জঙ্গি সংগঠনে নিজের কর্তৃত্ব ক্রমে হাতের বাইরে চলে যাচ্ছিল বলে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন ওসামা বিন লাদেন। সেই সঙ্গে পাকিস্তান বা আফগানিস্থান সফরের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে খতম করার নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি। পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে বিন লাদেনের ঘাঁটি থেকে উদ্ধার হওয়া নথি এমনই তথ্য দিচ্ছে। বাছাই করা কিছু নথি মার্কিন সেনার গবেষণা-শাখা ওয়েস্ট পয়েন্ট তাদের ওয়েবসাইটে তুলে দিয়েছে। তবে, ওসামার পাক-যোগ নিয়ে স্পষ্ট করে আলোকপাত করেনি ওই নথি।
একটি নথি বলছে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যে ভাবে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা আল কায়দার নাশকতার শিকার হচ্ছেন, তাতে বিন লাদেন অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন। তিনি এই বার্তাও দেন, যে অবিলম্বে মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ বন্ধ হোক। কিন্তু সেই সঙ্গে আমেরিকার উপর যাতে আক্রমণ জোরদার করা হয়, সেই বার্তাও দিয়েছিলেন তিনি। আল কায়দা নেতৃত্বকে ওসামার লেখা একটি চিঠি বলছে, “আমরা চাইলেই ব্রিটেনের উপর হামলা চালাতে পারি। কিন্তু ব্রিটেনের উপর হামলা চালিয়ে সময় নষ্ট করব না। আমেরিকাকে কী ভাবে হারাতে পারি, সেই দিকে বরং আমাদের নজর দেওয়া উচিত। কারণ আমেরিকাকে হারাতে পারলে অন্যদেরও হারানো যাবে।”
একটি চিঠিতে আল কায়দা প্রধান তাঁর সংগঠনের নেতাদের এই নির্দেশও দেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কিংবা আফগানিস্থানে আন্তর্জাতিক বাহিনীর তৎকালীন কম্যান্ড্যান্ট এবং বর্তমানে সিআইএ প্রধান ডেভিড পেট্রাউসকে খতম করা হোক। ইরানের উপরও ‘তুষ্ট’ ছিলেন না বিন লাদেন। তেহরানে জেলে বন্দি ওসামার আত্মীয়দের মুক্তি না দেওয়ার জন্যই আল কায়দার সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকে ছিল। এই নথির পাশাপাশি অপারেশন জেরোনিমোর পরিকল্পনার সময় নেভি সিল কম্যান্ডোদের বারাক ওবামা যে বার্তা দিয়েছিলেন, তা-ও সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে। চলতি সপ্তাহে আমেরিকায় ঝড় তুলেছে ‘ম্যানহান্ট, দ্য টেন ইয়ার সার্চ ফর বিন লাদেন-ফ্রম ৯/১১ টু অ্যাবটাবাদ’ বইটি। সেখানে বলা হয়েছে, অ্যাবটাবাদে অভিযান চালানোর সময় কম্যান্ডোদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কোনও পরিস্থিতিতে যদি পাক সেনা তাদের বাধা দেয়, তা হলে পুরোদস্তুর তার মোকাবিলা করতে। |