রাজ্য সরকার ইমামদের কোনও রকম ভাতা দিতে পারে না বলে জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থের মামলা করেছে রাজ্য বিজেপি। শুক্রবার প্রায় চার ঘণ্টার শুনানির পরেও হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জে এন পটেলের ডিভিশন বেঞ্চ অবশ্য সেই মামলায় রায় দেয়নি। ইমামদের জন্য সরকার যে-ভাতা ঘোষণা করেছে, তা নিয়ে আদৌ জনস্বার্থের মামলা করা যায় কি না, মূলত তা নিয়েই এ দিন সওয়াল-জবাব চলে। মামলাটির পুনরায় শুনানি হবে সোমবার। সম্প্রতি ইমামদের এক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই তাঁদের জন্য ভাতা ঘোষণা করেন। তবে রাজ্যের পক্ষে অ্যাডভোকেট জেনারেল অনিন্দ্য মিত্র এ দিন আদালতে জানান, সরকার নিজেরা তো কোনও ইমামকে মাসিক ভাতা দিচ্ছে না। সরকার টাকা দিচ্ছে রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডকে। ওই বোর্ডই ইমামদের দেবে। এবং সেই ভাতার সর্বোচ্চ পরিমাণ হবে ২৫০০ টাকা।
আবেদনকারী রাজ্য বিজেপি-র পক্ষে আইনজীবী কৌশিক চন্দ বলেন, ইমামদের ভাতা দিতে হবে বলে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টই। তবে সেই ভাতা দেবে ওয়াকফ বোর্ড। কিন্তু রাজ্য সরকার এ ভাবে কোনও একটি বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্য সরকারি টাকা খরচ করতে পারে না। জনগণের টাকা খরচের ক্ষেত্রে এ ভাবে বৈষম্য করতে পারে না রাজ্য সরকার।
এই মামলা জনস্বার্থের মামলা হিসেবে বিবেচিতই হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন ওয়াকফ বোর্ডের আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, একটি রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই মামলা করেছে। জনস্বার্থে নয়, মামলাটি করা হয়েছে রাজনৈতিক স্বার্থে। বর্তমান সরকার তাদের নির্বাচনী ইস্তাহারেই পিছিয়ে থাকা সম্প্রদায়ের সমস্যাকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছিল। জবাবে আবেদনকারীর কৌঁসুলি কৌশিকবাবু বলেন, রাজনৈতিক দল জনস্বার্থের মামলা করতে পারবে না কেন? জনতার স্বার্থের কথা তারা বলতেই পারে। দেখতে হবে, বিষয়টি জনস্বার্থ বিষয়ক কি না।
রাজ্য ইতিমধ্যে ওয়াকফ বোর্ডকে ৩০ কোটি টাকা দিয়েছে বলে জানান রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের অন্যতম আইনজীবী আনসার মণ্ডল। তিনি বলেন, ওয়াকফ বোর্ডের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল নয়। তাই এই সহায়তা। তবে ওয়াকফ বোর্ডের সম্পদ যদি ঠিকমতো ব্যবহার করা যায়, তা হলে ভবিষ্যতে হয়তো আর সরকারের সহায়তার প্রয়োজন হবে না। সরকারের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এটা নতুন কিছু নয়। আগেও রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডকে সহায়তা করেছে। |