প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন গ্রামবাসীরা। এ বার স্কুলে সেই অভিযোগের তদন্তে যাওয়া আধিকারিকদের ঘেরাও করে অবিলম্বে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভ দেখালেন।
শুক্রবার রানিবাঁধের ধানাড়া হাইস্কুলের ঘটনা। মিড-ডে মিলের হিসেবে গরমিল-সহ একাধিক দূর্নীতির অভিযোগে রানিবাঁধ ব্লকের ধানাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বিদ্যুৎ পতির বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক এবং গ্রামবাসীদের একাংশ। শুক্রবার সেই অভিযোগের তদন্তে ওই স্কুলে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রানিবাঁধ চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) দেবব্রত ঘোষ ও ব্লকের সমবায় পরিদর্শক পুস্পল দে। এ দিন সকাল আটটা থেকে ঘণ্টা চারেক ধরে তাঁদের স্কুলের মধ্যে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ এবং দুই আধিকারিক নিরপেক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পরে তাঁদের ছাড়া হয়।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ধানাড়া হাইস্কুলের মিড-ডে মিলের খরচের হিসেবে দেখানো হয়েছে ছুটির দিনেও সেখানে মিড-ডে মিল খাওয়ানো হয়েছে। এ ছাড়া বেশ কিছু কাজে অসঙ্গতির অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে। তারই তদন্তে এ দিন সকালে ওই স্কুলে গিয়েছিলেন অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক এবং সমবায় পরিদর্শক। খবর পেয়ে শখানেক গ্রামবাসী স্কুলে ঢুকে তাঁদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখান। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, মিড-ডে মিল-সহ একাধিক উন্নয়ণ কাজে দুর্নীতি করেছেন প্রধান শিক্ষক। তাই অবিলম্বে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগকে সমর্থন জানিয়েছেন তৃণমুল পরিচালিত স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক মনতোষ মাহাতো। তাঁরও অভিযোগ, “জানুয়ারি মাসে ৯ দিন মিড-ডে মিল দেওয়া হলেও প্রধান শিক্ষক তা ১৫ দিন দেখিয়েছেন। নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের বার্ষিক ‘ফি’-র টাকা জমা করে ইচ্ছে মত খরচ করেছেন। পরিচালন সমিতিকে কিছু না জানিয়ে এ সব করেছেন।” দেবব্রতবাবু বলেন, “তদন্ত করে সব রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেওয়া হবে।” পুস্পলবাবু অবশ্য এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। রানিবাঁধের বিডিও তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রিপোর্ট পাওয়ার পরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তদন্তে যাওয়া আধিকারিকদের আটকে রেখে গ্রামবাসীরা ঠিক কাজ করেননি।” প্রধান শিক্ষক বিদ্যুৎবাবু অবশ্য এ দিনও দাবি করেন, “আমার বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়ানোর জন্যই এসব করছেন স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক মনতোষবাবু। সব অভিযোগ মিথ্যা। নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই আমি যে নির্দোষ তা প্রমাণিত হবে।” |