অত্যাচারের অভিযোগ অসত্য, দাবি বিএসএফের
ওয়ানদের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তে নেমে অভিযোগকারীর বক্তব্যে অসঙ্গতি পেলেন তদন্তকারী অফিসারেরা। বিএসএফের উচ্চ পর্যায়ের অফিসাররা তো বটেই, পুলিশের তদন্তকারী দলেরও সন্দেহ, কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়েই ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে বিএসএফের এক জওয়ান ও সিপাইয়ের নামে অভিযোগ তোলা হয়েছে। গ্রামবাসীদের একাংশ খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, অভিযোগকারী যে অত্যাচারের কথা লিখিত অভিযোগে জানিয়েছে তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। হলদিবাড়ি ও জলপাইগুড়ি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, অভিযোগকারী ব্যক্তির শরীরে অত্যাচারের চিহ্নই মেলেনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক চিকিৎসায় ছেড়ে দিলেও অভিযোগকারীর জোরাজুরিতে ভর্তি করে নিতে তাঁরা বাধ্য হন। এমন নানাবিধ তদন্তের মুখে পড়ে অভিযোগকারীর পরিবার অভিযোগ তুলে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে। অভিযোগকারী সাত্তার প্রধানের মা দ্বীপজান বেওয়া বলেন, “যা হওয়ার হয়েছে। ছেলেটা সুস্থ হলে মামলা তুলে নিতে বলব।” বিএসএফ কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন। বিএসএফ সূত্রের খবর, মিথ্যে অভিযোগ করে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর জওয়ানদের মনোবল ভেঙে দিতে গরু পাচারকারীরা আড়ালে সক্রিয় কি না তা খতিয়ে দেখার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করা হবে। জেলা পুলিশের একজন পদস্থ অফিসার জানান, প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা সে ভাবে মেলেনি। তদন্তকারী অফিসারের রিপোর্ট জমা পড়লে প্রয়োজনে মিথ্যে অভিযোগ দায়েরের জন্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার সূত্রপাত গত শনিবার। সাত্তারের ভাই সহিদুল অভিযোগ করেন, তাঁর দাদা দুটি গরু কিনে ফেরার পথে বিএসএফ কাগজপত্র পরীক্ষার নামে মারধর করে অজ্ঞান করে দেয়। তা নিয়ে সোমবার কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু, তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, অভিযোগ এবং বাস্তব ঘটনার মধ্যে ফারাক রয়েছে। সহিদুল প্রধানের অভিযোগে লেখা আছে,বন্দুকের বাঁট ও পা দিয়ে আঘাত করার ফলে সাত্তার গুরুতর জখম হন এবং তাঁকে রাস্তার ধারে ছুঁড়ে ফেলে দিলে মানিকগঞ্জ গ্রামের মানুষ দাদাকে চিনতে পারেন। তাঁরাই সহিদুলকে খবর দেন বলে অভিযোগপত্রে রয়েছে। তিনি গিয়ে সাত্তারকে হলদিবাড়ি হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন বলে দাবি করেছেন সহিদুল। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, সাত্তার প্রধান শনিবার নিজের সাইকেলে চড়ে মানিকগঞ্জ বাজার থেকে চার কিলোমিটার দূরে সাতকুড়া বাজারে যান। সাত্তারকে যিনি গরু কিনে দেন এবং হলদিবাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান, সেই বক্কর রহমান বলেন, “সাত্তার সাইকেল চড়েই সাতকুড়ায় আসে এবং পরে অসুস্থ বোধ করলে তাঁকে হলদিবাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাই।” হলদিবাড়ি হাসপাতালে এক রাত সেখানে থাকার পরে রবিবার বেলা ১১ টার সময় পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে সাত্তারকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ‘রেফার’ করানো হয়। অভিযোগে লেখা হয়েছে পরে অবস্থার আবনতি হওয়ায় হলদিবাড়ি হাসপাতাল থেকে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে রেফার করা হয়। এই বক্তব্যর মধ্যেও অসঙ্গতি পেয়েছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। এ ব্যাপারে হলদিবাড়ির ব্লক স্বাস্থ্যাধিকারিক তাপস দাস বলেন, “সাত্তার প্রধানকে মারা হয়েছে শুনে পর্যবেক্ষণে রাখার জন্যে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করি। তাঁর গায়ে কোন মারধরের চিহ্ন ছিল না। শারীরিক অসু্স্থতার কোনও লক্ষণ সেই রাতে আমরা পাইনি। পরে তাঁর পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে তাঁকে পর দিন রেফার করি। তাঁর অবস্থার অবনতি হয়নি।” রবিবার জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে সাত্তারের পরিবারের লোক তাঁকে ভর্তি করান। সেখানে তিন দিন পর্যবেক্ষণে থাকার পর তাঁকে বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সদর হাসপাতালের চিকিসক দিব্যেন্দু দাসের কাছে সাত্তার চিকিসাধীন ছিলেন। চিকিৎসক দিব্যেন্দুবাবু বলেন, “শারিরীক অসুস্থতার লক্ষণ তাঁর মধ্যে পাওয়া যায়নি।” একইসঙ্গে বিএসএফের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সাত্তার এক বছর আগে দুটি হালের গরু কিনেছিলেন। তার পরে গত শনিবার আবার দুটি হালের গরু কেনেন। তা হলে আগে কেনা হালের দুটি গরু কোথায় গেল? সাত্তার এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.