রীছাউনি তৈরি করেছে। স্টিলের ফ্রেমে তৈরি ছাউনিগুলি নানা রঙের। রয়েছে মনীষীদের বাণী ও ছবি। কোনা এক্সপ্রেসওয়ের বাসস্ট্যান্ডগুলিতে বাসের জন্য আলাদা লেন করা হয়েছে।
অম্বিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাংসদ তহবিলের অর্থে বাকসাড়ায়ই একটি কংক্রিটের যাত্রীছাউনি তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া পুলিশের উদ্যোগে সাঁতরাগাছি স্টেশনের কাছে কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে দু’টি যাত্রীশেড হয়েছে। এ দু’টির অর্থ এসেছে বিজ্ঞাপন থেকে।
মেয়র মমতা জয়সোয়াল বলেন, “মানুষের খুব অসুবিধা হত। আপাতত সাতটি যাত্রীছাউনি করা হয়েছে। যাত্রীছাউনিগুলিতে মনীষীদের ছবি ও বাণী এবং নাগরিক সচেতনতার বার্তা দেওয়া হয়েছে। প্রথম দিকে পুলিশের অনুমতি নিয়ে একটু ঝামেলা ছিল। এখন সমস্যা মিটিছে। আরও ছাউনি দরকার। সে বিষয়েও ভাবনা চলছে।”
কিন্তু যাত্রীছাউনিগুলির রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে নিত্যযাত্রীদের আশঙ্কা রয়েছে। নিত্যযাত্রী দুর্গা মল্লিক বলেন, “যাত্রীছাউনিগুলি সুন্দর। কিন্তু ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ না হলে নষ্ট হতে সময় লাগবে না।” যদিও মেয়র বলেন, “যাত্রীছাউনিগুলি পুরসভাই দেখভাল করবে।” তবে যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, কিছু যাত্রী ছাউনি ব্যবহার করেন না। ফলে বাস নির্দিষ্ট ছাউনির আগেই দাঁড়িয়ে যায়। তখন সমস্যা হয়।
হাওড়া সিটি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ট্রাফিক) অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, “সাঁতরাগাছিতে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের পাশে আমাদের উদ্যোগে দু’টি যাত্রীছাউনি করা হয়েছে। একটি বেসরকারি সংস্থা এগুলি স্পনসর করেছ। এ ছাড়া হাওড়া পুরসভাও কয়েকটি যাত্রীছাউনি করেছে। এতে যাত্রীদের সুবিধা হবে। আরও যাত্রীছাউনি করা হবে।”

ছবি: রণজিৎ নন্দী




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.