ডুয়ার্সের আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য বৃহস্পতিবারই প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার। এ বার ডুয়ার্সের চা বাগান এলাকায় হিন্দিভাষী ও দরিদ্র, আদিবাসী মানুষের কাছে দ্রুত পঞ্চায়েতের সুবিধা পৌঁছে দিতে পাঁচ দফতরের সচিবকে নিয়ে গড়া হল
কমিটি। শুক্রবার মহাকরণে শিল্প পরিকাঠামো নিয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত হয়েছে। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই মানুষেরা মূলত বিহার থেকে এসেছেন। ডুয়ার্সের ৯ লক্ষ জনসংখ্যার ৩০ শতাংশই এই মানুষেরা। এঁরা পানীয় জল, বিদ্যুৎ, বাড়িকোনও কিছুর সুবিধা পান না। ওই কমিটি চা বাগানোর মালিক ও পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে ওঁদের সেই সব সুবিধা পাওয়ানোর ব্যবস্থা করবে।”
বেশ কিছুদিন ধরেই ডুয়ার্সের চা-বলয়ে আদিবাসী-সহ নানা সম্প্রদায়ের দুঃস্থদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। সেই ক্ষোভ কাজে লাগিয়ে নানা আন্দোলন ধূমায়িত হচ্ছে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাও ডুয়ার্সের প্রতি সরকারি বঞ্চনার অভিযোগ সামনে রেখে প্রচারে নেমেছে। তা নিয়ে ক্রমশ তাতছে ডুয়ার্স। এ দিনই মোর্চা নেতৃত্বাধীন ‘যৌথ মঞ্চ’-র নেতা জন বার্লা-সহ ১০ নেতার গ্রেফতার দাবি তুলেছে মোর্চা-বিরোধী ‘জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’।
এমতাবস্থায় ডুয়ার্সের প্রতি বাড়তি নজর দিতেই রাজ্য সরকার চেষ্টা করছে বলে প্রশাসনিক সূত্রের দাবি। এ দিন শিলিগুড়িতে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা সব পক্ষকে নিয়েই কাজ করতে চাই। জিটিএ-চুক্তি আমরা ভাঙব না। তবে এই পরিস্থিতিতে সব পক্ষের কাছেই সংযত থাকার আবেদন করা হচ্ছে।”
উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “ডুয়ার্সের উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার বদ্ধপরিকর। সে জন্যই মুখ্যমন্ত্রী সকলের কাছেই আবেদন জানিয়েছিলেন, পর্যটনের ভরা মরসুমে বন্ধ করবেন না। সংযত থাকুন। কিন্তু ঘোলা জলে মাছ ধরতে অনেকেই নেমে পড়েছেন।” তাঁর অভিযোগ, “ডুয়ার্সে অশান্তি ছড়ানোর পিছনে সিপিএম মদত দিচ্ছে।” অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সিপিএম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “তরাই-ডুয়ার্স নিয়ে বিবাদমান দু’পক্ষের পিছনে তৃণমূল নেতৃত্বাধীন শাসক জোট রয়েছে। ঘোলা জলে মাছ ধরার চেষ্টা করছে তারাই।” |