নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
রাজ্যে ফরেন্সিক বিভাগের দুরবস্থা নিয়ে আদালত বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারের বক্তব্য-সহ রিপোর্টও তলব করেছে। কিন্তু সেই রিপোর্ট জমা না-পড়ায় এবং ফরেন্সিক বিভাগের হাল ফেরাতে সরকারের তরফে কোনও উদ্যোগ না-থাকায় শুক্রবার ফের ক্ষোভ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট।
প্রধান বিচারপতি জে এন পটেল জানতে চান, ফরেন্সিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এই অবহেলা কেন? সরকারি আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই অবস্থা এক দিনে হয়নি। গত ৩৪ বছর ধরে এটা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি পটেল ও বিচারপতি সম্বুদ্ধ চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ অত্যন্ত কড়া ভাষায় জানিয়ে দেয়, ১১ মে সরকারকে এই বিষয়ে রিপোর্ট জমা দিতেই হবে। অন্যথায় হাইকোর্ট সমন জারি করে স্বরাষ্ট্রসচিব এবং অন্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের হাইকোর্টে হাজির করানোর নির্দেশ দেবে।
ফরেন্সিক পরীক্ষার ন্যূনতম পরিকাঠামো নেই। অনেক ক্ষেত্রেই ফরেন্সিক রিপোর্ট না-মেলায় খুনের মামলায় অভিযুক্তদেরও জামিন দিতে বাধ্য হয় আদালত। এই পরিস্থিতি নিয়ে হাইকোর্টের দুই প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি তো বটেই, বর্তমান প্রধান বিচারপতি জে এন পটেলের ডিভিশন বেঞ্চও বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। হাইকোর্টে দাঁড়িয়ে ফরেন্সিক অধিকর্তা ধূর্জটিপ্রসাদ সেনগুপ্ত নিজেকে অসহায় বলে বর্ণনা করেছিলেন। অধিকর্তা বলেছিলেন, তিনি ঢাল-তলোয়ারহীন নিধিরাম সর্দার! এই বিষয়ে অভিজ্ঞ কর্মী নেই। পরিকাঠামো নেই। হাজার হাজার নমুনা জমা থাকলেও পরীক্ষা কবে হবে, কেউ তা জানে না। পরীক্ষায় দেরি হলে যথাযথ ফল পাওয়া সম্ভব নয়।
অধিকর্র্তা তাঁর বক্তব্য এবং রাজ্যে তাঁদের কর্মী ও পরিকাঠামোর বিবরণ-সহ রিপোর্ট পেশ করেছিলেন। সেই রিপোর্ট দেখে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দেন, ফরেন্সিক বিভাগের দুরবস্থা কাটাতে তাঁরা কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন, তা জানিয়ে অবিলম্বে রিপোর্ট দিতে হবে। কিন্তু রাজ্য আদৌ গা ঘামায়নি। রিপোর্টও দেয়নি। শুক্রবার মামলাটি উঠলে দেখা যায়, এ দিনও রাজ্য রিপোর্ট পেশ করেনি। কেন রিপোর্ট দেওয়া হয়নি? তেমন জোরালো যুক্তিও দেখাতে পারেনি সরকার। রাজ্য সরকারের এই ভূমিকায় প্রধান বিচারপতি পটেল অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তার পরেই রিপোর্ট পেশের সময়সীমা বেঁধে দেন। |